পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংসদ অধিবেশন চলাকালে জাতীয় সংসদ ভবনে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটণায় কোনো দায়ী খুঁজে পায়নি গঠিত তদন্ত কমিটিগুলো। বিদ্যুৎ ও গণপূর্ত বিভাগের পাঁচটি তদন্ত কমিটিই নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে দায় সেরেছে। অবশ্য পিডিবি, ডিপিডিসিসহ বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গনপূর্তের কারিগরি ত্রু টির বিষয়টি উলেখ করা হয়েছে। তবে দায়িত্বশীল কাউকে দায়ী করা হয়নি। এদিকে গণপূর্ত গঠিত তদন্ত কমিটি নিজেদের কোনো দোষই খুঁজে পায়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের ওপরই দায় চাপাচ্ছেন তারা। তবে একটি বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে দুটি বিভাগেরই। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটণার জন্য সরকারের এসব প্রতিষ্ঠান দায়ী কোনো ব্যাক্তিকে খুঁজে না পেলেও দায় ফেলছেন সংসদ ভবনের বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী অত্যাধুনিক জিআইএস সিস্টেমকে। কারিগরি সমস্যা হওয়ায় এটি হঠাৎ ট্রিপ করে। যেকারণে অন্ধকারে ঢেকে যায় জাতীয় সংসদ ভবন।
জানা গেছে, জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরুর পূর্বমুহর্তে সংসদ ভবনে ই/এম বিভাগে দায়িত্ব পালনকারী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক স্টেশনে না থেকে বিদেশভ্রমণ করায় অধিস্তনরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। আর স্টেশনে থাকলেও অধিবেশনের প্রাক্কালে সংসদের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপবিভাগীয় বিভাগীয় প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেয়ায় তারা নিজেদের দায়িত্ব গুটিয়ে নিতে শুরু করেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সংসদ সংশ্লিষ্টরা নজিরবীহিন এই ঘটণায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদে বিদ্যুৎ সরবরাহকারীর দায়িত্বে থাকা গনপূর্ত অধিদপ্তরের ওপরই আঙ্গুল উঠাচ্ছেন। অনেকে বিশেষজ্ঞের ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর দায়সারা প্রতিবেদনের সমালোচনাও করছেন। কর্তব্যরতদের অদক্ষতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগও উঠছে। বিদ্যুৎ ও গণপূর্ত বিভাগের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তারা বলছেন, যাই ঘটুক না কেন মূলত সংসদের অত্যাধুনিক জিআইএস প্রযুক্তিতে চলা বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী মেশিনটি ট্রিপ করাতেই যে এই সমস্যা হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ সংসদে একাধিক বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ রয়েছে। একটি লাইনে সমস্যা দেখা দিলে অন্যটি দিয়ে চলবে। একসাথে চার চারটি লাইনে সমস্যা হতে পারে না। বাংলাদেশি প্রযুক্তিতে অভ্যন্ত কর্তব্যরতরা হয় এটির ব্যবহার জানেন না নতুবা মেশিনে নিম্নমানের যন্ত্রপাতির ব্যবহার হয়েছে। তা না হলে ৫০ কোটি টাকা খরচ করে নিয়ে আসা মেশিন মাত্র এক বছরেই এমন সমস্যার জন্ম দিতো না।
গত মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার পরে সংসদ ভবন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ব্লক বাদে সংসদ ভবনের অন্যসব ব্লক বিদ্য্যুৎহীন হয়ে পড়ে। সংসদ অধিবেশন বিকেল ৫টায় শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু হয় ১০ মিনিট পর। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে দিনের সব কার্যক্রম স্থগিত করে জাতীয় সংসদের অধিবেশন মূলতবি করতে হয়। রাজধানী জুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও সংসদ ভবনের মতো সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিভ্রাটের ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। ঘটণার পরপরই রহস্য উদ্ঘাটনে নামে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। গঠিত হয় পাঁচটি তদন্ত কমিটি।
বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব ফয়জুল আমীনকে প্রধান করে বিদ্যুৎ বিভাগ একটি ও ডিপিডিসির পরিচালক (অপারেশন) এ টি এম হারুনুর রশীদকে প্রধান করে চার সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই বিভাগের পিজিসিবি ও পিডিবিও পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। এদিকে একজন যুগ্মসচিবকে প্রধান করে পৃথক আরেকটি তদন্ত গঠণ করে গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রণালয়। সবগুলো কমিটিই এরইমধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু রহস্য রহস্যই থেকে যায়। ঠিক কী কারণে এই বিড়ম্বনা তৈরি হয়, এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন থেকে বিতরণ পর্যন্ত সব সংস্থার কর্মকর্তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করছেন। দায় এড়িয়ে গেছেন সংশ্নিষ্ট সবাই। তবে ডিপিডিসির তদন্ত রিপোর্টে ৬টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- আন্ডার ভোল্টেজ রিলে সেটিং যথাযথ করা, পিডব্লিউডি উপকেন্দ্রের ১১ কিলোভোল্ট ফিডার রিলে সংযোগ সক্ষম করা, লোডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জেনারেটর বসানো।
গনপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লিউডি) ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের (ডিপিডিসি) মাধ্যমে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে। ডিপিডিসি আমিনবাজারের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) সঞ্চালন লাইন থেকে সরাসরি সংসদে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। পিজিসিবি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ডিপিডিসির কাছ পৌঁছে দেয়। আর সংসদ ভবনে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব পালন করে গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) উপকেন্দ্র।
এ বিষয়ে ডিপিডিসি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (অপারেশন) এ টি এম হারুনুর রশীদ ইনকিলাবকে বলেন, এই ঘটণার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ কোনোভাবেই দায়ী নয়। পিডিবি কিংবা ডিপিডিসির সামান্যতম ত্রু টিও ছিলো না। সংসদ ভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পূর্ত কর্মকর্তরাই এটি ভালো বলতে পারবেন।
ডিপিডিসির প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. রমিজ উদ্দিন সরকার, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ১৩২ কেভি গ্রিড লাইন ‘ট্রিপ’ করার কারণে মূলত বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছিল। ডিপিডিসির কোনো সমস্যা ছিলনা। বিদ্যুত সরবরাহের দায়িত্বে থাকা গনপূর্তের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম না জেনে ভুলভাবে ব্যবহার করায় মেশিনটি ট্রিপ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।