Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সোনার চাকতি কিভাবে মিশ্র ধাতু হল ---------ড. মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে ভুতুড়ে কান্ড এবং রিজার্ভ চুরির বিচার চায় বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে ছিল সোনার চাকতি, হয়ে গেছে মিশ্র ধাতু (তামা)। ২২ ক্যারেটের সোনা হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট। এটা কিভাবে হল? এসব কর্মকান্ডের বিচার না হলে একদিন সবাইকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আজকে এই স্বাধীন দেশে মানুষের যেমন নিরাপত্তা নেই, তেমনি ব্যাংকগুলোতেও কোনও নিরাপত্তা নেই। এগুলো ন্যক্কারজনক। গতকাল (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং সরকারের নীলনকশা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে একটি পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশে ব্যাংকের ভোল্টে ‘ভুতুড়ে কান্ড’। সেখানে ৯৬৩ কেজি সোনা জমা রাখা ছিল। কিন্তু, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধান বলা হয়েছে, ছিল সোনার চাকতি, হয়ে গেছে মিশ্র ধাতু। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ পরীক্ষা করে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে এ অনিয়ম পেয়েছে।’ গত ২৫ জানুয়ারি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুল্ক গোয়েন্দা ও এনবিআর বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার নিশ্চুপ। এই বাংলাদেশে রিজার্ভ লুট হয়েছে, এই টাকার কিছু অন্য দেশে গেছে, সেই দেশ তাদের বিচার করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে এটা নিয়ে যে তদন্ত করা হয়েছে, তার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
তিনি বলেন, রিজার্ভের সঙ্গে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সরকারের ওপরের মহলের লোকজন জড়িত নয় এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। আমেরিকার এফবিআই বলেছে, এ রিজার্ভ চুরির সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকজন জড়িত। এজন্য আমাদের এখানে কোনও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি এবং বিচার হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। রিজার্ভ চুরির মতো ভোল্টের কর্মকান্ড ধামাচাপা দেওয়া হলে জনগণের কাছে সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আওয়ামী লীগের নেতা দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রশাসন দিয়ে মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার ক্ষুণ করেছে। সেই ভোট ডাকাতিতে সহযোগিতা করছে নির্বাচন কমিশন। কাজেই ভবিষ্যতে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এটা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করেন না। অতএব, এই কমিশনের অধীনে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু সম্ভব নয়। এটাই হচ্ছে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে আমাদের সর্বশেষ বক্তব্য।
আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলকে বাইরে রেখে আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চায় অভিযোগ করে ড. মোশাররফ বলেন, এখন সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করাই বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামীতে জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এমন নির্বাচন আমাদের আদায় করে নিতে হবে। দেশ স্বৈরাচারমুক্ত না হলে এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কোনও স্বৈরাচার ইচ্ছে করে ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েই আমাদের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন কোনও কোটাই থাকবে না। সরকার কতটা ভীতু? ছাত্রদের ন্যায্য দাবিকে দাবিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রতারণা করলেন। আমরা মনে করি শুধু মুক্তিযোদ্ধা ও নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের কোটা থাকতে পারে।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াস সদস্য সাবেক সাংসদ আহসান হাবিব লিঙ্কন প্রমুখ।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ ব্যাংক

২৫ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ