Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কারাগারে বিচারালয় ক্যামেরা ট্রায়ালের সামিল -সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বিচারালয় বসিয়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম শুরু করার সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘সংবিধানের পরিপন্থি’ বলেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটিকে ক্যামেরা ট্রায়াল বলেও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, সরকারে এই সিদ্ধান্ত সংবিধান বিরোধী, সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের আর্টিক্যাল ৩৫(৩) ধারা মতে এই ধরনের মামলা প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত হতে হবে। এখানে ক্যামেরা ট্রায়াল করার সুযোগ নেই। আমরা তাদের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং অসুস্থ দেশনেত্রীর বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেবার আহবান জানাচ্ছি। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সরকার একটা বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মামলা যেটা আলীয়া মাদরাসার মাঠে বিচারালয় তৈরি করে সেখানে বিচার করা হচ্ছিল। এখন আবার সেখান থেকে এটাকে ট্রান্সফার করে নিয়ে আসা হচ্ছে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে সেটা কাল থেকে শুরু হবে। আমরা মনে করি এটি ক্যামেরা ট্রায়াল। আমরা রাজনৈতিকভাবে এ বিষয়টাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছি। দেশেরে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা সর্বোপরি তিন একজন নাগরিক তার অধিকার হরণ করা হচ্ছে সংবিধান লঙ্ঘন করে। এর চেয়ে বড় অপরাধ কী হতে পারে।এটাকে কোনোভাবেই হালকা করে নেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে পরবর্তি কার্যক্রম ঘোষণা করবো। আমরা রাজনৈতিক কর্মস‚চি দেবো। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, অন্যায় ও বেআইনিভাবে উচ্চতর আদালতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হওয়ার পরও বিভিন্ন কারসাঁজির মধ্য দিয়ে তাকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই গণবিরোধী সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে দেশনেত্রীকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এবং তাকে নির্যাতন করার উদ্দেশ্যে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করা এবং একদলীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার হীন উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে ফখরুল।
সিআরপি‘র ধারা ব্যাখ্যা করে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, একটি দেশ চলে সংবিধানের অধীনে। সংবিধানের অধীনে অন্যকোনো আইন নেই বাংলাদেশে। যারা মৌলিক অধিকারের কথা বলেন বা যে মূল সংবিধান ১৯৭২ সালের কথা বলেন সেই সংবিধান থেকে এখন পর্যন্ত অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করা হয় নাই। ৩৫(৩) এ স্পষ্ট করে বলা আছে যেকোনো ফোজদারি মামলা এটা প্রকাশে হতে হবে। আজকে জেলখানার অভ্যন্তরে বিচার করার অর্থ হলো ক্যামেরা ট্রায়াল। এটা আমাদের সংবিধান সম্মত নয়। সিআরপিএস‘র ৩৫২ ধারাও একই কথা লেখা আছে যে, এই বিচার প্রকাশ্যে হতে হবে। এখন যেটা সরকার করছে এটা সম্পূর্ণভাবে সংবিধান পরিপন্থি।
তিনি বলেন, আমরা এই ব্যাপারে কথা-বার্তা বলব, পর্যালোচনা করবো এবং কোনো আইনি ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেব্যাপারে চিন্তা করব।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, কায়সার কামাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ