Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোটা তুলে দেয়ার সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সরকারি চাকরির কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার, বাতিল ও পর্যালোচনায় গঠিত সরকারি কমিটি। প্রাথমিক সুপারিশ হলো কোটা প্রায় পুরোটাই উঠিয়ে দেওয়া। এর পাশাপাশি মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ারও সুপারিশ এসেছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য বর্তমানে থাকা ৩০ শতাংশ কোটার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চাওয়া হবে।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর কোটা পর্যালোচনায় গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির নেতৃত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের সামনে কোটার কমিটির কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।শফিউল আলম বলেছেন, কোটা একেবারেই তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসার কথা। আমরা পর্যেবক্ষণ করে দেখেছি, এখন আর কেউ পিছিয়ে পড়া নেই। সবাই এগিয়ে গেছে। কাজেই আমরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোনও কোটা রাখার জন্য সুপারিশ করিনি।
কমিটির সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তারা। আমরা মাসখানেক কাজ করলাম, (সুপারিশ) প্রায় চূড়ান্ত। আমাদের কমিটির মোটামুটি সুপারিশ হল কোটা অলমোস্ট উঠিয়ে দেয়া, মেধাকে প্রাধান্য দেওয়া। তবে সুপ্রিম কোর্টের একটা রায় আছে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা প্রতিপালন ও সংরক্ষণ করতে হবে এবং যদি খালি থাকে খালি রাখতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত- যতদূর সম্ভব কোটা বাদ দিয়ে মেরিটি চলে যাওয়া। সময় এসেছে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় যাব, এটা কমিটির প্রাথমিক অগ্রগতি। মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ পুরোপুরি বুঝতে না পারায় এ বিষয়ে আদালতের মতামত চাওয়া হবে।
শফিউল আলম বলেন, সরকার কোর্টের কাছে মতামত চাইবে যদি কোর্ট এটাকেও ইয়ে করে দেয় তাহলে কোটা থাকবে না। আর কোর্ট যদি বলে ওই অংশটুকু সংরক্ষিত রাখতে হবে, তাহলে ওই অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি সবটা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সামনে আসবে কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, তাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন, তারাও (পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) অনেক অগ্রসর হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নয়, পর্যবেক্ষণ রয়েছে- এমনটা জানানো পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোর্টের পর্যালোচনাও নির্বাহী বিভাগের জন্য বাইন্ডিং হয়ে যায়। কোটা তুলে দিলে অনগ্রসরদের কী হবে- এমন প্রশ্নে শফিউল বলেন, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখিছি উনারা অগ্রসর হয়ে গেছেন।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত, এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ। কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, যা ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না। তবে পরে সংসদে তিনি বলেন, কোটা পদ্ধতি থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখতে হাই কোর্টের রায় আছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গত ২ জুন একটি কমিটি করে সরকার। ওই কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), অর্থ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবদের কমিটির সদস্য করা হয়।
কোটা পর্যালোচনা কমিটি গত ৮ জুলাই তাদের প্রথম সভা করে কর্মপন্থা নির্ধারণের পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুতে কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও গত ১৯ জুলাই এই কমিটির মেয়াদ আরও ৯০ কার্যদিবস বাড়ানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা

২৩ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ