পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান ধরপাকড় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। সাদা পোশাকে ধরপাকড় কারা করে জানতে চেয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গণফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, সাদা পোশাকে ধরপাকড়ের ব্যাপারে তদন্তের দরকার; এরা কারা? সাদা পোশাকে কাউকে ধরার ক্ষমতা আইনে দেওয়া নেই। মানুষ যদি সাদা পোশাকওয়ালাদের ধরে বলে তুমি কে? পোশাক দেওয়া হয় যাতে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে তারা রাষ্ট্রের দায়িত্ববান লোক। পোশাক না পরলে মানুষ ধরে নিতে পারে- এরা হলো ছিনতাইকারী! এরা মানুষকে অন্যায়ভাবে কিডন্যাপ করছে। আইনে সাদা পোশাক পরে কাউকে গ্রেফতার করার বিধান নেই।
ড. কামাল আরো বলেন, যারা ইউনিফর্ম পরে তারা একটি ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকে, তাদের পরিচয় থাকে। যাদের ধরার ক্ষমতা আছে তাদের আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। আজকে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে হয়, আমরা সাংবিধানিক শাসনের বাইরে চলে যাচ্ছি। সংবিধানের বাইরে গিয়ে করলে তা বেআইনি শাসন এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির পর্যায়ে পড়ে। এটা বেশি হলে আমরা গুরুতর সঙ্কটের সম্মুখীন হব। সরকারকে এ ব্যাপারে সজাগ হতে হবে যাতে এসব দ্রুত বন্ধ করা যায়।
হঠাৎ ধরপাকড় আতঙ্ক, পুরনো মামলা সচল, ঘটনা ঘটেনি অথচ মামলা করে রেখেছে পুলিশ, এমন দাবি করে কামাল হোসেন বলেন, মৃত ব্যক্তিকে ককটেল ছুড়তে দেখেছে পুলিশ! এগুলো পুলিশ সম্পর্কে উদ্বেগের কারণ। এ রকম ঘটনা একটার পর একটা ঘটছে। এটা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ।
ড. কামাল বলেন, সাংবিধানিক শাসন যেখানে থাকে, সেখানে পুলিশের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে। এটি হলো সাংবিধানিক শাসন। যেখানে স্বৈরতন্ত্র থাকে, সেখানে ইচ্ছামতো লোকজন ধরা যায়, মানুষকে গুম করা যায়। সাংবিধানিক শাসন থাকলে কাউকে ধরলে বলতে হবে, কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা জানাতে হবে। কোর্টে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করতে হবে, যাতে সে জামিন নিতে পারে। একবার-দুবার এরকম হলে আমরা বলতে পারি বিশেষ কারণে হয়তো এই আইন অমান্য করা হয়েছে। কিন্তু রীতিমতো যদি হতেই থাকে, তাহলে তো আর আমাদের সাংবিধানিক শাসন থাকে না। সবচেয়ে আপত্তিকর যেই জিনিসটার ব্যাপারে সরকারকে আমরা জানাবো যে এই আদেশ যদি পুলিশকে দিয়ে থাকেন, আপনারা এটা থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় আমরা কোর্টে যাবো।
তিনি বলেন, এই আদেশ দেওয়া যেতে পারে না, আমরা কেন ধরছি এটা আমরা জানাবো না। এটা হতে পারে না, এটা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ যদি আদেশ না পেয়ে এরকম করে থাকে, তাহলে সেটা আরও গুরুতর অপরাধ। আর যদি ওপর থেকে আদেশ দেওয়া হয়, তাহলে এ ধরনের আদেশ বেআইনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে যদি এগুলো করতে থাকে সরকার, তাহলে পরিবেশটা নষ্ট হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, এখানে কোনও দল বা নেতানেত্রীর পক্ষে বলছি না। একটা অসুস্থ মানুষের কথা বলছি। আমি মনে করি আমাদের তো একটা ঐতিহ্য আছে পাকিস্তান আমল থেকেই, যে কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া। যারা বিচারাধীন তাদের জন্য সব হাসপাতালেই ব্যবস্থা রয়েছে। আমি বলবো না নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিন। তবে নীতির যে জায়গা আছে সেখান থেকে বিশেষ বিশেষ ভাবে হয়রানি, অসুস্থ মানুষকে কষ্ট দেওয়া মোটেও উচিত না। এটা একটা খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, আজ না হয় এক দল বিরোধী অবস্থানে আছে, কাল তারা নাও থাকতে পারে। অসুস্থ মানুষকে কষ্ট দেওয়া মোটেও উচিত না। আমাদের সংবিধানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এগুলো থেকে সরকারের বিরত থাকা উচিত। ড. কামাল বলেন, আমরা এটাও শুনছি যে, ওনার স্বাস্থ্যের কারণে বিএনপি চাচ্ছে হাসপাতালে নেওয়া হোক। কিন্তু দরকার ছিল ওনাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। যারা বিচারাধীন তাদের জন্য সব হাসপাতালেই ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের ভুলে যাওয়া উচিত না যে আমরা একটা সভ্য সমাজে বসবাস করি। এদেশে আমরা সবাই সভ্য, আমরা সভ্য রাষ্ট্রকে যেন অসভ্য রাষ্ট্রে পরিণত না করি।
খালেদা জিয়ার বিচারকাজ পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে উদাহরণ দেওয়া হচ্ছে কর্নেল তাহেরের। সামরিক শাসনে তখন কতো লোক মারা গিয়েছিল, এর মধ্যে কর্নেল তাহেরের ভূমিকা ছিল। আর তা প্রায় ৪১ বছর আগে। এই এতো বছর আগের একটি উদাহরণ দিয়ে এটা করার কোনও মানে হয় না। যদি অভিযুক্ত হন, বিচার হয় হোক। কিন্তু এই ব্যাপারে কোনও বিশেষ ব্যবস্থা করা সংবিধানকে অমান্য করা। সরকারও যেটা করছে এটা সরকারের পক্ষে যাচ্ছে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, এই সরকার ধারাবাহিক না, আগের ৫ বছর ইলেক্টেড হয়ে এসেছে, পরের পাঁচ বছর নির্বাচনের নামে একটা অনুষ্ঠান করে চালাচ্ছে। এই সরকারের বিদায় নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এটা জনগণ বিচার করবে।
জামায়াত থাকলে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্য হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের দল করবে না, অন্য কোনো দল যাবে কিনা আমার জানা নেই। আমি সারাজীবনে যা করিনি তা এখনও করব না। ওরা তো এখন কোনো রাজনৈতিক দলও না। তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিক উল্লাহ, সাইদুর রহমান, মোশতাক আহমদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আবম মোস্তফা আমিন উপস্থিত ছিলেন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।