Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘুমের বড়ি খেয়ে ইসি নিদ্রামগ্ন

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সরকারদলীয় প্রার্থীদেরকে জেতাতে তিন সিটি করপোরেশন এলাকাতেই গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তিন সিটিতেই খুলনা-গাজীপুরের মতোই ভীতিকর অবস্থায় পরিণত হয়েছে। তিন নির্বাচনী এলাকাতেই বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গণগ্রেফতার, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাধা, ধানের শীষের সমর্থক, এজেন্টদের সাদা পোশাকে তুলে নেয়া ও পরে তা অস্বীকার করার ধুম শুরু হয়েছে। গতকাল (রোববার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গত দু’তিন দিনে জনসমর্থনহীন নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা খুলনা-গাজীপুরের সন্ত্রাসের আবহে নতুন মডেলের ভোট জালিয়াতির আসল রুপে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে রাতদিন গণগ্রেফতার শুরু করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ধানের শীষের আবেদন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আওয়ামী চেতনায় সাজানো প্রশাসন নির্বাচনী এলাকাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ইউরোপে মধ্যযুগীয় ‘ডাইনী শিকার’ এর ন্যায় অভিযানে নেমেছে। ক্ষমতাসীন দল বেআইনীভাবে জয়ী হতে চাচ্ছে বলেই বেপরোয়া গ্রেফতার, গণগ্রেফতারসহ এক আতঙ্কজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিকট দায়েরকৃত কোন অভিযোগের ব্যাপারে কিংবা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্বস্ততার সহিত দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছেন, কিন্তু খুলনা-গাজীপুরসহ চলমান সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে ঢালাও অনিয়ম ও অনাচারে সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা তছনছ হওয়ার পরেও তাদের নীরব দর্শকের ভ‚মিকা অনাকাক্সিক্ষত, অনভিপ্রেত ও অপ্রত্যাশিত। শুধু নীরব নয় বরং সরকারের অনুষঙ্গ হিসেবেও কাজ করছে তারা। ভোট সন্ত্রাসকে মহিমান্বিত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ও কমিশনের বক্তব্য অভিন্ন। সরকারী দলের প্রার্থীকে জেতানের জন্য প্রশাসন ও দলীয় ক্যাডারদের দাপটে ভোটার’রা আতঙ্কিত, অথচ এসব বিষয়ে নির্বাচনে কমিশনে হাজারো অভিযোগ দাখিল করলেও কখনও কোন পদক্ষেপ কমিশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি, মনে হয় তারা চমকপ্রদ ঘুমের বড়ি খেয়ে নিদ্রামগ্ন থাকেন।
খালেদা জিয়া মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন জানিয়ে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া এখনও গুরুতর অসুস্থ। তাঁর জ¦র ও শরীরে প্রচন্ড ব্যথা কোনভাবেই কমছে না। তিনি দর্শণার্থীদের সাথে নিচে নেমে কথা বলেন, কিন্তু এখন তিনি খুব বেশী অসুস্থতার কারণে দোতলা থেকে নিচে নামতেই পারছেন না। তাঁর হাঁটা-চলা করতে কষ্ট হয়। কারাগারে অবর্ণনীয় কষ্টে রাখার জন্যই তাঁর অসুস্থতা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বারবার ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার দাবি জানানো হলেও সরকার ভ্রুক্ষেপহীন ও উদাসীন। যেন শারীরিকভাবে যন্ত্রণা দিতেই তাঁকে কারাগারের লাল দেয়ালের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। এটা যেন এক ভয়াবহ প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্য নিয়েই পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এখন তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশনেত্রীর ওপর সরকার প্রধানের এই প্রতিহিংসা এক অশুভ অপশাসনেরই বার্তা দেয়। তিনি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে তাঁর চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এমএ মান্নান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি করপোরেশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ