Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১০ ব্যাংকেই খেলাপি ঋণ সাড়ে ৬৫ শতাংশ

ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি প্রতিবেদন-২০১৭ প্রকাশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

দেশে ৫৭ ব্যাংকের মধ্যে ১০ ব্যাংকের কাছেই রয়েছে মোট খেলাপি ঋণের ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আর বাকি ৪৭ ব্যাংকে খেলাপি রয়েছে মাত্র ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ১০ ব্যাংকের মধ্যে আবার পাঁচ ব্যাংকের কাছেই খেলাপি ঋণ রয়েছে ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট-২০১৭ এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন আরেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে গত বছর মোট খেলাপি ঋণের হার ও পরিমাণ দুই-ই বেড়েছে। ২০১৬ সাল শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ছিল ৬২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৭ সাল শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৪ হাজার ৩০২ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময়ে রাস্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপিঋণ বেড়েছে সর্বোচ্চ। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে রাস্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপিঋণ বেড়েছে প্রায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, খেলাপিঋণে পরিমাণের দিক থেকে শীর্ষ ১০ ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে রাস্ট্রায়ত্ত খাতের ৫টি, বেসরকারি খাতের ৩টি এবং বিশেষায়িত ও বিদেশী খাতের ১টি করে ব্যাংক। আর শতকরা হিসেবে শীর্ষ দশ ব্যাংকের এ তালিকায় রয়েছে রাস্ট্রায়ত্ত খাতের ৫টি, বেসরকারি খাতের ২টি, বিশেষায়িত খাতের ২টি ও বিদেশী খাতের ১টি ব্যাংক। এর মধ্যে ৯টি ব্যাংকের খেলাপিঋণের হার ২০ শতাংশের ওপরে। এ তালিকায় রয়েছে রাস্ট্রায়ত্ত ৪টি, বিশেষায়িত ২টি, বেসরকারি ২টি ও বিদেশী ১টি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, খাত ভিত্তিক হিসেবে মোট খেলাপি ঋণের ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ রয়েছে তৈরি পোশাক খাতে। একক শিল্প খাত হিসাবে এ হার সর্বোচ্চ। এ ছাড়া কৃষি খাতে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ব্যবসা ও বাণিজ্য খাতে ২৩ শতাংশ, টেক্সটাইল খাতে ১০ দশমিক ১ শতাংশ, কৃষি ভিত্তিক শিল্প খাতে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, নির্মাণ খাতে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, শিপ বিল্ডিং ও শিপ ব্রেকিং খাতে ২ দশমিক ৬ শতাংশ ও পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ২ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরও খেলাপি ঋণের বড় একটি অংশ পুনঃতফসিল হয়েছে। ২০১৬ সালের চেয়ে ২০১৭ সালে পুনঃতফসিল বেড়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ। তবে ঠিক কত টাকার খেলাপিঋণ গত বছরজুরে পুনঃতফসিল করা হয়েছে সেটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। এদিকে, গত বছর খেলাপিঋণ পুনঃতফসিলের দিক থেকে শীর্ষে ছিল চলতি মূলধন খাত। ২০১৭ সালে এ খাতে খেলাপিঋণ পুন:তফসিল করা হয়েছে ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এর পরেই ২০ দশমিক ৪ শতাংশ রয়েছে তৈরি পোশাকসহ সামগ্রিক শিল্প খাতে। এ ছাড়া ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণ পুন:তফসিলিকরণ করা হয়েছে ফরেন ট্রেডে। প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, গত বছর শেষে ৯টি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ছিল। এ তালিকায় রয়েছে রাস্ট্রায়ত্ত খাতের ৩টি, বেসরকারি খাতের ৫টি ও বিদেশী খাতের ১টি। অন্যদিকে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট রাইট-অফ (মূল হিসাব থেকে আলাদা করা) হয়েছে ৪৮ হাজার ২০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ; যা ২০১৬ সাল শেষে ছিল ৪৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট মূলত বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও সক্ষমতার চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করে থাকে। আর্থিক খাতের গতি প্রকৃতি, স্থিতিশীলতাও তার প্রভাব এবং তা মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপ, সম্পদের মান, ঝূঁকি ব্যবস্থাপনা ও তারল্যের নির্দেশকগুলো এখানে বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো উঠে আসে এই প্রতিবেদনে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঋণ

২১ অক্টোবর, ২০২২
১৮ অক্টোবর, ২০২২
১৯ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ