পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুক্তিযোদ্ধা চাকুরীর বয়স সংক্রান্ত রিট মামলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত ৩০ শতাংশ কোটা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে যদি কোটা পূরণ করা না হয়। তবে সংশ্লিষ্ট পদ শূন্য রাখতে হবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে এমন সব মতামত দেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে কোটা রাখা বা সংরক্ষণ করাটা সরকারের পলিসির মধ্যে পড়ে উল্লেখ করে সরকারি চাকুরীতের চলমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার চেয়ে করা রিট মামলা খারিজ করে দেন উচ্চ আদালত।
এদিকে আইনজ্ঞনা জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা চাকুরীর বয়স সংক্রান্ত রিট মামলায় রায়ের শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণে কিছু মতামত দিয়েছেন। ওইসব পর্যবেক্ষণ মানা না মানা কিছু নাই। এটা সরকারের পলেসি মাত্র। রায়ে কোটা রাখার বা বাতিলের বিষয়ে আদালত কিছু বলেননি। কোটা রাখা বা না রাখার বিষয়ে সাংবিধানিক কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তাই সরকার যদি কোটা সংস্কার বা বাতিল ঘোষণা করে, তবে তা আদালতের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখার বাধ্যবাধকতা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে মতামত চেয়েছেন এ সংক্রান্ত কমিটি। চলতি সপ্তাহের মতামত দিতে পারেন বলে অ্যার্টনি জেনারেল অফিস সূত্রে জানা যায়। কোটার বিষয় নিয়ে কোন চিঠি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র (স্পেশাল অফিসার) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, এ সংক্রান্ত কোন চিঠি রেজিস্ট্রার অফিস এখনও পায়নি। পেলে যথাযথভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। গতকাল অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আমি দুই তিন দিন আগে চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আমার মতামত চাওয়া হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে আমার মতামত দেব।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য বর্তমানে থাকা ৩০ শতাংশ কোটার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চাইবে সরকার। মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এ সংক্রান্ত কমিটি পুরোপুরি বুঝতে না পারার কারণেই এ বিষয়ে আদালতের মতামত চাওয়া হবে। যদি কোর্ট এটাকেও বাদ দিয়ে দেয় তাহলে কোটা থাকবে না। আর কোর্ট যদি বলে ওই অংশটুকু সংরক্ষিত রাখতে হবে, তাহলে ওই অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি সব উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। অর্থাৎ আদালত যে মতামত দেয় সেটাই প্রাধান্য পাবে। গত ১২ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, সরকারি চাকরিতে মেধাকে প্র্ধাান্য দিয়ে কোটা প্রথা যতটা সম্ভব তুলে দেয়ার সুপারিশ করছে এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটি। তবে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার ব্যাপারে আদালতের রায় থাকায় এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইবে সরকার।
গত ৫ মার্চ কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এক শিক্ষার্থী এ রিটটি দায়ের করেছিলেন। কিন্তু রিটকারীরা সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্থ না হওয়ায় তাদের রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করেন দেন বলে আদালত তার আদেশে উল্লেখ করেন। আদালত আরও বলেন, কোটা রাখা বা সংরক্ষণ করাটা সরকারের পলিসির মধ্যে পড়ে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের রায় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৯ সালে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করার আদেশ জারি করে। এরপর ২০১১ সালে সাধারণ চাকরিজীবীদের চাকরির মেয়াদও দুই বছর বাড়িয়ে সমতা আনা হয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টির অসম্মতি জানিয়ে অবসরের বয়স বাড়াতে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিজীবীদের পক্ষে বিসিএস খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ জামাল উদ্দিন সিকদার ওই রিট করেন। শুনানি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের অবসরের বয়স সাধারণ কর্মকর্তাদের চেয়ে একবছর বাড়িয়ে ৬০ বছর নির্ধারণের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত ৩০ শতাংশ কোটা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে যদি কোটা পূরণ করা না হয় তবে সংশ্লিষ্ট পদ শূন্য রাখতে হবে। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করলে হাইকোর্টের আদেশের বেশ কিছু অংশ বাদ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আপিল বেঞ্চ। রায়ে কোটা সংক্রান্ত হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ থেকে কোনও ক্ষেত্রে যদি কোটা পূরণ করা না হয় তবে সংশ্লিষ্ট পদ শূন্য রাখতে হবে অংশটি বাদ দেয়া হয়। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরোধিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও পরিবহন সুবিধা দিতে বলা হাইকোর্টের অংশটিও বাদ দেন আপিল আদালত। তবে রায়টি এখনও বাস্তবায়িত না হওয়ায় ২০১৩ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সিনিয়র সচিবসহ আট জন সরকারি কর্মকর্তার নামে আদালত অবমাননার মামলা করা হয় বলে জানান রিটকারী জামাল উদ্দিন সিকদার। তিনি বলেন, আদালত অবমাননার মামলাটি এখনও হাইকোর্টে বিচারাধীন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কোটা নিয়ে আদালত রায়ে তেমন কিছুই বলেনি। মুক্তিযোদ্ধা চাকুরীর বয়স সংক্রান্ত রিট মামলায় রায়ের শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণে কিছু মতামত দিয়েছেন। ওইসব পর্যবেক্ষণ মানা না মানা কিছু নাই। এটা সরকারের পলেসি মাত্র। যদিও সরকার বলছেন রায় আছে। রায়ে কোটা রাখার বা বাতিলের বিষয়ে আদালত কিছু বলেননি। এছাড়া কোটা রাখা বা না রাখার বিষয়ে সাংবিধানিক কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তাই সরকার যদি কোটা সংস্কার বা বাতিল ঘোষণা করে, তবে তা আদালতের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। তারপরও যদি কেউ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হন, তবে আদালতের আশ্রয় নিতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে রিটকারী আইনজীবী এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা প্রসঙ্গে কিছু পর্যবেক্ষণ এসেছে। কিন্তু সেসব পর্যবেক্ষণ মানার ক্ষেত্রে সরকারের ওপর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। পর্যবেক্ষণ হলো একটি রায়ের অংশমাত্র। এটি কোনও আদেশ নয়। তিনি আরো বলেন, হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছি। আপিলের নথি-পত্রের সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাবিদ ও ভারতে কোটা সংস্কারের বিষয়টিও আপিল আদালতে জমা দিয়েছি। সে আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।