Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুঃশাসনের অবসান ছাড়া মানুষের মুক্তি মিলবেনা -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ১:১৬ পিএম | আপডেট : ২:২২ পিএম, ২০ আগস্ট, ২০১৮
দেশে যে ভয়াবহ দুঃশাসন ও স্বৈরশাসন চলছে এর যাতাকলে পিষ্ট হয়ে গোটা জাতি আজ আতঙ্কিত উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অবৈধ সরকারের দুর্নীতি, টাকা পাচার,লুটপাট, চাাঁদাবজি, দখলবাজিতে মানুষ অতিষ্ট। এ দুঃশাসনের অবসান ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি মিলবে না, মিলবে না স্বস্তি।  শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে, জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে, সত্যিকারভাবে মানুষ তাঁর পছন্দ অনুযায়ী জনপ্রনিধি নির্বাচন করতে পারলেই কেবল মুক্তি মিলবে এ জাতির।
 
আজ সোমবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
 
রিজভী বলেন, যদিও এটি কোরবানির ঈদ। তবু বিগত দিনগুলোতে কোরাবানির ঈদেও রাজধানীসহ সারাদেশের মার্কেটগুলো ঈদের আগে জমজমাট থাকত। এক দশকের মধ্যে ঈদ বাজারে এমন মন্দাভাব আগে কখনও দেখা যায়নি । ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে ঈদের সামগ্রি তুলে বিপাকে পড়েছেন। বেচা-বিক্রি বন্ধ। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার জন্য ঘরমুখি মানুষরা প্রচন্ড র্দুদশার মধ্যে পড়েছে। এ হলো দেশের বর্তমান অবস্থা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে গ্রেফতার আতঙ্ক।
 
তিনি বলেন, শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক আওয়ামী ভাবাপন্ন লোক হয়ত তাদের নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারে, কিন্তু বিএনপিসহ বেশীরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, দেশের সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধরাণ শিক্ষার্থী, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা এখন অবৈধ সরকারের নানা বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত, ক্ষতবিক্ষত। এতদিন শুধু বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন নিপীড়নের খড়গ চলছিল। চলছিল অপহরণ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা। এখন হামলা. মামলা, রিমান্ড এমনকি তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষার্থীদের। এমনকি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছেনা অবৈধ শাসক গোষ্ঠীর হিংসা আক্রমণ থেকে। নিরীহ ও নিরপরাধ শিক্ষার্থীরা ন্যায় সঙ্গত ও যৌক্তিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে ন্যায্য দাবিতে প্রতিবাদ করে এখন তারা কারাবন্দি । যদিও গতকাল কিছু শিক্ষার্থী জামিন পেলেও এখনও বহু নিরপরাধ শিক্ষার্থী কারাগারে বন্দি। মাথার ওপর মিথ্যা মামলার খড়গ ঝুলছে।  কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের জামিন মেলেনি এখনও। তাদের এবং তাদের অভিভাবকদের আহাজারি আর কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। অভিভাবকরা এক থানা থেকে আরেক থানা, আদালত থেকে আদলতে ছুটাছুটি করেও জামিন করাতে পারেননি সন্তানদের। সরকারের কাছে মিনতি জানিয়ে জনসমর্থনহীন সরকারের পাষান হৃদয় গলেনি। অজ্ঞাত নামা মামলার নামে হাজার হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়েরের ঘটনায় ঢাকাসহ সারাদেশের অভিভাকরা অজানা আতঙ্কে আছেন।
 
রিজভী বলেন, ছাত্ররা তাদের সহপাঠীদের জীবন বাঁচাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ন্যায় সঙ্গত প্রতিবাদ করেছিল সেটা কি অপরাধ? শিক্ষার্থীদের ন্যায় সঙ্গত কোটা সংস্কার আন্দোলন কি অপরাধ ?  অন্যায়ের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করা কি অপরাধ? বেআইন অস্ত্রে সজ্জিত হেলমেটধারী সরকারি দলের ক্যাডাররা ধাওয়া করে শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করে রক্তাক্ত করা কি ন্যায় সঙ্গত? আওয়ামী ক্যাডারদের হাতে আইন তুলে নেওয়া কি বৈধ কাজ? তাদের নামে মামলা কেন হলো না! তারা কেন গ্রেফতার হলোনা! গ্রেফতারের পর তাদের রিমান্ড হলো কেন! তারা কেন এখন কারাগারে নেই! মনে হয় সরকারি দলের ক্যাডারদের প্রকাশ্যে সহিংস সন্ত্রাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে । সেকারণে তারা আইনের উর্ধ্বে। সেজন্যেই প্রধানমন্ত্রী নিজ দলীয় ক্যাডারদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন অথচ আহত কোমলমতি শিক্ষার্থী ও আহত সাংবাদিকদের না দেখতে গিয়ে অবজ্ঞা করেছেন। তবে এ অনাচারগুলোর উত্তর একদিন ক্ষমতাসীনদের দিতেই হবে। জবাবদিহীতার দিন ঘনিয়ে আসছে। ঈশান কোনে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে, যে কোন মুহুর্তে কালবৈশাখির মত্ত ঝাপ্টায় বিনা ভোটের সরকার হুড়মুড় করে পড়ে যাবে।
 
তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি দাবি করেন। মুক্তি দাবি করেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন  ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে আটককৃত সকল শিক্ষার্থীদের। ড. শহিদুল আলমসহ সকল শিল্পী কুশলিদের। 
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, প্রফেসর ড. মামুন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, মুনির হোসেন প্রমুখ।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ