পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
এ বছরের অতিবৃষ্টির কারণে রাজধানীর প্রতিটি সড়কই কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কারের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ৬৭৬ কোটি টাকার একটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্যে ডিএসসিসি একে একে তিনবার ডিপিপি পাঠায় মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ের শর্ত, ডিপিপির অনুমোদন পেতে ডিএসসিসিকে ২০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড (নিজস্ব ফান্ড থেকে ব্যয়) দিতে হবে। কিন্তু ডিএসসিসি সেই শর্ত তোয়াক্কা না করেই ম্যাচিং ফান্ড ছাড়াই মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি পাঠায়। যে কারণে মন্ত্রণালয় থেকে ডিপিপি ডিএসসিসিকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। তৃতীয় দফায় ২০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড দেওয়ার শর্তে ডিপিপি পাঠায় ডিএসসিসি থেকে। যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
প্রথম ডিপিপিতে দেখা যায়, ডিএসসিসি ম্যাচিং ফান্ড ছাড়াই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি পাঠায়। শর্ত পূরণ না হওয়ায় মন্ত্রণালয় তখন ডিপিপি ফেরত দেয়। দ্বিতীয়, ডিপিপিতে দেখা যায়, ডিএসসিসি ৩ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড দেওয়ার সম্মতি জানায়। এতেও মন্ত্রণালয় ডিপিপির অনুমোদন দেয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, প্রকল্পের কাজে ডিএসসিসিকে অবশ্যই ২০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড দিতে হবে। তখন তৃতীয় ডিপিপিতে ডিএসসিসি ২০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড দেওয়ার সম্মাতি জানিয়ে ডিপিপি পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশন ইচ্ছা করলেই ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাইতে পারে না। ডিপিপির অনুমোদন পেতে হলে কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে। এসব নিয়ম-নীতি অবলম্বন করতে পারলে ডিপিপির অনুমোদন দিতে পারে মন্ত্রণালয়। কিন্তু ডিএসসিসি ২০১৭ সালে অতিবৃষ্টিতে কিছু সড়ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মেরামতের নামে একটি ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠায়। কিন্তু মন্ত্রণালয় যেসব শর্ত দিয়েছে সেগুলো দুটি ডিপিপিতে মানা হয়নি। তৃতীয় দফায় ডিএসসিসি ম্যাচিং ফান্ড বাবদ ২০ শতাংশ অর্থ দেওয়ার সম্মতি জানিয়ে ডিপিপি পাঠায়। এটি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীতে প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি’তে (একনেক) উত্থাপন করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মন্ত্রণালয়ে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) পাঠিয়ে অনুমোদন না পাওয়ায় সড়কগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। এতে করে একদিকে প্রকল্পে সময় ও ব্যয় বাড়বে অপরদিকে নতুন করে আরেকটি প্রকল্প তৈরি করে কাজে বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ডিএসসিসির সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের অতিবৃষ্টিতে ডিএসসিসির সড়কগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। যা ডিএসসিসি নিজস্ব অর্থায়নে মেরামত করতে পারেনি। এজন্য ডিপিপি বানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, পরিকল্পনায় যাচাই-বাছাই এরপর একনেকে উত্থাপন। ৫৪টি ওয়ার্ডের সড়ক মেরামতে ৬৭৬ কোটি টাকার ডিপিপি এটি। মন্ত্রণালয়ের কাছে এর আগেই ডিএসসিসি যেসব কমিটম্যান্ট করেছিল সেগুলো বাস্তাবায়ন করতে পারে। সেখানে আবারও কমিটম্যান্ট করে সড়ক মেরামত প্রকল্প পাস করতে হচ্ছে। সূত্র আরো জানায়, আগে ডিএসসিসি যেসব প্রকল্পের কাজ করেছে সেগুলোতে ম্যাচিং ফান্ড হিসেবে ৩০ শতাংশ থাকতে হয়েছে।
একই কাজের তিনবার ডিপিপি পাঠানোর ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামত করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে ম্যাচিং ফান্ড নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, ডিপিপি পাঠানোর আগে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সুযোগ নেই। এজন্য একই কাজের তিনবার ডিপিপি পাঠানো হয়েছে। সবকিছু ঠিকই আছে শুধু ম্যাচিং ফান্ড নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভাবছে, সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয় আছে, সেখানে ম্যাচিং ফান্ড নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তুলনায় দক্ষিণ সিটির আয় কম, ব্যয় বেশি। দক্ষিণ সিটির আয় দিয়ে কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা দিতেই কঠিন হয়ে পড়ে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে একটি ওয়ার্ড উন্নয়নে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। সেখানে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৫৭টি ওয়ার্ড উন্নয়নে আড়াইশ কোটি টাকার কাজ করছে।
উল্লেখ, প্রকল্পে সরকারি অনুদান থাকলেও মোট ব্যয়ের মধ্যে ২০-৩০ শতাংশ অর্থ সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ফান্ড থেকে ব্যয় করতে হয়। এটাকে দাপ্তরিক ভাষায় বলা হয় ‘ম্যাচিং ফান্ড’। কিন্তু আর্থিক সঙ্কট থাকায় ম্যাচিং ফান্ডের অর্থ যোগানে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।