পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদের ছুটি কাটিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় ফিরছে মানুষ। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে ফিরছে তারা। নাব্যসংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ঈদের আগে যেখানে ১৭টি ফেরি চলছিল সেখানে ঈদের পরে চলছে মাত্র ছয়টি। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলের সড়কপথের যাত্রীরা কাঁঠালবাড়ি ঘাটে চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে, সিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি ট্রেন। প্রায় প্রতিটি ট্রেনই চলছে বিলম্বে। ৮ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে ১৪/১৫ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। ভুক্তভোগিদের মতে, ঈদের আগে যেমন ভোগান্তি ছিল ঈদের পরে ঢাকায় ফিরতেও প্রায় একই রকম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে রাজধানীতে ফিরছেন মানুষ। ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ রোবরার অফিস করবেন। ঈদের তিনদিনের সরকারি ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে চিরচেনা এই শহর ব্যস্ত হতে আরো দু-একদিন লাগবে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
এদিকে, গতকাল বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে রাজধানী-ফেরত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকামুখী প্রতিটি ট্রেনই ফিরেছে যাত্রীভর্তি হয়ে। রাজধানীতে ফিরে আসা যাত্রীরা জানান, স্বজনদের মাঝে থাকার আনন্দ পেছনে ফেলে ঢাকায় ফেরাটা কিছুটা বিষাদের। তা সত্তে¡ও জীবন সংগ্রামের জন্য এ শহরে আসতে হয়। ফিরতে হয় আয়- রোজগারে। তাই তো শত ভোগান্তির মধ্যেও ক্ষণিকের আনন্দ মিটিয়ে কর্মব্যস্ত নগরীতে ফিরে আসতে হয়। যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা ফেরার সময় ট্রেনের টিকিট পেতে যেমন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, তেমনি অনেককে ট্রেনের আসন পেতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। ঈদের আগে থেকেই প্রায় প্রতিটি ট্রেন চলছে বিলম্বে।
গতকাল রংপুর এক্সপ্রেস চলেছে প্রায় ৮ ঘণ্টা বিলম্বে। দিনাজপুরগামী একতা, দ্রুতযান ও নীলফামারীগামী নীলসাগর ট্রেনও চলছে বিলম্বে। আর ঈদ স্পেশালগুলোর কোনা টাইমটেবল নেই। পুরোটাই বিশৃঙ্খল অবস্থা। দিনাজপুর থেকে আসা একতা এক্সপ্রেসের একজন যাত্রী জানান, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনের ভেতরে বাজে অবস্থা ছিল। অনেকে দাঁড়িয়ে এসেছেন। এ কারণে সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও জিনিসপত্র নিয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়েছে। এদিকে, দুরপাল্লার বাসগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাত্রীদেরকে জিম্মি করে কোনো কোনো বাসে দ্বিগুণ ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে, বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারি ও এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু তা বাস্তবে দেখা যাচ্ছে না। অথচ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সেই ঘোষণাকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে।
টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় আসা আব্দুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, সকাল ১১টায় তিনি ঢাকা আসার জন্য নিরালা সুপার কাউন্টারে আসেন। এসে দেখেন টিকিটের মূল্য আগের ১৬০ টাকার পরিবর্তে ঈদ উপলক্ষে ২৫০টাকা। এ বিষয়ে কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলে তারা তাকে বলেন এই দামে টিকিট নিলে নেন, না হলে না নেন। পরে তিনি বাধ্য হয়েই ২৫০ টাকায় টিকিট নিয়ে ঢাকায় আসেন। মোহাম্মদ আলী নামের অপর এক যাত্রী ঢাকায় আসার জন্য সোনিয়া কাউন্টার থেকে ৪০০টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছেন। অথচ ঈদের আগেও টিকিটের মূল্য ছিলো আড়াই’শ টাকা। একই অবস্থা সকাল-সন্ধ্যা, ঝটিকা ও ধলেশ্বরী পরিবহনে। তারাও সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাট ও বাস স্ট্যান্ডগুলোতে অটোরিকশা, রিকশার চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাস, ট্রেন বা লঞ্চ থেকে নামার পর যাত্রীরা বাসায় যেতে অস্থির থাকেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
এদিকে, সড়কপথে এখন কোনো যানজট না থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের সড়কপথের যাত্রীরা কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া ঘাটে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে দুরপাল্লার বাস। স্থানীয় সূত্র জানায়, নাব্যসংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে রো-রো ও ডাম্প ফেরি চলাচল। শুধুমাত্র কে-টাইপ ও মিডিয়াম ছয়টি ফেরি চলছে। নাব্যসংকট কাটিয়ে উঠে ঈদের আগে যেখানে ১৭টি ফেরি চলছিল সেখানে ঈদের পরে চলছে মাত্র ছয়টি। এ কারণে ঈদে কর্মস্থলে ফিরতি মানুষ কাঁঠালবাড়ি ঘাটে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়ে পড়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখার সময়ও কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে অটকে ছিল সহস্রাধিক যানবাহন। এর মধ্যে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের সংখাই ছিল বেশি। পণ্যবাহী অনেক ট্রাক ছিল যেগুলো প্রায় ১৫ দিন ধরে আটকে আছে পারাপারের অপেক্ষায়। বিআইডব্লিটিএ-এর কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়, ঈদের দুই সপ্তাহ আগে নাব্যসংকট চরম আকার ধারণ করে। প্রথম দিকে সব ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। পরে শুধুমাত্র ছোট ফেরি চলাচল শুরু করে। নাব্যসংকট ফিরিয়ে আনতে খননকাজ চালিয়ে ঈদের তিন-চার দিন আগে সব ফেরি চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। ঈদের পর ফের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেল মুখে ফের দেখা দিয়েছে নাব্যসংকট। গত শুক্রবার রাতে সব ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। তবে গতকাল শনিবার সকাল থেকে শুধুমাত্র কে-টাইপ ফেরিগুলো চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।