Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অবশেষে সেই ৫ শিক্ষার্থীকে আদালতে হাজির

নিখোঁজের ১৫ দিন পর গ্রেফতার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

অবশেষে নিখোঁজ সেই পাঁচ শিক্ষার্থীর খবর মিলেছে। ১৫দিন পর ওই ৫জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল আদালতে হাজির করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওয়ারী থানার বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের একটি মামলায় তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই এর আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন। ওই পাঁচজন হলেন- শিক্ষনবিশ আইনজীবি শাফিউল আলম, তার ভাই বেসরকারী কোম্পানীতে চাকরিরত মনিরুল আলম, মনিরুলের বন্ধু চাকরিজীবী আবুল হায়াত, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ এবং ডেমরার ডগাইরের একটি মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্র মোশারফ হোসেইন মা’য়াজ।
আসামিপক্ষে আব্দুর রেজ্জাক, লুৎফর রহমান, আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিনের আবেদন করেন। তারা বলেন, ১৫ দিন আগে তাদের তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়। এতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত ৫ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। আর মায়াজ কিশোর হওয়ার তার বিষয়ে শুনানির জন্য কিশোর আদালতে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশের দাবি-আসামিদের মধ্যে শাফিউল আলম ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি, মায়াজ ও মোশাররফ শিবিরের কর্মী, অপর তিন আসামি শিবিরের সাথী ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে ওয়ারী থানাধীন ২২ নং বনোগ্রাম লেন এর ৬ষ্ঠ তলা বাড়ির নীচ তলার রুমের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাত্রশিবিরের গোপন বৈঠকের সময় বিস্ফোরক দ্রব্যসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশের দাবি।
পরিবার সুত্র বলছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুই সহোদরসহ ওই পাঁচজনকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী ও বিমানবন্দর থানায় নিখোঁজের পরিবার গেলেও পুলিশ জিডি নেয়নি। তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ বিষয়টি স্বীকার করছিলেন না।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) সংবাদ সম্মেলন দুই সহোদর শাফিউল আলম ও মনিরুল আলমের মা রমিছা খানম নিখোঁজের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হজ্ব পালন শেষে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন। তাকে নেয়ার জন্য বিমানবন্দরে গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন তার ছেলে শাফিউল আলম, মনিরুল ইসলাম এবং তাদের বন্ধু আবুল হায়াত। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ছেলেরা তার ব্যাগ, ল্যাগেজ গাড়িতে তুলছিলেন। তিনি হজ্ব শেষে তিনি ক্লান্ত ও অসুস্থ ছিলেন। গাড়িতে মালপত্র তোলা শেষ হওয়ার মূুহুর্তে কয়েজজন লোক এসে তার ছেলে শাফিউল আলমের কাছে জানতে চান তার বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার বাঁধাই গ্রামে কিনা। জবাবে হ্যাঁ বলার পরই একজন শাফিউলকে জাপটে ধরেন। পরপর পাশে থাকা আরেক ছেলে মনিরুল ইসলাম এবং তাদের বন্ধু আবুল হায়তকে অন্যরা ধরে ফেলেন। তিনি গাড়িতে থেকে চিৎকার করে জানতে চান কেন তাদের ছেলেদের ধরা হয়েছে। তাদের কি অপরাধ। এ সময় পাশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ছিলো। তারা এগিয়ে আসলে ওই ব্যক্তিরা নিজেদের ডিবির লোক পরিচয় দিয়ে আইডি কার্ড দেখায়। এরপর পুলিশ চলে যায়। এরপরই ৩ জনকে একাটি গাড়িতে তুলে দ্রুত নিয়ে চলে যান। পরে তিনি একাই গাড়িতে করে বাড়িতে ফেরেন।
রাতেই তার ছেলে শাফিউল আলমকে সঙ্গে নিয়ে ডিবির লোকজন যাত্রাবাড়ীতে একটি বাসায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ এবং নবম শ্রেনীর ছাত্র মোশারফ হোসেন মা’য়াজকেও তুলে নিয়ে যান। এরপর থেকে ৫ জন নিখোঁজ ছিলেন। তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের খোঁজে ডিবি কার্যালয়, থানা পুলিশের বিভিন্ন কার্যালয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কেউ স্বীকার করেনি।
নবম শ্রেণীর ছাত্র মোশারফ হোসেইন মা’য়াজের বোন কামরুন নাহার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভাইকে পেয়ে আমরা আনন্দিত। আমার ভাই কোন অপরাধের সাথে জড়িত নাই। আমরা দ্রুত ভাইয়ের মুক্তি ও ন্যায় বিচার দাবি করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষার্থী

১০ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ