বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ডেঙ্গুজ্বরের ভয়াবহতা বেড়েছে। বিশেষ করে অভিজাত এলাকা বারিধারা, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানীতে এর প্রকোপ বেশি। এই প্রকোপ কমিয়ে আনতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) ইতোমধ্যে বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম ছাড়াও বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ৫৭টি ওয়ার্ডে নিয়মিত এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন করা। কোনো বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পেলে তা ডিএসসিসির কর্মীরা ধ্বংস করবেন। এজন্য স্থানীয়দেরকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। মশক নিধনকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে ওষুধ ছিটাবেন।
ডিএসসিসির সংশিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, চলতি বছরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। কারণ ইতোমধ্যে বৃষ্টির পরিমাণ কমে গেছে। তাই কিছু কিছু এলাকার ডোবা নালার পানি আটকা পড়েছে। আর তাতেই এডিস মশার প্রজনন বেড়েছে। ডেঙ্গু নিরাময়যোগ্য রোগ তবে নারী ও শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে তারাই এগিয়ে আছেন। এডিস মশা সাধারণত বাসাবাড়িতে ফুলের টব, টায়ার, ফ্রিজ, এসিতে জমে থাকা পানিতে জন্মায়। এ রোগ থেকে দূরে থাকতে বাড়ির আশপাশে কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না ও নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘুমাতে যাওয়ার সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৩৩ হাজার বাড়ির লার্ভা নিধন করা হয়েছে। কয়েক দফা ডেঙ্গু প্রতিরোধ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালানো হয়েছে। এছাড়াও ডেঙ্গু প্রতিরোধে মসজিদ, স্কুল-কলেজে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের এলাকায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে জনসচেতনতামূলক সভা, শোভাযাত্রসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, এডিস মশা থেকে ডেঙ্গুজ্বরের চার ধরনের ভাইরাস ছড়ায়। এগুলো হলোÑ ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। এবার সবচেয়ে ঝুঁকি হেমোরেজিক। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা না হলে এতে মৃত্যুর শঙ্কা থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক অনুষদের ডিন প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ জানান, সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হলে ডেঙ্গুগুজ্বরে আক্রান্ত প্রায় শতভাগ রোগীই ভালো হয়ে যায়। যদিও বলা হয় যে ডেঙ্গু হেমোরেজিকে মৃত্যুর হার ৫ থেকে ১০ শতাংশ, কিন্তু বাস্তবে নিজ অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে, এই হার ১ শতাংশেরও কম। তাই ডেঙ্গু নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কারণ নেই। ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় দিন থাকে এবং তারপর জ্বর সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। তবে কখনো কখনো দুই বা তিন দিন পর আবার জ্বর আসতে পারে।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব শাহাবুদ্দিন খান বলেন, গতবছর চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। এবার চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব নেই। তবে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। ডেঙ্গুজ্বর এডিস মশা কামড়ে ছড়ায় কিছুদিন আগেও মানুষ এটি জানতো না। এছাড়াও এডিস মশা নোংরা পানিতে জন্মায় না সেই ধারণা কয়েক বছর পর পাওয়া গেছে। সিটি কর্পোরেশনের সচেতনামূলক বার্তা ও বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে জনগণ এখন জানতে পেরেছেন যে স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার জন্ম বিস্তার লাভ পায়। আর এই মশা ধ্বংস করতে প্রতিবছরের মতো এবারও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শেখ সালাহউদ্দীন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে সত্য। এটি কীভাবে ধ্বংস করা যায় প্রতি বছরের মতো এবারও চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এডিস মশা থেকে বাঁচতে ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।