পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে সরকার নির্বাচন চাইলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সবার আগে মুক্তি দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে কোন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। এজন্য সবার আগে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে মুক্তি দিলেই বোঝা যাবে সরকার দেশে নির্বাচন চায়। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাত মাস ধরে কারারুদ্ধ। সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আমরা যে তার মুক্তি চাচ্ছি এটা কোন করুনা চাচ্ছি না। কোন দয়া বা ভিক্ষা চাচ্ছি না। আইন অনুযায়ী তার যে প্রাপ্য নি¤œ এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া সেটা দেয়া হচ্ছে না। আবার আদালত থেকে জামিন হলেও সরকার তাকে মুক্ত হতে দিচ্ছে না। একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে এবং মুক্তি তার প্রাপ্য।
সরকার দেশকে ধ্বংস স্তূপে পরিণত করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার গত ১০ বছরে বাংলাদেশকে ধ্বংস স্তূপে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যা অর্জন করেছিলাম সব অর্জনগুলোকে তারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে এই সরকার সংসদকে একটা প্রহসনে পরিণত করেছে। সেখানে একটি গৃহপালিত বিরোধী দল বানিয়ে সেটাকে অকার্যকর করে রেখেছে। প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো বিচারবিভাগকে দলীয়করণ করার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা তারা চালাচ্ছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না। প্রতি পদে পদে স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করার জন্য অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা পরিকল্পনা করছে এবং সেভাবে বিরোধী দলকে ধ্বংস করছে।
সম্প্রতি নতুন করে এক লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন তারা সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভৌতিক মামলা দিয়ে হাজার হাজার তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনেই প্রায় এক লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। ভৌতিক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে। সারাদেশের প্রত্যেকটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে অসংখ্য মিথ্যা মামলা তারা দিয়েছে। সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, অত্যাচার-নির্যাতন করে, গুম-খুন, গ্রেফতার করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না।
তিনি বলেন, এই সরকার সন্ত্রাসী সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা সন্ত্রাস করছে। একদিকে তারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আর অন্যদিকে তারা বিনা কারণে তারা গ্রেফতার করে গোটা জাতিকে জিম্মি করেছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকারকে চলে যেতে হবে, তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে। জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমাদের এখন ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রয়োজন। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে ঐক্য তৈরি করে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ নরকে পরিণত হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থা, অত্যাচার-নির্যাতন থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। যে দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে এই দানবকে আমাদের সরাতে হবে। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে যে আহ্বান করে গেছে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আমি তার সেই আহ্বান আবারও জানিয়ে বলছি আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অচলায়ন ভেঙে ফেলি। বুকের ওপর যারা বসে আছে তাদেরকে সরাতে হবে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, সেলিমা রহমান, ডাঃ জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়নাল আবদীন ফারুক, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল নেতা রাজিব আহসান, শ্রমিক দল নেতা নূরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।