বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনও নির্বাচন হবে না। ‘নির্বাচন করতে হলে প্রথম শর্ত–খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’
শুক্রবার (২০ জুলাই) বিকালে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠনকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনগণের দাবি আদায় করতে হবে। অপশাসনকে পরাজিত করতে হবে। জাতিকে মুক্তি দিতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা বাম মোর্চাকে ধন্যবাদ জানাই। তারা একটি ঐক্য গড়ে তুলেছে। তাই সবাইকে আহ্বান জানাব, গণতন্ত্রকামী সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হোন। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার দেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র, মানুষের কথা বলার অধিকার ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার এ দেশের ব্যাংকগুলো শেষ করে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংককেও শেষ করে দিয়েছে। সেখানে রাখা সোনাগুলো নাকি ধাতু হয়ে গেছে।
কারাবন্দি খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে
বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে মানুষটি দেশের মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তাঁকে আজ অন্যয়ভাবে একটি নির্জন কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি এতটাই অসুস্থ তাঁর আত্মীয়রা দেখা করতে গেলে তিনি নিচে আসতে পারেন না। অথচ সরকারের মন্ত্রীররা বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছি। রাজনীতি তো করছে সরকার। কারণ তারা খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, সে জন্য তাঁকে কারাগারে আটকে রেখেছে। যে মামলায় তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সে মামলায় তাঁকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখছে।
ফখরুল আরো বলেন, আগে
বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের গুম করতো। এখন নতুন নাটক শুরু হয়েছে। মাদকের নামে নিরপরাধ মানুষকে বিনা বিচারে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। সরকার আজ দেশে একটা ভয়াবহ ত্রাসের রাজত্ব শুরু করছে। এ দেশে আজ প্রতিটি মানুষ অনিরাপদ, তাদের কখন কোথায় মৃত্যু হবে কেউ জানে না।
কোটা নিয়ে
বিএনপির এ নেতা বলেন, যখন আন্দোলন তুঙ্গে তখন প্রধানমন্ত্রী রেগে সংসদে বলেছেন, কোনো কোটা থাকবে না। আর এখন কি করছে, যারা আন্দোলনের সাথে জড়িত তাদের গুম করা হচ্ছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করছে। এখন ছাত্রলীগের ভূমিকা পাকিস্তান আমলে ইয়াহিয়া খানের ছাত্র সংগঠনের মতো। আজ দেশে কেউ নিরাপদ নয়। কেউ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে না।
শুক্রবার বিকেল ৩টায় পূর্বঘোষিত এই সমাবেশ শুরু হয়। প্রখর রোদ ও তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে জুমার নামাজের পর থেকেই দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন
বিএনপির নেতাকর্মীরা। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে পুরো নয়াপল্টন এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন পর সমাবেশ করার সুযোগ পাওয়ায়
বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিল না। তাঁরা স্লোগানে স্লোগানে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান। সমাবেশে শেষ হয় বিকেল সোয়া ৫টায়।