পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে যেন প্রাণ ফিরেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজার। ঈদের আগের দিন (মঙ্গলবার) এবং ঈদের দিন অল্পসংখ্যক পর্যটক এলেও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এসেছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক। এতে ভরপুর হয়ে গেছে হোটেল-মোটেল, গেস্ট ও রেস্টহাউসগুলো। পদচারণা বেড়েছে সৈকতের বালিয়াড়িতেও। জানা যায় ঈদুল আজহার এই ছুটিতে কক্সবাজার আসছেন প্রায় দুই লাখ পর্যটক।
বছরের অন্যসময় রুম ভাড়ায় কিছুটা ছাড় দেয়া হলেও ঈদ উপলক্ষে তারকা হোটেলসহ সকল আবাসিক প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মূল্যেই রুম ভাড়া নিচ্ছে এবার। সৈকত ছাড়াও জেলার পর্যটন স্পট ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, হিমছড়ি, ইনানী ও রামুর বৌদ্ধপল্লীতেও ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় জমেছে। তবে এসব পর্যটকদের মাঝে স্থানীয়দের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে এখনো চালু হয়নি দেশের প্রসিদ্ধ প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটের জাহাজগুলো। পর্যটকদের সমুদ্রস্নান ও পর্যটন স্পটে নিরাপদে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন, লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ। দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়ম-কানুন মানতে পর্যটকদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রমতে, ঈদের ছুটিতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে কক্সবাজারে। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটছে। কিন্তু বর্ষার শেষ সময় হওয়ায় অন্য বছরের ন্যায় উপচেপড়া ভিড় নেই। তারপরও কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট ও রেস্টহাউসের অধিকাংশ রুম বুক হয়ে গিয়েছিল বলে জানা গেছে।
হোটেল-মোটেল মালিকরা বলছেন, পর্যটকরা কক্সবাজার এলে শুধু শহরের সমুদ্র সৈকতেই ঘুরে বেড়ান তা নয়; পাশাপাশি উখিয়ার ইনানীর পাথুরে সৈকত, হিমছড়ির পাহাড়ি ঝরনা ও দরিয়ানগর পর্যটনপল্লী, টেকনাফের মাথিনকূপ, কুদুমগুহা, নেচার পার্ক, নাফ নদীর জালিয়াদ্বীপ, মিয়ানমার সীমান্ত, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, মহেশখালী, রামুর বৌদ্ধপল্লিসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে যান।
সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, সীইন পয়েন্ট, কলাতলীর গোল চত্ত¡র পয়েন্ট ও হিমছড়ি এবং ইনানীতে পর্যটকদের সমুদ্র দর্শনের জন্য সাজানো হয়েছে শত শত ছাতা-চেয়ার। চেয়ারে বসলে হকার কিংবা বখাটেরা যাতে উৎপাত করতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে বলে জানান, সৈকতের চেয়ার-ছাতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) সদস্য ইয়ার মুহাম্মদ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটক আগমন বেড়েছে। সরগরম হয়ে উঠেছে হোটেল, মোটেল, রেস্তোর্রা, চা দোকানসহ দর্শনীয় স্থানগুলো। তারা জানান, ঈদের আগে থেকেই ২৪ ও ২৫ আগস্ট সৈকতপাড়ের সকল হোটেল-মোটেলের রুম বুকিং হয়ে যায়। সপ্তাহিক ছুটি হিসেবে এ দুইদিন কমপক্ষে দুই লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করবে।
হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, শহরের কলাতলীর সৈকত ঘেঁষে এক থেকে দেড় বর্গকিলোমিটারে তারকা মানের ১০টিসহ প্রায় অর্ধসহস্রাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস, কটেজ ও ফ্ল্যাট রয়েছে। পুরনো শহরের ভেতর রয়েছে আরও ৩০টির মতো হোটেল। সবমিলিয়ে কক্সবাজারে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ পর্যটকের রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এবং গতকাল শুক্রবার দুপুরে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, ডায়বেটিকস পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ গোসল করছেন, আবার কেউ প্রিয়জনকে সাথে খালি পায়ে সাগরের নোনা জলের ছোঁয়া নিচ্ছেন, আর বসে ঢেউয়ের নাছন দেখছেন অনেকে। অনেকে ব্যস্ত ছবি তোলায় আর সেলফিতে। উদ্যমী কেউ জেট স্কি আবার কেউ চালাচ্ছেন বিচ বাইক। ঘোড়ায় পিঠে সাওয়ার হয়ে দৌড়াচ্ছেন কেউ কেউ।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা যাতে কেনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন তারই লক্ষ্যে পুলিশও বেশ সক্রিয় রয়েছে বলে। তিনি বলেন, পুলিশের লোকবল বাড়ানো হয়েছে। শহরের কলাতলী, সি-ইন ও লাবণী পয়েন্ট সৈকতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারা থাকছে। এছাড়া হিমছড়ি, দরিয়ানগর ও ইনানী পর্যটন স্পটে রাত ১০টা পর্যন্ত পুলিশি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপনের পাশাপাশি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে নতুন করে। এছাড়া মাইকিং করে জানানো হচ্ছে জোয়ারের সময় সৈকতে সবুজ পতাকা ওড়ানো থাকবে। তখন সৈকতে নামা যাবে। ভাটার সময় ওড়ানো থাকে লাল পতাক। তখন সমুদ্রে নামা বিপজ্জনক।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, টানা ছুটি থাকায় কয়েক লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসবেন এমনটা ধরে নিয়েই কঠোর নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকরা যাতে ছিনতাই, ইভটিজিং, হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া প্রদানের শিকার না হন সেটি নিশ্চিত করে শহরের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে র্যাব, পুলিশের ৪৫০ সদস্য কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।