Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সত্যালোকের সন্ধানে - মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মি’রাজ

প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ আবদুল মতিন বিন হাফিজ
‘মি’রাজা’ শব্দটি আরবী। অর্থ সিঁড়ি, ঊর্ধ্বগমন, আরোহণ। আইন, বা, জীম, ধাতু হতে শব্দটির উৎপত্তি। বহুবচনে মায়ারীজ। ইসলামী পরিভাষায় হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর মক্কা হতে বাইতুল মাকদাসে (জেরুজালেম) উপনীত হওয়া এবং সেখান হতে সপ্তাকাশ ভ্রমণ করে আল্লাহর সান্নিধ্যে উপস্থিত হওয়ার ঘটনাকে মিরাজ বলে। কারণ হাদীস শরীফে এই ঘটনার জন্য (ফাউরিজা বী ইলা ছামায়িদ দুন্্ইয়া) অতঃপর আমাকে নিয়ে নিকটতম আকাশের দিকে উঠলেন উল্লিখিত হয়েছে।
মি’রাজ কবে কখন ও কতবার হয়েছে এতে বিদ্যান ব্যক্তিদের মতানৈক্য পরিদৃষ্ট হয়। তবে নির্ভরযোগ্য হাদীসের বর্ণনা মোতাবেক ইহা একবারই সংঘটিত হয়েছিল। এটাই অধিকাংশ মুহাদ্দিস ও ফকীহদের ওমত। মি’রাজ সম্পর্কিত হাদীসগুলোর বর্ণনায় খুটিনাটি বিষয়ে বিরোধ পরিলক্ষিত হওয়ায় একাধিককার মি’রাজ হওয়ার মতটি প্রকাশ পায়। মি’রাজের সম তারিখ নির্ধারণের ব্যাপারেও যথেষ্ট মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়। তবে মি’রাজ যে নবুওত প্রাপ্তির পর হিজরতের পূর্বে মক্কায় হয়েছিল এতে কোনো দ্বিমত নেই। হিজরতের এক বছর পূর্বে মতান্তরে ১৬ অথবা ১৭ মাস পূর্বে ইহা সংঘটিত হওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়। একটি বর্ণনায় ১৮ মাস পূর্বের কথা উল্লেখ আছে। মাস ও তারিখ সম্বন্ধেও বিভিন্ন মত আছে। ১৭ই রবিউল আউয়াল অথবা ১৭ই রমযান অথবা ২৭শে রজব তারিখে ইহা সংঘটিত হয়েছিল। শেষক্ত মতটি বর্তমানে সকলের নিকট গৃহীত। আর্থাৎ ২৭ রজবের রাত্রিই লায়লাতুল্্ মি’রাজ। আল কুরআনে মি’রাজের বর্ণনার উল্লেখ রয়েছে (ক) সূরা বাণী ই¯্রাঈলের ১নং আয়াতে এবং (খ) সূরা নাজম-এর ১নং আয়াত হতে ১৮নং আয়াতে। এবার আসুন, মি’রাজের বিশদ বিবরণের প্রতি লক্ষ্য করা যাক।
মি’রাজ বা ঊর্ধ্বগমন
নবী করিম (সা.)-এর ঊর্ধ্বজগতের মো’জেয়া সমূহের মধ্যে মি’রাজ গমন একটি বিস্ময়কর মো’জেযা। এজন্যই মি’রাজের আয়াতের শুরুতেই আল্লাহ পাক ‘সোব্্হানাল্লাহ্্’ শব্দটি ব্যবহার করেছেনÑ যা কেবল আশ্চর্যজনক ঘটনার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সশরীরের মি’রাজ গমনের প্রমাণ স্বরূপ কোরআনের ‘বিআবদিহী’ শব্দটি তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, ‘আবদুন’ শব্দটি দ্বারা রূহ ও দেহের সমষ্টিকে বুঝান হয়েছে। তদুপরি-বোরাক প্রেরণ ও বোরাক কর্তৃক নবী করিম (সা.)কে বহন করে নিয়ে যাওয়ার মধ্যেও সশরীরের মি’রাজ গমনের প্রমাণ পাওয়া যায়। সর্বোপরি-স্বপ্নে বা রুহানীভাবে মি’রাজের দাবী করা হলে কোরাইশদের মধ্যে এত হৈ চৈ হতো না। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সকল ইমামগণই সশরীরের মি’রাজ গমনের কথা স্বীকার করেছেন।
মি’রাজের ঘটনাটি নবীজীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, এর সাথে গতির সম্পর্ক এবং সময় ও স্থানের সঙ্কোচনের তত্ত্ব জড়িত রয়েছে। সূর্র্যের আলোর গতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল। পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌঁছতে লাগে আট মিনিট বিশ সেকেন্ড। এ হিসেবে পৃথিবী হতে সূর্যের দূরত্ব- নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল। অথচ নবী করিম (সা.) মুহূর্তের মধ্যে চন্দ্র, সূর্য, সিদ্্রাতুল মোন্তাহা, আরশ-কুরছি ভ্রমণ করে লা-মকানে আল্লাহর দীদার লাভ করে নব্বই হাজার কালাম করে পুনরায় মক্কা শরীফে ফিরে আসেন। এসে দেখেন, বিছানা এখনও গরম রয়েছে। এর চেয়ে আশ্চর্য আর কি হতে পারে? নবী করিম (সা.)-এর নূরের গতি কত ছিল- এ থেকেই অনুমান করা যায়। কেননা, তিনি ছিলেন নূর। যাওয়ার সময় বোরাক ছিল-কিন্তু ফেরার সময় বোরাক ছিল না (রুহুল বয়ান)।
মি’রাজের মধ্যে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-অন্যান্য নবীগণের সমস্ত মো’জেযা নবী করিম (সা.)-এর মধ্যে একত্রিত হয়েছিল। হযরত মুসা (আ.) তূর পর্বতে আল্লাহর সাথে কালাম করেছেন। হযরত ঈছা (আ.) সশরীরে আকাশে অবস্থান করছেন এবং হযরত ইদ্রিছ (আ.) সশরীরের বেহেস্তে অবস্থান করছেন। তাদের চেয়েও উন্নত মাকামে ও উচ্চমর্যাদায় আল্লাহ পাক নবী করিম (সা.)কে নিয়ে সবার উপরে তাঁকে মর্যাদা প্রদান করেছেন। মুসা (আ.) নিজে গিয়েছিলেন তূর পর্বতে। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী (সা.)কে আল্লাহ্তায়ালা দাওয়াত করে বোরাকে চড়িয়ে ফেরেস্তাদের মিছিলসহকারে প্রথমে বায়তুল মোকাদ্দাছে নিয়ে ছিলেন। সেখানে সব নবীগণকে সশরীরের উপস্থিত করে হুযুর করিম (সা.)-এর মোক্তাদী বানিয়ে ছিলেন। সেদিনই সমস্ত নবীগণের ইমাম হয়ে নবী করিম (সা.) ‘নবীগণেরও নবী রূপে বাস্তবে প্রমাণিত হয়ে ছিলেন। সমস্ত নবীগণ অষ্ট অঙ্গ (দুই হাত, দুই পা, দুই হাঁটু, নাক ও কপাল) দিয়ে সশরীরে নামায আদায় করে ছিলেন সেদিন। সমস্ত নবীগণ যে সশরীরে জীবিত, তারই বাস্তব প্রমাণ মিলেছিল মি’রাজের রাত্রে। সমস্ত নবীগণ আপন আপন রওযায় জীবিত আছেন (হাদীস)।
মি’রাজের রাত্রে নবী করিম (সা.)কে প্রথম সম্বর্ধনা দেয়া হয়ে ছিল জিব্রাইল, মিকাইল ও ই¯্রাফিল ফেরেস্তাসহ তাঁদের অধীনে সত্তর হাজার ফেরেস্তা দ্বারা। দ্বিতীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল বাইতুল মোকাদ্দছে নবীগণের (আ.) দ্বারা। তৃতীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল আকাশের ফেরেস্তা, হুর ও নবীগণের দ্বারা এবং চতুর্থ ও শেষ সম্বর্ধনা দিয়েছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। সিদ্রাতুল মোন্তাহা এবং আরশ মোয়াল্লা অতিক্রম করার পর স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা একশত বার সম্বর্ধনামূলক বাক্য ‘হে প্রিয় বন্ধু মোহাম্মদ, আপনি আমার অতি নিকেট আসুন’- একথা বলে নবী করিম (সা.) কে সম্মানীত করেছিলেন। কোরআন মজিদের দানা আয়াতটি এদিকেই ইঙ্গিতবহ-বলে ‘তাফসীরে মুগ্নী’ ও ‘মিরছাদুল ইবাদ’ নামক গ্রন্থদ্বয়ের বরাত দিয়ে ‘রিয়াজুন্নাছেহীন’ কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত কিতাবখানা সাতশ বৎসর পূর্বে ফারসি ভাষায় লিখিত।
মি’রাজের ঘটনা ঘটেছিল নবুয়্যত প্রকাশের ১১ বৎসর ৫ মাস ১৫ দিনের মাথায়। অর্থাৎ প্রকাশ্য নবুয়্যতের ২৩ বৎসরের দায়িত্ব পালনের মাঝামাঝি সময়ে। সে সময় হুযুর (সা.)-এর বয়স হয়েছিল ৫১ বৎসর ৫ মাস ১৫ দিন। সন ছিল নবুয়্যতের দ্বাদশ সাল। তিনটি পর্যায়ে মি’রাজকে ভাগ করা হয়েছে। মক্কা শরীফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাছ পর্যন্ত মি’রাজের অংশকে বলা হয় ইস্্রা বা রাত্রি ভ্রমণ। বায়তুল মোকাদ্দাছ থেকে সিদরাতুল মোন্তাহা পর্যন্ত অংশকে বলা হয় মি’রাজ। সিদ্্রাতুল মোন্তাহা থেকে আরশ ও লা-মকান পর্যন্ত অংশকে বলা হয় ই’রাজ। কিন্তু সাধারণভাবে পূর্ণ ভ্রমণকেই এক নামে মি’রাজ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। কোরআন, হাদীসে মোতাওয়াতির এবং খবরে ওয়াহেদ দ্বারা যথাক্রমে এই তিনটি পর্যায়ের মি’রাজ প্রমাণিত।
মি’রাজের প্রথম পর্যায় :
রজব চাঁদের ২৭ তারিখ সোমবার পূর্ব রাত্রের শেষাংশে নবী করিম (সা.) বায়তুল্লায় অবস্থিত বিবি উম্মেহানী (রা.)-এর ঘরে অবস্থান করছিলেন। বিবি উম্মেহানী (রা.) ছিলেন আবু তালেবের কন্যা এবং নবী করিম (সা.)-এর দুধবোন। উক্ত গৃহটি ছিল বর্তমান হেরেম শরীফের ভিতরে পশ্চিম দিকে। হযরত জিব্রাইল (আ.) ঘরের ছাদ দিয়ে প্রবেশ করে নূরের পাখা দিয়ে, অন্য রেওয়ায়াত মোতাবেক-গ-দেশ দিয়ে নবী করিম (সা.)-এর কদম মোবারকের তালুতে স্পর্শ করতেই হুযুরের তন্দ্রা টুটে যায়। জিব্রাইল (আ.) আল্লাহর পক্ষ হতে দাওয়াত জানালেন এবং নবীজীকে যমযমের কাছে নিয়ে গেলেন। সিনা মোবারক বিদীর্ণ করে যমযমের পানি দিয়ে ধৌত করে নূর এবং হেকমত দিয়ে পরিপূর্ণ করলেন। এভাবে মহাশূন্যে ভ্রমণের প্রস্তুতিপর্ব শেষ করলেন।
নিকটেই বোরাক দ-ায়মান ছিল। বোরাকের আকৃতি ছিল অদ্ভুত ধরনের। গাধার চেয়ে উঁচু, খচ্চরের চেয়ে নীচু, মুখম-ল মানুষের চেহারাসদৃশ, পা উটের পায়ের মত এবং পিঠের কেশর ঘোড়ার মত (রুহুল বয়ান-সূরা ইস্রা)। মূলত বোরাক ছিল বেহেস্তী বাহন-যার গতি ছিল দৃষ্টি সীমান্তে মাত্র এক কদম। নবী করিম (সা.) বোরাকে সওয়ার হওয়ার চেষ্টা করতেই বোরাক নড়াচড়া শুরু করলো। জিব্রাইল (আ.) বললেন- “তোমার পিঠে সৃষ্টির সেরা মহামানব সওয়ার হচ্ছেন- সুতরাং তুমি স্থির হয়ে যাও”। বোরাক বললো, কাল হাশরের দিনে নবী করিম (সা.) আমার জন্য আল্লাহর দরবারে সাক্ষাৎ করবেন বলে ওয়াদা করলে আমি স্থির হবো। নবী করিম (সা.) ওয়াদা করলেন। বোরাক স্থির হলো। তিনি বোরাকে সওয়ার হলেন। জিব্রাইল (আ.) সামনে লাগাম ধরে, মিকাইল (আ.) রিকাব ধরে এবং ই¯্রাফিল (আ.) পিছনে পিছনে অগ্রসর হলেন। পিছনে সত্তর হাজার ফেরেস্তার মিছিল। এ যেন দুল্্হার সাথে বরযাত্রী। প্রকৃতপক্ষে নবী করিম (সা.) ছিলেন আরশের দুলহা (তাফসীরে রুহুল বয়ান)।
মক্কা শরীফ থেকে রওনা দিয়ে পথিমধ্যে মদীনার রওযা মোবারকের স্থানে গিয়ে বোরাক থামলো। জিব্রাইলের ইশারায় তথায় তিনি দু’রাকাত নামায আদায় করলেন। এভাবে ঈশা আলাইহিস সালামের জন্মস্থান বাইতুল লাহাম এবং মাদইয়ান নামক স্থানে হযরত শুয়াইব (আ.)-এর গৃহের কাছে বোরাক থেকে নেমে নবী করিম (সা.) দু’রাকাত করে নামায আদায় করলেন। এজন্যই বরকতময় স্থানে নামায আদায় করা ছুন্নত! এই শিক্ষাই এখানে রয়েছে। নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন, আমি বোরাক থেকে দেখতে পেলাম-হযরত মুসা (আ.) তাঁর মাযারে (জর্দানে) দাঁড়িয়ে নামায পড়ছেন।
অতঃপর জিব্রাইল (আ.) বায়তুল মোকাদ্দাছ মসজিদের সামনে বোরাক থামালেন। সমস্ত নবীগণ পূর্ব হতেই সেখানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। জিব্রাইল (আ.) বোরাককে রশি দিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাছের ছাখ্রা নামক পবিত্র পাথরের সাথে বাঁধলেন এবং আযান দিলেন। সমস্ত নবীগণ (আ.) নামাযের জন্য দাঁড়ালেন। হযরত জিব্রাইল (আ.) নবী করিম (সা.)কে মোসল্লাতে দাঁড় করিয়ে ইমামতি করার জন্য অনুরোধ করলেন! হুযুর (সা.) সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরাম ও সত্তর হাজার ফেরেস্তাকে নিয়ে দু’রাকাত নামায আদায় করলেন।
তখনও কিন্তু নামায ফরয হয়নি। প্রশ্ন জাগে-নামাযের আদেশ নাযিল হওয়ার পূর্বে হুযুর (সা:) কিভাবে ইমামতি করলেন? বুঝা গেল- তিনি নামাযের নিয়মকানুন পূর্বেই জানতেন। নামাযের তা’লীম তিনি পূর্বেই পেয়েছিলেন-তানযীল বা নাযিল হয়েছে পরে। আজকে প্রমাণিত হলো- নবী করিম (সা.) হলেন ইমামুল মোরছালীন ও নবীউল আম্বিয়া (আ.)। নামায শেষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সভায় নবীগণ নিজেদের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য পেশ করলেন। সর্বশেষ সভাপতি (মীর মজলিস) হিসাবে ভাষণ রাখলেন নবী করিম (সা.)। তাঁর ভাষণে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করে তিনি বললেন- “আল্লাহ পাক আমাকে আদম সন্তানগণের মধ্যে সর্দার, আখেরী নবী ও রাহমাতুল্লিল আলামীন বানিয়ে প্রেরণ করেছেন”।
এখানে একটি আক্বিদার প্রশ্ন জড়িত আছে। তা হলো-আম্বিয়ায়ে কেরামগণের মধ্যে চারজন ব্যতীত আর সকলেই ইতিপূর্বে ইন্তিকাল করেছেন এবং তাঁদের রওযা মোবারকও বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত। যে চারজন নবী জীবিত, তাঁরা হচ্ছেন- হযরত ইদ্রিছ (আ.) বেহেশতে, হযরত ইছা (আ.) আকাশে, হযরত খিযির (আ.) জলভাগের দায়িত্বে এবং হযরত ইলিয়াছ (আ.) স্থলভাগের দায়িত্বে। জীবিত ও ইন্তিকালপ্রাপ্ত সকল আম্বিয়ায়ে কেরাম (আ.) বিভিন্ন স্থান থেকে মুহূর্তের মধ্যে কিভাবে সশরীরে বায়তুল মোকাদ্দাছে উপস্থিত হলেন? তাফসীরে রুহুল বয়ানে এ প্রশ্নের উত্তর এভাবে দেয়া হয়েছে- “জীবিত চারজন নবীকে আল্লাহ তায়ালা সশরীরে এবং ইন্তিকালপ্রাপ্ত আম্বিয়ায়ে কেরামগণকে মেছালী শরীরে বায়তুল মোকাদ্দাছে উপস্থিত করেছিলেন।” কিন্তু অন্যান্য গ্রন্থে সশরীরের উপস্থিতির কথা উল্লেখ আছে। কেননা, নবীগণ অষ্ট অঙ্গ দ্বারা সিজদা করেছিলেন। নবীগণ ও অলীগণ মেছালী শরীর ধারণ করে মুহূর্তের মধ্যে আসমান জমিন ভ্রমণ করতে পারেন এবং জীবিত লোকদের মতই সব কিছু শুনতে ও দেখতে পারেন (মিরকাত ও তাইছির গ্রন্থ)। আধুনিক থিউসোফীতেও (আধ্যত্মবাদ) একথা স্বীকৃত। ফিজিক্যাল বডি, ইথিক্যাল বডি, কস্যাল বডি, এস্্ট্রাল বডি-ইত্যাদি রূপ ধারণ করা একই দেহের পক্ষে সম্ভব এবং বাস্তব বলেও আধুনিক থিউসোফীর বিজ্ঞানীগণ স্বীকার করেছেন। আমরা মুসলমান। আল্লাহর কুদরত ও প্রদত্ত ক্ষমতার উপর আমাদের ঈমান নির্ভরশীল। এ বিষয়ে কবি গোলাম মোস্তফার বিশ্বনবী বইখানায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। (চলবে)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সত্যালোকের সন্ধানে - মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মি’রাজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ