Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনিয়মের কারণে সারাদেশে কাল বিক্ষোভ

সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

খুলনা-গাজীপুরের মতো রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনেও প্রহসন ও তামাশার নির্বাচন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে আমাদের কথাই সত্য প্রমানিত হলো- শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু ও অবাধ হতে পারে না। প্রমানিত হলো এই অযোগ্য নির্বাচন কমিশিনের পরিচালনায় কোন নির্বাচনেই জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব নয়। গাজীপুর ও খুলনার মতো এই তিনটি সিটি করপোরেশনে ভোট চুরি বা কারচুপি নয়, ভোট ডাকাতির মহৌৎসব হয়েছে। তিনি এই তামাশা ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেন এবং অবিলম্বে রাজশাহী ও বরিশালে ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানান।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিন সিটিতেই অনিয়মের জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশের সকল জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, এখন বিরোধী দলগুলোর প্রতিপক্ষ কেবল আওয়ামী লীগ নয়, সরকারের প্রশাসন এবং অযোগ্য নির্বাচন কমিশনও এখন প্রতিপক্ষ।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন পুলিশের মতোই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। শুধু নির্বাচনের দিনে নয়, সিডিউল ঘোষণার দিন থেকেই পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড মাঠে নেমেছে। মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, হয়রানী, হুমকি ও ভয় দেখিয়ে বিরোধী দলের কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দুরে রাখা, নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব আইন ভঙ্গ, শত শত অভিযোগে কোনও কর্ণপাত না করে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকে আবারও ধ্বংস করলো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একমাত্র সিলেটে এখন পর্যন্ত ফলাফলটাকে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমাদের প্রার্থী এবং দল একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিল বলেই কিন্তু সব জায়গায় তারা সব কিছু করতে পারেনি। তারপরও সিলেটে কীভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে সবাই দেখেছেন। সিলেটে ১২টি কেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ভোট কাস্ট হওয়ার পরও শতাধিক ভোটার লাইনে দাঁড়িয়েছিল। ব্যালেট পেপার না থাকায় তাদের ফিরে যেতে হয়। এই যে বিষয়গুলো তামাশা। নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা তামাশায় পরিণত করেছে। ভোট ‘ডাকাতি’ না হলে তিন সিটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হতেন বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, বরিশালে নির্বাচনের আগের দিনই আশাপাশের বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা থেকে হাজার হাজার সন্ত্রাসী ও ক্যাডার বাহিনী বরিশালে আনা হয়। তারাই ভোটের দিন নৌকার পক্ষে সিল মেরেছে, কেন্দ্র দখল করেছে, বিরোধী দলের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। বরিশালে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থীর হাতপাখার প্রতীক ব্যালট পেপারে ছিল না। বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনিষা চক্রবর্তীকে শারীরিকভাবে আঘাত করে গুরুতর আহত করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নবজাগরনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নারীদের কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিতে ঢুকেছিলেন একজন পুরুষ। তাদের এসব কর্মকান্ড দেখে বরিশালে আওয়ামী লীগ ছাড়া সব প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেন। বরিশালের নৌকা মার্কার প্রাথী যেহেতু ক্ষমতাশালী পরিবারের সদস্য, সেখানে সরকারের বাহিনীগুলো তার পক্ষে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, রাজশাহীতেও আশপাশের উপজেলাগুলো থেকে হাজার হাজার লোক আনা হয়েছে। সেখানে ২৮ জুলাই মধ্যরাত থেকে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ ছিল। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, বাড়িতে বাড়িতে হানা ও হুমকি বন্ধ হয়নি। পুরুষদের না পেলে মেয়েদের থানায় নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং ধানের শীষের ২৪ জন এজেন্ট নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধানের শীষের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেছেন। ভোটারদেরকে সিল স্বাক্ষরহীন ব্যালট পেপার দেয়া হয়েছে। দুপুর ১২ টার পর ভোটার থাকলেও ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যায়। ভোট দিতে না পেরে মহিলা ভোটাররা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনে তারা জয়ী হতে পারবে না বলেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করে তারা জাতীয় সংসদের নির্বাাচন করতে চায়। ২০১৪ সালের মতোই একতরফা নির্বাচন করার নীল নক্শা করছে। জনগণ তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দিবে না।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবদুল হাই, মেহেদি আহমেদ রুমি, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ