Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেসবুকে ভাইরাল কুমিল্লায় গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

চান্দিনা (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

 সামাজিক বিচারের নামে চার সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রী আসমা আক্তারকে সালিশের নামে প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। গতকাল শনিবার কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এ ঘটনা ঘটে। স্বামীর ভাইদের যোগসাজশে এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতে শত শত লোকের সামনে সালিশ বৈঠকে ওই নারীকে পিটিয়ে পুরো শরীর থেতলে দেয়া হয়। পরবর্তীতে এ দৃশ্য ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হলে তা ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় আসমার বোন নারগিস আক্তার বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দু’জনকে আটক করে। এ দিকে এই ঘটনায় দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে একটি তদন্ত টিম ঘটনা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের বেকিসাত গ্রামের সামছু ব্যাপারীর পুত্র প্রবাসী কবির হোসেনের স্ত্রী আসমা আক্তার ৪ সস্তানের জননী। গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে ‘পরকিয়ায় জড়িত’ অভিযোগে পার্শ্ববর্তী বারপাড়া গ্রামের আলম নামে এক ব্যক্তিকে ডেকে এনে জোর করে আসমার ঘরে আটকে রাখা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আটক দু’জনের ওপর রাতভর দফায় দফায় নির্যাতন চালিয়েছেন প্রবাসী কবিরের ভাই সাইফুল, বাবুল, মিন্টু, মোস্তাক ও অপর এক ভাই খোকনের স্ত্রী শিল্পী। পরদিন সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন তালুকদারের উপস্থিতিতে সামাজিক বিচারের আয়োজন করা হয়। এ সময় সালিশি বৈঠক চলাকালে প্রতিবেশি মিন্টু মাতব্বরদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাঠি নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় আসমার উপর নির্যাতন চালায়। এছাড়াও বেধড়ক পেটানো হয় আটক আলমকেও। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈঠকে উপস্থিত বারপাড়া উনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন তালুকদার বলেন, বিষয়টা তাদের পারিবারিক ষড়যন্ত্রের অংশ। কবিরের চার ভাই ও এক ভাবি মিলে এ কাÐটি ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। মনির তালুকদার বলেন, সকালে বৈঠক শুরুর পর হঠাৎ করেই কবিরের এক ভাই এসে আসমাকে মারধরের নির্দেশ দিতে থাকে। পরে আমার ইউনিয়নের তিনজন সদস্য ও আশপাশের লোকজন মিলে আহত দু’জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠনো হয় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করি।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনার প্রধান আসামি সাইফুলসহ অপর আসামি বাবুলকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব আলম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নে গ্রাম্য শালিসের নামে মধ্যযুগীয় কায়দায় এক নারীকে প্রকাশ্যে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের এর কাছে কৈফিয়ত তলব করা হলে জবাবে কৈফিয়ত অসন্তোষজনক মনে হয়েছে। সঠিক তথ্যের জন্য উপজেলা মাধ্যামিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ