পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরিবেশকে ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ বলে আখ্যায়িত করে সেনাবাহিনী মোতায়নের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। অপরদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন চাইলেন কালো টাকা প্রতিরোধী পদক্ষেপ। গতকাল দুপুরে রাজশাহী কর্মচারি কল্যাণ বোর্ড মিলনায়তনে প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের মতবনিময় সভায় এসব দাবি তুলেন প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী।
তবে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ করতে যা যা করার দরকার তার কোনও ত্রুটি থাকবে না বলে জানালেন নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘আজকে রাজশাহীতে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা নির্বাচনের পরিস্থিতি নয়। এটি যুদ্ধের পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে যদি নির্বাচন করতে হয় তা হলে আগামী দিনে আরও শোচনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই প্রশ্ন চলে আসছে আজকে সেনাবাহিনী প্রয়োজন। কারণ যারা আমাদের পাহারা দেবে তারা যদি একজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তা হলে আমরা কোথায় নিশ্চয়তা পাব।’
বুলবুল বলেন, ‘যারা পোলিং এজেন্ট বা পোলিং অফিসার অথবা প্রিজায়ডিং অফিসার থাকবে তাদের যদি ডিএনএ টেস্ট করে ভোট কেন্দ্রে নিয়োগ দেন তা হলে তো আমাদের ভোট করে লাভ নেয়। তা হলে বলে দিন অমুক প্রার্থীকে বিজয়ী করা হলো আপনাদের দাড়ানো দরকার নেয়।’
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি হারলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় আর জিতলে নির্বাচন স্বচ্ছ হয়। এটিই তাদের চরিত্র।’
লিটন বলেন, ‘কালো টাকা কাদের আছে। কালো টাকার মালিকরা কাদের সঙ্গে আছে, কাদের কালো টাকা নিয়ে রাজশাহীতে জ্বালাও পোড়াও করে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা এবং হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে দেশের রাজনীতিকে অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, সরকারের পতন ঘটিয়ে অন্যভাবে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল, মানুষ তা জানে। রাজশাহীর মানুষ এমন বোকা নয় বা মুর্খ নয় যে সেই কালো টাকার মালিকরা এখন কার সঙ্গে আছে সেটি জানে।’
লিটন বলেন, ‘রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেন্দ্র করে স¤প্রতি মোটা অংকের কালো টাকা লেনদেন হয়েছে। সেই কালো টাকা যেন ভোটের মাঠে বা ভোটাদের মাঝে দিতে না পারে এটি নিশ্চিত করতে হবে।’
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। ইতোপুর্বে নির্বাচন কাজে যারা ভাল দায়িত্ব পালন করেছে তাদের বাছাই করে সে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচন কাজে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুনতে পায় ভোটের পূর্ব রাতে কেন্দ্র দখল করে সিল মারার যে ঘটনাগুলো। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমি অনেক কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি একটি কেন্দ্রেও যেন এ ধরণের ঘটনা না ঘটে। খুলনা ও গাজীপুরে একটি কেন্দ্রেও এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটে নাই। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আপনাদের সহযোগিতা পেলে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও কোন ধরণের কোন অনিয়ম হবে না।’
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় রাজশাহীর মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারণার মাঠে সরব হয়েছে বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাস্কৃুতিক সংগঠন। গতকাল নাগরিক কমিটি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ প্রচারণা চালায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রাবি সাবেক ভিসি প্রফেসর আব্দুল খালেক, সাবেক প্রোভিসি মুহম্মদ নুরুল্লাহ, প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম ফারুক, । তারা উন্নত নগরগড়ে তোলার জন্য লিটনের নৌকা মার্কায় ভোট দানের আহবান জানান।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ব্যানারে বুলবুলের ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালানো হয়। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এম হাসনাত আলী, প্রফেসর মাসুদুল হক মুক্তা, রুয়েটের শিক্ষক ড. এস,এম,আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষক সমিতির ড. মো: রবিউল ইসলাম সরকার, সহকারী অধ্যাপক দিদার হোসেনসহ আইনজীবী ও পেশাজীবীরা অংশ নেন। তারা দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করার অনুরোধ জানান।
লিটনের প্রচারণা
রাজশাহীর উন্নয়নের স্বার্থে নৌকায় ভোট চেয়ে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত, মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী, সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। খায়রুজ্জামান লিটনের গণসংযোগ ও পথসভায় জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংগ্রহণ করে। গতকাল সকাল ১০টায় মহানগরীর (পূর্ব) নওদাপাড়া বাজার থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর আমচত্বর ও কালুরমোড় এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় সর্বস্তরেরর জনসাধারণের ঢল নামে খায়রুজ্জামান লিটনের গণসংযোগ ও পথসভায়।
বুলবুলের প্রচারণা
বিএনপি প্রার্থী বুলবুলের প্রচারণায় গতকাল অংশ নেন বিএনপির ক’জন কেন্দ্রীয় নেতা। তারা বলেন, বোমা মেরে ভয় দেখিয়ে আওয়ামী লীগ যদি মনে করে গাজীপুর ও খুলনার মত ভোট জালিয়াতী ও জোর করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করাবে তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে । রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলে ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এই কথা গুলো বলেন। তিনি বলেন, রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও আইনশৃংখলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। নিয়মনীতি ভঙ্গ করে লিটন সরকারী কর্মচারীদের ভয় দেখিয়ে ও জোর করে নৌকার পক্ষে কাজ করাচ্ছে। যা সংবিধান ও নির্বাচনী নীতি পরিপন্থি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি কেন্ত্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, পুঠিয়া দূর্গাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তাফা, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু।
জামায়াতের বিবৃতি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার আমীর অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামকে কোন প্রকার মামলা ছাড়াই রাস্তা থেকে ডিবি পুলিশ উঠিয়ে নেওয়া, থানা সেক্রেটারী আব্দুল খালেককে রাত ১২টায় মসজিদ থেকে উঠিয়ে নেওয়া ও পাঁচজন জন মহিলাকে নির্বাচনী প্রচারকালে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল এক বিবৃতি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর আমীর প্রফেসর এম আবুল হাশেম ও সেক্রেটারী সিদ্দিক হোসাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।