পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দর-কষাকষি করে জনগণের ঐক্য হয়না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহবায়ক আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, স্বৈরাচারী সরকার যতই শক্তিশালী হোক, জনগণ জেগে উঠলে তারা টিকতে পারবে না। জনগণের ঐক্যই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। ১৯৭১ সালে জনগণের ঐক্য এ দেশ স্বাধীন করেছে। জনগণের ঐক্য হলে আমরা স্বাধীনতার সুফল ঘরে তুলতে পারবো। তাই দেশের এই সংকটকালে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের ঐক্য প্রয়োজন। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। পেশাজীবিদের সাথে মতবিনিময়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় সব বক্তাই জাতীয় ঐক্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করে ছোটখাট ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
ড. কামাল হোসেন বলেন, দর কষাকষি করে জনগণের ঐক্য হয়না। ১৫১ সিট বা ১৫২ সিট এসব দাবি করে জনগণের ঐক্য হতে পারে না। জনগণের স্বার্থে ঐক্য হলে জনগণই আপনাকে উপযুক্ত আসন দেবে। যেমন ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু আসন ভাগাভাগির চিন্তা করেননি। জনগণই বঙ্গবন্ধুকে সিট এনে দিয়ে ছিল। আজকে দেশের এই সংকটকালে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের ঐক্য হতে হবে। পেশাজীবিরাও সংকট নিরসনে কাজ করতে হবে। আপনাদের মেধা দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে দেশকে প্রকৃত উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাবেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে।
ড. কামাল বলেন, ঐক্যের কথা শুধু মুখে বললে চলবে না। ঐক্য ধরে রাখা বড় কঠিন। যারা অনৈক্য চায় তারা অনেক শক্তিশালী। তারা কালো টাকার মালিক। আমি কালো টাকার মালিক নই। আমরা যারা এখানে আছি আমাদের কালো টাকা নেই। ঐক্যের যারা বিরোধীতা করছে তাদের কালো টাকা আছে, মাস্তান আছে। রাষ্ট্রের পৃষ্টপোষকতায়ও ঐক্যের বিরোধীতা করা হচ্ছে, হবে। তাই ঐক্যকে ধরে রাখা কঠিন কাজ। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে স্বাধীনতা ধরে রাখা যাবেনা। আমাদেরও এই জনগণের ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে এবং এর মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে চেতনার বাহাদুরি করবেন আর ভোট চুরি করবেন এটা হয় না। ভোট চুরি ঠেকাতে প্রয়োজন নির্দলীয় সরকার। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোট সঠিকভাবে প্রয়োগ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া হবে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর মাধ্যম। যারা ভোট চুরি করে, লুটপাট করে তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব বলেন, ড. কামাল শুধু একজন ব্যক্তি নন তিনি একটি ইনস্টিটিউট। তিনি যে জাতীয় ঐক্যে ডাক দিয়েছেন তাতে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ আজ সারা দিয়েছে। তার ডাকে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে তাতে এই ফ্যাসিবাদী সরকার ভেসে যাবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কয়েক দিনের ঘটনায় মনে হচ্ছে আমাদের সরকার বেশ উদ্বিগ্ন। তার আনেক আবোল তাবোল কথা বলছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আমরা তার কথায় আস্থা রাখতে চাই। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তিনি তৈরী করবেন। বন্দিদের মুক্তি দেবেন। নতুন করে মামলা বা গ্রেফতার বন্ধ করবেন। সবাইকে সভা সমাবেশ করতে দেবেন। এ ছাড়া একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করবেন। ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া এক সাথে আন্দোলন করেছেন এবং সংলাপ করেছেন। এখন তাহলে সংলাপে বাধা কোথায়? আমাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও হয়েছে। তারপরও আজ কেন এই বিভক্তির রাজনীতি। এখন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার সময়। আমরা আর বিভক্তি চাই না। আমরা এদেশে শান্তি, শৃংখলা, আইনের শাসন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্য চাই। এই ঐক্যকে এতো ভয় কনে? আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, আর এই নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। আজ যে জনগণের ঐক্য হয়েছে তার মাধ্যমে আমরা আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। ঐক্য হলো বিজয়ের প্রতীক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারি বলেন, সহজ ভাবে বললে বলা যায় যে সরকার জনগণকে ভয় পায় সে সরকার গণতান্ত্রিক। আর যে সরকারকে জনগণ ভয় পায় সে সরকার স্বৈরতান্ত্রিক। বর্তমান সরকারের চরিত্র স্বৈরতান্ত্রিক। আর একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, গণতন্ত্র, ভোটাধিকারসহ মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য। আজ দেশে সব কিছু ভুলুন্ঠিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু মুখে মুখে। দেশে এখন চলছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। এর থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। আর এই আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। সুপ্রীমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি এডভোকেট জয়নাল আবেদিন বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ঐক্যের কথা বলে গেছেন। জেলে গিয়েও তিনি বলেছেন, আমার যদি জেলে থাকতে হয় তাতেও রাজি, তবুও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এই সরকারের পতন দেখতে চাই। গণদলের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার’ পদ্ধতি স্থায়ীকরণ করতে হবে। পাঁচ বছর পর ভোট এলেই নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে যুদ্ধ হয়। স্থায়ী ভাবে এর সমাধান হওয়া দরকার।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সি আর আবরার, সুপ্রীমকোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, গণতান্ত্রিক আইনজীবি ফোরামের সভাপতি এডভোট সুব্রত চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, গণফোরাম নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু, রোড ফেসটি ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি এম এ হানিফ শরীফ, ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মশিউর রহমান বাবু প্রমুখ। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।