পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার কারাগারে বিনা চিকিৎসায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার পরিবারের সদস্যরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কারাগারে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তারা ফিরে এসে দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থার যে বর্ণনা দিয়েছেন তাতে আমরা উদ্বিগ্নই নয়, আমরা হতবাক, বিস্মিত। এরপরেও সরকার তার চিকিৎসার জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে মিথ্যা সাজানো মামলায় শাস্তি দিয়ে কারাগারে বেআইনিভাবে আটক রেখে তাকে হত্যা করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। গতকাল (শুক্রবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তার সাথে দেখা করে এসে জানিয়েছেন দেশনেত্রী অত্যন্ত অসুস্থ। তার বাম হাত ও বাম পা প্রায় অবশ হয়ে গেছে। অসহ্য ব্যথা অনুভব করছেন তিনি। তিনি আরো বলেছেন যে, তার কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। একই কথা তিনি বলেছেন ৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরিত বেআইনি আদালত কক্ষে। তিনি বলে দিয়েছেন যে, আমি আর এই আদালতে আসতে পারবো না শারীরিক কারণে। আমরা তার স্বাস্থ্য নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা আজকেই (গতকাল) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাবো। আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে চাই, দেখা করে দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানাবো।
তিনি বলেন, দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো অসুস্থ নাগরিককে সুস্থ না হলে বিচার কার্য চালানো যায় না। এটা সম্প‚র্ণ অমানবিক ও সংবিধান পরিপন্থি। আমরা অনেকবার বলেছি, তাকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরাও বলেছেন যে, তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করে তাকে চিকিৎসা দেয়া তার জীবন রক্ষার জন্য অতি প্রয়োজন। আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি তার জীবন রক্ষার জন্য। এখন যে অবস্থায় তিনি আছেন তাতে তার জীবন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, তিনি এই অবস্থায় কতদিন বেঁচে থাকতে পারবেন। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্যথায় সকল দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। বিশেষ করে সংবিধান লঙ্ঘন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাদের অভিযুক্ত হতে হবে। আমরা কারাকর্তৃপক্ষকেও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্তৃপক্ষ। আপনাদের দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে আইন ও বিধান দ্বারা পরিচালিত। এই দায় আপনাদেরও বহন করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার আমাদের কথা কর্ণপাত না করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে স্যাঁত স্যাতে ঘরে আবদ্ধ করে রেখেছে। একজন সাধারণ বন্দির সাথে এই ধরণের আচরণ করে না। সরকার তাকে আবার শাস্তি দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এটা স্পষ্ট যে, দেশনেত্রীকে রাজনীতি থেকে এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দ‚রে সরিয়ে রেখে একতরফাভাবে নির্বাচনে নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করার নীল নকশা নিয়েই এই অপপ্রয়াস চালাচ্ছে সরকার।
কারাগারের অভ্যন্তরের আদালতে বসানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘সঠিক’ নয় জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্যাট ওয়াজ নট আন্ডার সিভিল এডমিনিস্ট্রেশন, দ্যাট ওয়াজ মার্শাল ‘ল’, এটা দ্যাট টাইম। সেটার সাথে তুলনীয় নয়। সংবিধানে বলাই হচ্ছে এই বিচার কার্য চলতে হবে ওপেন পাবলিক ট্রায়াল হতে হবে, প্রকাশ্য হতে হবে। একটা ছোট্ট ঘরের মধ্যে তাকে (দেশনেত্রী) ট্রায়াল করছেন। ১০ জনের বেশি উকিলই বসার ব্যবস্থা নেই সেখানে। এটা ওপেন আদালত নয়। বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের শুরুতেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখানে অসাংবিধানিক কী হল? প্রজ্ঞাপন দিয়ে কোর্ট যেখানে খুশি হতে পারে। খালেদা জিয়ার স্বামী জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের পর কারাগারে আদালত বসিয়ে কর্নেল আবু তাহেরকে বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝোলানোর কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
এটা তো ক্যামেরা ট্রায়াল না। পুরো দরজা তো খোলাই ছিল। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই জেল গেটে আদালত বসানো হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারাগারের অভ্যন্তরের বিচারালয় তো মুক্ত, দরজা খোলা। জেলাখানা কী প্রকাশ্য। এই জেলখানার চার দেয়ালের ভেতরে ও গেইটের ভেতরে এই তথাকথিত আদালতটি বসানো হয়েছিলো। জেল গেইটের ভেতরে হলে সেখানে সাধারণ মানুষ প্রবেশের সুযোগ নেই। তাহলে এটা কীভাবে উন্মুক্ত? প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এটা বলছেন। এটা সত্যের অপলাপ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, শহীদ জিয়াউর রহমানের সময়ে এই রকম হয়েছে। আমরা পরিস্কার বলতে চাই, তখন বিচারপতি আবু সাহাদাত মো. সায়েম সরকার দেশে সামরিক আইন ঘোষণা করেছিলেন। তখন সংবিধান স্থগিত ছিলো। সেই ধারাবাহিকতার পরে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে নির্বাচন করে সামরিক আইন প্রত্যাহার করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের সময়ে যে বিচার হয়েছিলো সেটা ছিলো রাষ্ট্রদ্রোহিতার অধীনে বিচার। আর বর্তমানে যে বিচার হচ্ছে সেটা রাজনৈতিক এবং একটি দুর্নীতির মামলা। বলে লাভ নেই ব্যক্তিগত জিজ্ঞাসা, প্রতিহিংসা ও আগামী নির্বাচন থেকে দেশনেত্রীকে বাইরে রাখার এটা একটা গভীর হীন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কারাগারে আদালত বসানো হয়েছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মুনির হোসেন প্রম‚খ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।