Inqilab Logo

শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তিন সিটিই এখন আতঙ্কের নগরী সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই তিন সিটি এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এসব এলাকায় প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যাচ্ছে। সেখানে আকাশে বাতাসে ভোটারদের মাঝে ভেসে বেড়াচ্ছে ভয় আর গুঞ্জন। গাজীপুর ও খুলনার ভোটের মতো নয়া সিস্টেমের ভোট ডাকাতি প্রত্যক্ষ করবে কী না এই আতঙ্কে আছে তিন সিটির ভোটাররা। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের মন থেকে ভয়ভীতি দুর করে আশঙ্কামুক্ত ভোটের পরিবেশ তৈরী করতে সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল (রোববার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, গাজীপুর ও খুলনায় নতুন মডেলের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন কথা দিয়েছিল আগামী নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবে। কিন্তু তিন সিটি নির্বাচনে প্রচারণা শুরু হলে কমিশনের পুরনো চেহারা আবারও ফুটে উঠতে শুরু করে। তারা রাখ ঢাক না করে মুখোশের শেষ সুতোটুকুও খুলে ফেলেছে। যেভাবে খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, যেভাবে নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল, যেভাবে ধানের শীষের নির্বাচনী এজেন্টদের এলাকাছাড়া করা হয়েছিল, ঐ দুই সিটি এলাকায় প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর রুপ দেখা যাচ্ছে তিন সিটি এলাকায়।
নির্বাচন কমিশন কোন অভিযোগেরই প্রতিকার করেনি অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তিন সিটি নির্বাচনেই অসংখ্য অভিযোগেও মর্মর মনুমেন্টের মতো নিশ্চুপ থেকেছে ইলেকশন কমিশন। প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা করেনি। নির্বাচন কমিশনের মনে-মস্তিস্কে অন্ধকার নেমেছে বলেই যুক্তি সেখানে অবান্তর। নিজেদের স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ না করে মনে হয় সরকারি হুকুমের ভয়ে অসহায় নীরব-নিশ্চল পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। সেজন্য একের পর এক নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদেরই তল্পী বহন করছে নির্বাচন কমিশনবিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের বাড়ীঘর, দোকানপাট, বাজার ভেঙ্গে দেয়া, পুড়িয়ে দেয়া, ঘরছাড়া করা, কর্মীশূণ্য-নেতাশূণ্য সর্বোপরি ভোটারশূণ্য করা কোন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষণ? যদিও তিন সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন আলামত এখনও পর্যন্ত নেই, তবুও ভোটারদের নিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠে থাকবে ধানের শীষের প্রার্থী।
সিলেটে স্থানীয় প্রশাসন নগ্নভাবে নৌকা মার্কার পক্ষে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সেখানে ধানের শীষ প্রতীকের পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাককে রোববার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় ৮০ জন নেতাকর্মীকে আসামী করেছে আওয়ামী লীগ। এখানে ক্ষমতাসীন দল পুলিশকে দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, ধাওয়া, বাধা ও হুমকি দেয়ানো হচ্ছে। এটির উদ্দেশ্য নৗকা মার্কার প্রার্থীকে একতরফাভাবে বিজয়ী করা।
রাজশাহীর বিষয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী যেন ভুতুড়ে নগরী, শ্বাসরোধকারী গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে সেখানে। নৌকা মার্কার অনুকুলে একতরফা ভোট করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসন যৌথভাবে বিবেকশূণ্য অনাচারে লিপ্ত রয়েছে। সেখানে আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডারদেরই জয়জয়কার। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় সাধারণ ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেখানে রাজত্ব কায়েম করেছে। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করে আশেপাশের জেলা-উপজেলায় পাঠিয়ে দেয়। মহানগর জুড়েই ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী বুলবুলের নির্বাচনী প্রচারণা অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার, মামলা এবং ভোটারদের মনে ভীতি ও আতঙ্কের কারণেই এই অবস্থা। ঢাকা থেকে কালো গাড়ীতে করে সিল মারা অতিরিক্ত ব্যালট পেপার রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধানের শীষের পুরুষ ও মহিলা এজেন্টরা গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সিটি এলাকায় প্রায় ১০টি কালো কাঁচঢাকা গাড়ী ঘোরাফেরা করছে। এই গাড়ীর ভেতর কারা সেটা নিয়ে ভোটার’রা উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বরিশাল এখন আওয়ামী ক্যাডারদের দখলে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে বহিরাগত ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডার’রা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে গোটা সিটি এলাকায় তান্ডব চালাচ্ছে। পুলিশ-র‌্যাবের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে মহড়া দিচ্ছে। তিনটি থানায় বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় আসামী করেছে পুলিশ। প্রশাসনের নির্দেশে অনেক নেতাকর্মীর বাসাবাড়ীর বিদ্যূৎ লাইনও বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের হুমকি ও পুলিশের লাগাতার গ্রেফতারের খবরে বরিশাল মহানগরে আতঙ্ক আসন গেড়ে বসেছে। পুলিশ ও প্রশাসন বিএনপি’র নির্বাচনী প্রচারণা জোর করে বন্ধ করেছে। অথচ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে একের পর এক পথসভা করছে, বিশাল শো ডাউন দিচ্ছে। প্রচারণার শেষের দিন ধানের শীষের প্রার্থী ও সমর্থকদেরকে মাঠেই নামতে দেয়নি পুলিশ। ####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ