পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দক্ষিণাঞ্চলের তিনটি জেলার অন্তত ৭টি উপজেলায় সম্ভাবনার নতুন দ্বার ভাসমান সবজি ও বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়া। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলে এ অঞ্চলে প্রক্রিয়াটির সম্প্রসারণ ঘটতে পারে। বর্ষার সময় বরিশালের আগৈলঝাড়া, উজিরপুর, পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, নেছারাবাদ এবং ঝালকাঠি সদর, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া কচুরিপানাসহ আগাছার ঢিবি তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী সবজি ও চারা উৎপাদন করছে। স্থানীয় লাগসই প্রযুক্তির এ সবজি চাষে এলাকার কয়েক হাজার কৃষক সবালম্বী হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর ও হবিগঞ্জসহ হাওর এলাকায়ও ভাসমান সবজি ও বীজ উৎপাদনে প্রক্রিয়া কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেে ।
জানা গেছে, সম্প্রতি সরকার এ প্রক্রিয়া আরো সম্প্রনারণের জন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প-প্রস্তাবনা অনুমোদন করেছে । কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনুযায়ী এ লক্ষ্যে প্রণীত প্রকল্পটি বাস্তবাযিত হলে, তা শুধু কৃষকদের জীবনমানের উন্নয়নই ঘটাবে না, দেশের বিভিন্ন এলাকার সবজির চাহিদাও অনেকাংশে পূরণে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদগণ।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে. স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যয় সাশ্রয়ী ব্যবস্থায় অধিক মুনাফা অর্জনের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি বিল এলাকায় অনেক কৃষকই এখন এ ভাসমান চাষ প্রযুক্তিতে সবজি চাষ করছে। পরিবারের ছোট-বড় সদস্যরাও কৃষকদের এ সবজি উৎপাদন কাজে সহযোগিতা করছে। ভূমিহীন কৃষকরা এ পদ্ধতিতে আগ্রহী হয়ে অন্যের জমির ওপর জলাশয়ে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছে। প্লাবন ভূমিতে ভাসমান বেডে চাষ করায় জমির মালিকেরও কোন আপত্তি করছে না। ভাসমান সবজি বাগান তৈরির কারণে এসব বিল এলাকায় ইরি-বোরো মৌসুমে জমির মালিককে চাষের জন্য আর কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হচ্ছে না। ভাসমান বেডের জৈব সারেই ফলানো যাচ্ছে ইরি-বোরো ধান। শুধুমাত্র বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় প্রায় ৫শ হেক্টর বেডে সবজি ও মসলা চাষ হচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের একবারই নীচু এলাকার জমিতে ফসল উৎপাদন হলেও বাকি সময় পানি জমে থাকায় হাজার হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকত। আগাছা ও কচুরিপানায় ভরে যেত ডুবন্ত ফসলের মাঠ। ফরে বোরো মৌসুমে ঐসব জমি আগাছামুক্ত করতেও বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হত। ফলে ফসল উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যেত অনেক। আবার বোরো ধান ওঠার পর বর্ষা মৌসুমে নিম্নাঞ্চলের ফসলবিহীন পানিবদ্ধ জমি পানিতে তলিয়ে থাকায় অভাব পিছু ছাড়ত না ঐসব এলাকার কৃষিজীবীদের।
তবে শুধুমাত্র নিজেদের চেষ্টায় সবজির চাড়া ও ফসল উৎপাদনের এ লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন এলাকার কৃষি যোদ্ধারাই। পানিবদ্ধ ফসলী জমির জলজ শ্যাওলা, লতা গুল্ম ও কচুরিপানা আর জলজ বিভিন্ন উদ্ভিদকে স্তুপ করে ভাসমান বেড তৈরী করা হচ্ছে। সেখানেই মসলা জাতীয় ফসল ও বিভিন্ন সবজির চারা উৎপাদন করা হয়।
কৃষকরা জানায়, প্রথমে ভাসমান বেড তৈরি করে তাতে পচন ধরার পর বীজের মাধ্যমে গাছের চারা উৎপাদন করা হয়। ২০ থেকে ২৫ দিন পর এসব চারা বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। একইভাবে সবজির ভাসমান ক্ষেতও তৈরি করা হচ্ছে। এসব ভাসমান বাগানে লাউ, শিম, বেগুন, ফুলকপি, ওলকপি, বরবটি, কড়লা, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, ডাঁটা, টমেটো, আদা, হলুদ, পেঁপে ও কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন চারা উৎপাদন করে আর্থিক স্বচ্ছলতা লাভ করছেন তারা। আর এসব চারা দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের ফলে বর্ষাকালীন ও আগাম শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদনেও সহায়ক হচ্ছে।
এদিকে, ভাসমান সবজি উৎপাদন সম্প্রসারনের এ কর্মসুচি সরকারি একটি প্রকল্পের আওতায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও ২০১৬’র ডিসেম্বরে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। অতি সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তবনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলে একটি বড় ধরনের প্রকল্প অহুমোদন লাভ করেছে। আগামী অর্থ বছর থেকে প্রকল্পটির পুরোদমে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে। এলক্ষ্যে প্রকল্প পরিচালকও নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।