রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মহোৎসব হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনার মতো এই তিনটি সিটি কর্পোরেশনে ভোট চুরি বা কারচুপি নয়, ভোট ডাকাতির মহৌৎসব অনুষ্ঠিত হলো। বিরোধী দলগুলোর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নয়, প্রতিপক্ষ এই অবৈধ সরকারের প্রশাসন এবং অযোগ্য
নির্বাচন কমিশন। এই
নির্বাচন কমিশন পুলিশের মতোই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। শুধু নির্বাচনের দিনে নয়, সিডিউল ঘোষনার দিন থেকেই পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড মাঠে নেমেছে। মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, হয়রানী, হুমকি ও ভয় দেখিয়ে বিরোধী দলের কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দুরে রাখা,
নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব আইন ভঙ্গ, শত শত অভিযোগে কোনও কর্ণপাত না করে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকে আবারও ধ্বংস করলো। অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী ও বরিশালে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন এবং বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ মগ্ঙলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন,
রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই ৩টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের নাটক শেষ হলো। এই নির্বাচনে আমাদের কথাই সত্য প্রমানিত হলো-শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু ও অবাধ হতে পারে না। প্রমানিত হলো এই অযোগ্য নির্বাচন কমিশিনের পরিচালনায় কোন নির্বাচনেই জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব নয়।
তিনি বলেন,
এই নির্বাচন কমিশন গঠনের পর থেকেই আমরা বলে এসেছি-এই কমিশন আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাত দুষ্ট এবং অযোগ্য। তারা আচরণ বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের নির্যাতন বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মানতে পুলিশকে বাধ্য করতে পারেনি।
বরিশালে কয়েকদিন আগে থেকেই বাইরে থেকে হাজার হাজার আওয়ামী কর্মী জড়ো করা হয়েছিল- কেন্দ্রগুলো থেকে
বিএনপি‘র এজেন্টদেরকে বের করে দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন,
শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করছে। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করছে। লক্ষ্য একটি-একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভিন্নরুপে প্রতিষ্ঠা করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকা। আওয়ামী লীগ এখন একটি গণবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনে তারা জয়ী হতে পারবে না বলেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করে তারা জাতীয় সংসদের নির্বাাচন করতে চায়। ২০১৪ সালের মতোই একতরফা নির্বাচন করার নীল নক্শা করছে। জনগণ তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দিবে না।
সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্ত হিসেবে মির্জা ফখরুল বলেন,
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথমেই গণতন্ত্রের মাতা আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলীয় সকল বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণস্বাধীন করতে হবে। বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। সরকারকে আহবান জানাবো কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে উপরোক্ত দাবিগুলো মেনে নিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এই তামাশা ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি এবং অবিলম্বে এই ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচন প্রদানের আহবান জানাচ্ছি।
এসময় সংবাদ সম্মেলেনে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এড. আহমেদ আজম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, আব্দুল হাই, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।