Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কমেছে

রাজশাহী অঞ্চলে কোরবানী পশুর বাজার চড়া

রেজাউল করিম রাজু : | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

কোরবানী ঈদ দুয়ারে কড়া নাড়ছে। শুরু হয়েছে কোরবানীর পশু নিয়ে হিসেব নিকেশ। তৎপর গরু ব্যবসায়ী হাটের ইজারাদাররা। মাসের বেতন হাতে পেয়ে কোরবানীদাতারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। বেশীরভাগ কোরবানীদাতার আগ্রহ দেশী গরুর প্রতি হলেও এবার এক্ষেত্রে রাজশাহীতে সুখবর নেই। নির্ভর করতে হবে ভারত থেকে চোরাপথে আসা গরুর উপর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় গতবার একেবারে শেষ মুহুর্তে বানের পানির মত ভারতীয় গরু আসায় কাঙ্খিত দাম পায়নি স্থানীয় খামারী আর বাড়িতে লালন পালনকারীরা। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে লোকসান গুনতে হয়েছে। রাজশাহী প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় কোরবানীর চাহিদা রয়েছে তিনলাখ দশ হাজার পশুর। জেলার নয় উপজেলায় ছোট বড় মিলে সতের হাজার সাতশটি খামার রয়েছে। আর এসব খামারে মজুদ আছে একলাখ পচিশ হাজার পাঁচশো কোরবানীযোগ্য পশু। যার মধ্যে রয়েছে আঠারো হাজার সাতশো বারোটি ষাড়। তিন হাজার সাতশো ত্রিশটি বলদ, ছয় হাজার আটশো চৌত্রিশ গাভী, দুই হাজার ছয়শো চারটি মহিষ, ছাগল রয়েছে পচাশী হাজার তিনশো সতের, ভেড়া সাত হাজার সাতশো আশি, অন্য পাঁচশো তেত্রিশটি পশু মজুদ রয়েছে। ফলে কোরবানীতে চাহিদার চেয়ে দু’লাখ পশুর ঘাটতি রয়েছে।
অথচ গত বছর চিত্র ছিল ভিন্ন কোরবানীর পশুর চাহিদা মিটিয়ে পঞ্চাশ হাজার বেশী পশু ছিল বেশী। এবার পশুর সংখ্যা কম হবার কারন খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় বিএসএফ গরু আসার পথে বাধার সৃষ্টি করে। গরুর রাখালদের গুলি করে মারে, নির্যাতন চালিয়ে মারে। এমন অবস্থায় গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে গড়ে উঠতে থাকে ছোট বড় গরু ছাগলের খামার। কৃষান বাড়ির আঙ্গিনায় ফিরে আসে পুরানো চিত্র। গ্রামের প্রায় বাড়িতে কোরবানীকে টার্গেট করে পোষা শুরু হয় গরু। অনেকে ঝুঁকে পড়ে গরু মোটা তাজা করনের। প্রাণী সম্পদ দপ্তর গোশতের গরুর জন্য বাহামা জাতের গরুর বীজ সরবরাহ করে। অনেকে ব্যবসা বদলে খামারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কোরবানীদাতাদের আগ্রহ বাড়ে দেশীয় গরুর উপর। তাছাড়া স্বাদের দিক থেকেও ভারতীয় গরুর চেয়ে অনেক ভাল। এমনভাবে ক’বছর যায়। গত বছর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পঞ্চাশ হাজারের বেশী পশু বেশী থাকে। গরু লালন পালনকারীরা যখন কোরবানীতে লাভের আশা দেখতে শুরু করে। তখনি হঠাৎ বিএসএফ কড়াকড়ি তুলে নেয় বানের পানির মত গরু পাঠাতে থাকে। স্থানীয় খামারীরা বিপাকে পড়ে। যেমন পায়নি কাঙ্খিত দাম। তেমনি অনেক পশু অবিক্রিত থাকে। মুখ থুবড়ে পড়ে খামারীদের স্বনির্ভর হবার স্বপ্ন।
রাজশাহী জেলা অতিরিক্ত প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো: আখতার হোসেন বলেন, এবার রাজশাহীতে দু’লাখ পশু সংকট রয়েছে। কারন হিসাবে বলেন গতবার কোরবানীর ঠিক আগদিয়ে বিপুল পরিমান গরু আশায় লোকসানে পড়ে স্থানীয়রা। তাই এবার তারা মুখ ফিরিয়েছে। তাছাড়া গোখাদ্যের দামও বেড়েছে কয়েক গুন। ফলে বেড়ে গেছে লালন পালন খরচ। গতবারের তিক্ত অভিজ্ঞতা অনেককেই বিরুপ করেছে পশু লালন পালনে। রাজশাহী অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুহাট রাজশাহী সিটিহাটে ভারতীয় ও দেশী গরু আসছে। ক্রেতারা আসছেন। স্থানীয় ক্রেতারা শুধুই হাটের বাতাস বুঝতে আসছেন। আর ঢাকা চট্রগ্রাম হতে ব্যপারী এসে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাছে ভারতীয় বোল্ডার আর বড় গরুর চাহিদা বেশী। এছাড়াও বানেশ্বর, কাটাখালী, নওহাটা, মহিশাল বাড়ি, কাঁকনহাট, কেশরহাট, চৌবাড়িয়া হাটে গরু ছাগল আসছে। হাটের ইজারাদাররা জানান, গতবারের চেয়ে এখন পর্যন্ত গতবারের চেয়ে গরুর দাম বেশী। আমদানী হলে শেষের দিকে দাম কিছুটা হলেও কমতে পারে। সব নির্ভর করছে যোগানের উপর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ