পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এক বছরেও শেষ হয়নি রাজধানীর পান্থপথের ওলিও হোটেলে বিস্ফোরণ মামলার তদন্ত। ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের কাছে পান্থপথের ওই হোটেলে আশ্রয় নিয়ে জঙ্গিরা ১৫ অগাস্টের কর্মসূচিতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে পুলিশের দাবি। গত বছর ১৪ অগাস্ট রাত থেকে অভিযানের মধ্যে ওলিও হোটেল ঘেরাও করেছিল পুলিশ।
এক পর্যায়ে সকালে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক জঙ্গি আত্মঘাতী হন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়। নিহত হন জঙ্গী সাইফুল ইসলাম। হোটেল ওলিওতে হামলার জন্য জঙ্গিরা সক্রিয় ছিল ডার্কওয়েবে। হামলার নির্দেশনা আসে জঙ্গিদের নিজস্ব চ্যানেলে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে সেই বোমা বিস্ফোরণের। কিন্তু তার আগেই পুলিশের অভিযানে হোটেল কক্ষেই সেই বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মারা যায় সে। পরদিন রাজধানীর কলাবাগান থানার এসআই সৈয়দ ইমরুল সাহেদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করেন। গত এক বছর তদন্ডে এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের প্রত্যেক আসামিকেই রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজু আহমেদ এখন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা। খবর সংশ্লিস্ট্র সূত্রের।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ হামলার সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে যারা জড়িত ছিল এবং প্রধান পরিকল্পনাকারীসহ তাদের প্রায় সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দশ জন ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এখন এ মামলার অভিযোগপত্র তৈরির কাজ করছেন। শিগগিরই আদালতে জমা দিয়ে দেবেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গত ১৪ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, এ মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ৩২ নম্বরে হামলা করে আন্তর্জাতিকভাবে নিজেদের ফোকাস করা। আমরা তা নস্যাৎ করতে পেরেছি। দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচার শেষে সর্বোচ্চ সাজা হবে এ প্রত্যাশা করছি।
ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্র জানায়, নব্য জেএমবির সর্বশেষ আমির আকরাম হোসেন নিলয় ছিল এ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। তার পরিকল্পনায় সাইফুল ইসলাম নামে এক আত্মঘাতী জঙ্গি সদস্য হোটেল ওলিতে অবস্থান করে হামলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। সাইফুলের পরিকল্পনা ছিল যেকোনও উপায়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের কাছাকাছি গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো। ঘটনার একদিন আগে মামুন নামে এক জঙ্গি সদস্য উত্তরার আব্দুল্লাহপুর এলাকায় বোমাসহ একটি ব্যাগ সাইফুলের কাছে পৌঁছে দেয়। ওই বোমা নিয়ে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে অবস্থান করে সাইফুল। কিন্তু পুলিশের অভিযানের কারণে নিজের বোমা নিজেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয় সে। ২১ মার্চ বগুড়ায় থেকে নিলয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরো জানান, নিলয়ের পুরো পরিকল্পনার বিষয়টি তার বাবা, মা ও বোন সবাই জানতো। নিলয় ভারতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তার নির্দেশনায় তার বাবা আবু তোরাব, মা সাদিয়া হোসনা লাকি ও বোন তাজরীন খানম শুভ্র হামলার জন্য অর্থ সরবরাহসহ অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। নিলয়ের জঙ্গিবাদী কাজে মদদ দেওয়া, অর্থের জোগান দেওয়া এবং শোক দিবসে হামলার পরিকল্পনার কথা জেনেও পুলিশকে না জানানোর অভিযোগে গত বছরের ১১ নভেম্বর গুলশান এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া, অর্থ সরবরাহকারী হিসেবে নিলয়ের বন্ধু তানভির ইয়াসিন করিমকে গত বছরের ২০ নভেম্বর ও তার স্ত্রী হুমায়ারা ওরফে নাবিলাকে এই বছরের ৫ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়। তানভীর নব্য জেএমবিকে নতুন করে সংগঠিত করতে নিলয়কে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিল বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ঢাকার মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ আগস্ট হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমার দিন ধার্য রয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার দিন ধার্য হলেও প্রতিবেদন না পেয়ে তা পিছিয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।