পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য সরকারি কর্মচারীদের ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণসুবিধা দিতে চার রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই ঋণের বিপরীতে সরকারি কর্মচারীদের সুদ দিতে হবে পাঁচ শতাংশ। প্রচলিত বাজার দরে সুদের হার যা-ই হোক না, পাঁচ শতাংশের বাইরের অংশটুকু রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেওয়া হবে।
গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা এমওইউতে সই করেন। সরকারের দিক থেকে সই করেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাফরউদ্দীন। ভারপ্রাপ্ত অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ১ অক্টোবর থেকেই ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে। তবে সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বেতন-ভাতা তোলার দিক থেকে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, তারাই ঋণের আবেদন আগে করতে পারবে। অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, সব সরকারি কর্মচারীকে এ ঋণের আওতায় আনতে দুই বছর সময় লেগে যেতে পারে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদহার এখনও সিঙ্গেল ডিজিটে (৯ শতাংশ) আনতে পারেনি অনেক ব্যাংক। তবে তিনি আশা করছেন শিগগির ব্যাংকগুলো তা বাস্তবায়ন করবে। তার মতে এটা করা খুবই সহজ, এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো প্রোফিট একটু কম করলেই হয়।
সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গত ৯ আগস্ট থেকে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৬ শতাংশে আমানত সংগ্রহ ও ৯ শতাংশ সুদহারে শিল্প ঋণ বিতরণ করতে হবে। কিন্ত বাংলাদেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে অধিকাংশেই ব্যাংকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি। তবে সরকারি কয়েকটি ব্যাংক তা বাস্তবায়ন করেছে।
পাঁচ শতাংশ সুদে গৃহনির্মাণ ঋণের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আগে একটা একজন সরকারি কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর মাথাগুজার ঠাই নিয়ে চিন্তিত থাকতো। এর মাধ্যমে সে অনিশ্চয়তা থাকবে না।
গত ৩০ জুলাই অর্থ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ জারি করে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি কর্মচারীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন। তবে ৫৬ বছর বয়সী কর্মচারীরাও আবেদন করতে পারবেন। চাকরির গ্রেড অনুযায়ী ঋণ দেওয়া হবে ২০ লাখ থেকে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঋণ পরিশোধের সর্বোচ্চ সময় ২০ বছর।
কার জন্য কেমন ঋণ : জাতীয় বেতন স্কেলে প্রথম থেকে পঞ্চম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের (উপ-সচিব থেকে সচিব পদমর্যাদার) জন্য ৭৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৬০ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন।
৬ষ্ঠ থেকে ৯ম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৫৫ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৪০ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
১৪তম থেকে ১৭তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৩০ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ১৮তম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৩০ লাখ, জেলা সদরের জন্য ২৫ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ২০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ব্যক্তিগত জমির ওপর বাড়ি তৈরি করতে চাইলে ঋণের আবেদনপত্রের সঙ্গে জমির মূল মালিকানা দলিল জমা দিতে হবে। শুধু তাই নয়, মালিকানা পরম্পর তথ্যও দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সিএস, এসএ, আরএস এবং বিএস রেকর্ডের তথ্য। এ ছাড়া জেলা বা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ১২ বছরের নির্দায় সনদ নিতে হবে। ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে মালিকানার দলিল জমা রাখতে হবে।
সরকারি প্লট বা সরকার থেকে ইজারা নেয়া জমিতেও বাড়ি তৈরি করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ঋণ আবেদনের সঙ্গে প্রথমেই জমা দিতে হবে প্লটের বরাদ্দপত্রের প্রমাণপত্র। এ ছাড়া দখল হস্তান্তরপত্র, মূল ইজারার দলিল ও বায়া দলিলের প্রমাণপত্র দিতে হবে। ঋণ আবেদনপত্রের সঙ্গে আরও জমা দিতে হবে নামজারি খতিয়ানের জাবেদা নকল, খাজনা রসিদ ও আমমোক্তারনামা দলিল।
জমিতে ডেভেলপারকে দিয়ে বাড়ি তৈরি করলে জমির মালিক এবং ডেভেলপারের সঙ্গে নিবন্ধন করা ফ্ল্যাট বণ্টনের চুক্তিপত্র, অনুমোদিত নকশা, ফ্ল্যাট নির্মাণস্থলের মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদন, সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্ধারিত ছকে ইমারতের কাঠামো নকশা ও ভারবহন সনদ জমা দিতে হবে।
এ ছাড়া ডেভেলপার কোম্পানির সংঘ স্মারক, সংঘবিধি ও রিহ্যাবের নিবন্ধন সনদ, নকশা অনুযায়ী কাজ করার ব্যাপারে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের দেয়া অঙ্গীকারনামা, অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণ নেই-মর্মে ডেভেলপারের দেয়া স্ট্যাম্প পেপারে ঘোষণাপত্রও থাকতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।