Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাপি ঋণ কমাতে এডিআর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এ থেকে উত্তরণের জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) বিকল্প নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের সামষ্টিক ব্যাংক ঋণের প্রায় ১১ শতাংশই খেলাপী ঋণ। বিদ্যমান অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩ কে যুগোপযোগী ও সংষ্কার করা না গেলে এর পরিমান আরও বাড়তেই থাকবে।
গতকাল বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে আয়োজিত ‘খেলাপী ঋণ আদায়ে এডিআর’র ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এসব মতামত তুলে ধরেন সংশ্লিষ্টরা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ এবং সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক। এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন বিয়াক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সালমা নাসরিন, বাংলাদেশ নারী বিচারক এসোসিয়েশনের সভাপতি তানজিনা ইসমাইল সহ বিভিন্ন ব্যাংকের এমডিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ডিসিসিআই ও বিয়াকের নেতৃবৃন্দ।
সভায় মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে আদালতে অর্থ ঋণ বিষয়ক মামলার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে মামলা জট কমানো ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিয়াক অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, গত ৭ বছর ধরে বিয়াক খেলাপি ঋণ, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি, মধ্যস্থতা, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। একই সঙ্গে আমাদের অবশ্যই সকলের জন্য সমান আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং মামলা-মোকাদ্দমা জড়ানোর আগে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়া গেলে অনেক ক্ষেত্রেই অহেতুক হয়রানি কমানো সম্ভব হবে। তিনি জানান, উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ২শতাংশ খেলাপী ঋণ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে ১০শতাংশ অধিক খেলাপী ঋণ বিদ্যমান আছে, যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শহীদুল হক বলেন, খেলাপী ঋণ কমাতে আইনের সংষ্কারের প্রয়োজন হলে, সরকার তা করতে অত্যন্ত আগ্রহী। তিনি বলেন, খেলাপী ঋণ কমাতে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং সকল ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ লক্ষ্যে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।
বিয়াক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের দেশে একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানে সম্ভব হলে আমাদের দেশের আর্থিক খাত কে আরো শক্তিশালী করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এডিআর কার্যক্রম কে আরো গতিশীল করার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরির খসড়া প্রণয়নের জন্য বিয়াক বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স নিবীড় ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮৫ বিলিয়ন টাকা। তিনি জানান, বর্তমানে আমাদের মোট ঋণের ১০.৭৮ শতাংশ খেলাপি এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এর পরিমাণ ছিল ৯.৩১ শতাংশ।
অতিরিক্ত সচিব সালমা নাসরিন বলেন, দেশের অর্থনীতির সুস্থ বিকাশের জন্য কার্যকর ব্যাংক ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আর্থিক খাতের খেলাপি ঋণের বিষয়টি আমাদের অর্থনীতির জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ইভিপি ও হেড অফ লিগ্যাল ব্যারিষ্টার শাফায়াত উল্ল্যাহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খেলাপি ঋণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ