পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উপচে পড়া ভিড়, চারিদিকে উৎসবের আমেজ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ। লুসাই কন্যা কর্ণফুলীর তীরে বিকেলের আলোয় অন্যরকম এক আবহ। নদীতে নোঙর করা ছোট-বড় জাহাজের সারি। তার ফাঁকে ফাঁকে যাত্রী পারাপারে সাম্পানের নাচন। নদীর ছোট বড় ঢেউ, জাহাজের সাইরেন। একদিকে নদী আর অন্যদিকে বন্দরনগরী। সন্ধ্যায় জাহাজ আর সাম্পানে জ্বলে উঠা বর্ণিল বাতিগুলো মনকে রাঙিয়ে তোলে। যেন ছুটে চলছে কোনো জোনাকির দল। সব মিলিয়ে অন্যরকম এক ভাললাগা! রাজধানী ঢাকার হাতির ঝিলের মতোই চট্টগ্রামের কর্ণফুলী তীরের ফিরিঙ্গি বাজারে গড়ে উঠছে আরেক ‘হাতির ঝিল’। নেভাল-টু নামে এ বিনোদন পার্কটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে এরমধ্যেই হাতির ঝিলের আনন্দে মাতোয়ারা কর্ণফুলী তীরের এ বিনোদন কেন্দ্রটি। গতকাল (শুক্রবার) সেখানে ছিল ভ্রমণ পিয়াসী আর প্রকৃতিপ্রেমি হাজারো মানুষের ভিড়।
তিনদিনের ঈদের ছুটির সাথেই দুইদিনের সরকারি ছুটি। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের সর্বত্র এখনও ঈদের আমেজ, উৎসবের আবহ। ঈদের পরদিন সকাল থেকে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে প্রতিবছরের মতোই উপচে পড়া ভিড় তৈরি হয়। গতকাল বিকেলে নগরীর ফিরিঙ্গি বাজারসহ সর্বত্রই ছিল মানুষের ভিড়। বিকেল থেকে বিনোদন কেন্দ্রলো মুখর হয়ে উঠে বিভিন্ন বয়সী ও শ্রেণিপেশার বিশেষ করে শিশুদের কলকাকলীতে। উৎসবের জোয়ারে ভাসছে চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলো।
বিকেল থেকেই ফিরিঙ্গি বাজারের নির্মাণাধীন পার্কে হাজারো মানুষের ভিড় জমে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে বেড়ানোর নতুন জায়গা হিসেবে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে এই পার্কটি। প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয়নি, এরপরও সেখানে প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যায় ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। যাদের বেশীর ভাগই কিশোর-কিশোরী ও তরুণ তরুণী। ঈদের ছুটিতে এই ভিড় আরও বেড়েছে। তারুণ্যের উল্লাস আর আড্ডায় প্রাণচঞ্চল চট্টগ্রামের এ ‘হাতির ঝিল’। সেখানে বসেছে হরেক পণ্যের পসরা। ছেলে-বুড়ো সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নদী তীরের মুক্তবাতাসে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন সবাই। সূর্য ডোবার সাথে সাথে সেখানে বর্ণিল আলোর খেলা। একদিকে শহরের সুউচ্চ ভবন, অন্যদিকে নদীর দুই তীরে নোঙর করা অসংখ্য জাহাজের আলো। চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নতুন সংযোজন এই ‘হাতির ঝিল’ খুব শিগগির পূর্ণাঙ্গ রূপ পাচ্ছে।
সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪০০ মিটার জেটি নির্মাণ করছে। পাশাপাশি নির্মিত হচ্ছে প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুট আয়তনের নগরবাসীর বিনোদনের জন্য পার্কও। বন্দরনগরীর ফিরিঙ্গিবাজার থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত এলাকায় নির্মিত পার্কে থাকছে স্টিল ব্রিজ, এমএস রেলিং, স্টিল ফেন্সিং, এপ্রোচ রোড ও ওয়াকওয়ে। ২০১৩ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এরইমধ্যে বন্দরের সদরঘাট জেটি থেকে ফিরিঙ্গিবাজার পর্যন্ত ৭৫০ মিটার দীর্ঘ ও ১৫ মিটার চওড়া সংযোগ সড়ক, ফিশারিঘাট খাল, লইট্টা খাল, জোবায়ের খালের ওপর ১৭০ ফুট লম্বা তিনটি ইস্পাতের সেতু তৈরি করা হয়েছে। শেষ হয়েছে তিন দিকে এমএস রেলিং ও গেট স্থাপন, ওয়াকওয়ে, তিনটি করে ছোট বড় গোল ছাউনির কাজও। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য মেরিনার্স সড়ক ঘেঁষে লাগানো হয়েছে গাছ। হাতির ঝিলের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে পুরো এলাকা।
গতকাল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল এলাকায় উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। নগরীর আগ্রাবাদ শিশুপার্ক, কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক, সিআরবি সাত রাস্তার মাথা, কর্ণফুলী সেতুু, ওয়ার সিমেট্রি ও বহদ্দারহাটের স্বাধীনতা পার্ক। নগরীর বাইরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত, ভাটিয়ারি পাহাড় পার্ক, সীতাকুন্ডের বেড়িবাঁধের পাশে সমুদ্র সৈকত, বাঁশখালী ইকোপার্ক ও সমুদ্র সৈকত, রাঙ্গুনিয়া এভিয়ারি পার্কসহ জেলার গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিনোদন স্পটেও আনন্দ উপভোগ করতে ছুটছেন অনেক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।