পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে সম্মানী ভাতাসহ সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন স্ত্রী বা স্বামী। আর তাদের অবর্তমানে সুবিধা ভোগ করবেন পিতা-মাতা। তারাও না থাকলে সুবিধা পাবেন ছেলে-মেয়েরা। এদের কেউই না থাকলে সুবিধা পাবেন মুক্তিযোদ্ধার ভাই-বোনেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০১৮’ এ এমন বিধান রাখা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব উপস্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলের উপর বিরোধী দলের জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সদস্য বা আধা সরকারী পেনশনভোগী বা যাদের নিয়মিত আয়ের উৎস্য আছে তাদের সম্মানী ভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ সাধনে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিলে যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের সোয়া দুই লাখেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে পরিবারের সদস্যরাও এ সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদেরও এই প্রথম মুক্তিযোদ্ধা ভাতার আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা ও ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ট্রাস্টি বোর্ড, নির্বাহী কমিটি গঠনের পাশাপাশি তহবিল পরিচালনা, নিরীক্ষার বিধানও রাখা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধার সুবিধাভোগীদের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, সুবিধাভোগী অর্থ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অবর্তমানে স্ত্রী-স্বামী, স্ত্রী ও স্বামীর অবর্তমানে পিতা-মাতা। স্ত্রী-স্বামী অথবা পিতা-মাতার অবর্তমানে পুত্র ও কন্যারা। উল্লিখিত ব্যক্তিদের কেউই না থাকলে বা তাদের অবর্তমানে ভাই-বোন মুক্তিযোদ্ধার সুবিধাভোগী হবেন। প্রথমবারের মতো মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ করে বিলে বলা হয়েছে- ‘একাত্তরের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সব ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারা ছাড়াও নিচের (ক থেকে ঝ) উল্লিখিত ব্যক্তিগণ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন। (ক) মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ব্যক্তি বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন, (খ) যে সব বাংলাদেশি পেশাজীবী ও নাগরিক একই সময়ে বিদেশে থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠন করেছেন, (গ) যারা মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, (ঘ) সশস্ত্র বাহিনী, গণবাহিনী ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, নৌ কমান্ডো, আনসার বাহিনীর সদস্য যারা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, (ঙ) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুজিবনগর সরকারের সহিত সম্পৃক্ত তৎকালীণ এমএনএ (মেম্বার অব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) ও এমপিএগণ (মেম্বার অব পার্লামেন্টারি অ্যাসেম্বলি) যারা পরে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে গণ্য হন, (চ) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসরদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিত (বীরাঙ্গনা) নারীগণ, (ছ) স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়গণ এবং (ঝ) মুক্তিযুদ্ধের সময় আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী মেডিকেল টিমের চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরা। বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পুরণে একটি ট্রাস্টি বোর্ড থাকিবে। প্রধানমন্ত্রী এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন। আর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী এই বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হবেন। প্রধানমন্ত্রী মনোনীত চার জন সংসদ সদস্য, অর্থ বিভাগের সচিব, শিল্প সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এই বোর্ডের সদস্য হবেন। এছাড়া একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বোর্ডের সদস্য ও সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। বোর্ডের প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়।
আরো তিনটি বিল পাস জাতীয় সংসদে আরো তিনটি বিল পাস হয়েছে। বিল তিনটি হচ্ছে- জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিল-২০১৮, পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) বিল-২০১৮ এবং কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট বিল-২০১৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।