পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অজেহাদি (স্পষ্টকরণ) জোড় ও ইসলামী মহাসম্মেলনে ঢল নেমেছিল ময়মনসিংহের আলেম-ওলামা ও ইমামগণের। লক্ষাধিক ওলামার এই মহাসম্মেলনে ভারতের দিল্লি নিজামুদ্দীন মারকাজ মসজিদের মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে অনুসরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
ময়মনসিংহের সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও ইমামগণ বলেন, ‘মাওলানা সাদের বিভিন্ন বিতর্কিত ও ভ্রান্ত বয়ান, আচার-আচরণেই নানা সমস্যার উৎপত্তি। তিনি এখনো তার বিভ্রান্তিকর চিন্তা প্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। ময়মনসিংহে মাওলানা সাদপন্থী গ্রুপের নানা অপতৎপরতা ও কার্যক্রম বন্ধেরও দাবি জানান তারা।
গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ময়মনসিংহ শহরের আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে বক্তব্যে এমন বক্তব্য দেন তারা। এতে ছয় দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করলে উপস্থিত লাখো ওলামা, ইমাম ও মুসল্লীরা তার পক্ষে সমর্থন জানান। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান উপস্থিত থাকলেও এই ইস্যুতে তিনি কোন বক্তব্য দেননি।
মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কাকরাইল মারকাজের শীর্ষ মুরুব্বী মাওলানা যোবায়ের, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আনোয়ার শাহ। আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম।
তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহ জেলা মারকাজ মসজিদকে দুই ভাগ এবং দুই ইমাম নিযুক্ত করে বিভক্ত করা যাবে না। বর্তমান শূরা মুরুব্বীদের অধীনেই আগের মতোই তাবলীগের কাজকর্ম চলবে। এর কোনো ব্যতিক্রম ঘটলে জীবন দিয়ে হলেও তা রুখে দাঁড়াবো। তার সাথে সকলকে শরীক হওয়ার আহবান জানান। একই বিষয় সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ও সাবেক সংসদ সদস্য দেলোার হোসেন খান দুলু।
মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদীর তত্ত্বাবধানে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আযহারী, মুফতি সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাওলানা আবুল কালাম, মুফতি মহিবুল্লাহ, মাওলানা মুন্জুরুল হক, মাওলানা মুহম্মদ, মুফতি আব্দুল হাই।
দেশের শীর্ষ আলেমরা বলেন, তাবলীগ জামাতের বিশ্বব্যাপী দাওয়াতী কার্যক্রম প্রায় শতাব্দীকাল থেকে চলে আসছে। বড় বড় বুজুর্গদের জান মালের কোরবানীর বদৌলতে দাওয়াত ও তাবলীগের এই মেহনত সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এই মেহনতের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে ঈমান, আমল ও চারিত্রিক গুণাবলীর এক বিশাল পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হয়ে একজন মুসলমান বিশ্বের জন্য শান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত হচ্ছিলো।
আজ সেই মেহনত বিভিন্ন সমস্যায় জড়িত হয়ে মেহনতের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গেরমধ্যে বিশৃঙ্খলা ও পরস্পর বিরোধ পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেকে মনে করেন এগুলো নিছক দলাদলি বা দখল-বেদখলের ঝগড়া। প্রকৃত কারণ অনেকের কাছে অনেকের কাছে অস্পষ্ট ও অজ্ঞাত।
ওলামায়ে কেরাম পরিষ্কার ভাষায় বলেন, দাওয়াত ও তাবলিগের এই মহান কাজে বর্তমানে সকল বিরোধ ও বিশৃঙ্খলার একমাত্র উৎস হলেন ভারতের দিল্লি নিজামুদ্দীন মারকাজ মসজিদের মাওলানা সাদ কান্ধলভী। তার বিভিন্ন বিতর্কিত ও ভ্রান্ত বয়ান, আচার-আচরণই এ সকল সমস্যাদির উৎপত্তি ঘটিয়েছে। তিনি এখনো তার বিভ্রান্তিকর চিন্তা প্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।
তারা আরো বলেন, দারুল উলূম দেওবন্দের উলামায়ে কেরাম তাদের ফতওয়াতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মাওলানা সাদ সাহেব মনে হয় তাবলিগের নামে নতুন কোন জামাত গঠন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের মূলধারার সকল আলেম উলামা, মসজিদের ইমাম-খতীব এবং ইসলামী স্কলারদের অবস্থান দারুল উলূম দেওবন্দের ফাতওয়ার পক্ষে।
ইতোপূর্বে ময়মনসিংহ কাচারী মসজিদে সভার মাধ্যমে ওলামাগণের অবস্থান পরিস্কার করা হয়েছে। এই ইসলামী মহাসম্মেলন সর্বসম্মতভাবে ছয়দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ অন্যতম শীর্ষ ওলামা হযরত মাওলানা আব্দুর রাহমান হাফেজ্জী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।