পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুল্ক গোয়েন্দাদের উদ্ধারকৃত সোনা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখা হলেও ওই সব জমাকৃত সোনার মান ও পরিমাপ নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ সম্মেলন করলেও সঠিক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। তারা নিজেদের মতো করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে। বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করেছে, শুল্ক গোয়েন্দাদের জমাকৃত সোনার পরিমাপের সঙ্গে তাদের পরিমাপের গরমিলে এ ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ৪০ এর স্থানে ভুলভাবে ৮০ হওয়ার করণীক ভুলে সোনার মানের পার্থক্য দেখা দিয়েছে। এছাড়া ২২ ক্যারেটের জায়গায় ১৮ ক্যারেট হওয়ার বিষয়টি দুটি ভিন্ন যন্ত্রে পরিমাপের কারণে হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, অনেক সময় দেখা গেছে, শুল্ক গোয়েন্দারা যে পরিমান সোনা জমা রাখে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিমাপে কোন সময় তা বেশি আবার কোন সময় তা কম হয়েছে!
কেন এই কম বেশি? বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করছে, সোনার সঠিক ওজন পরিমাপে বাংলাদেশ পিছিয়ে! একই পরিমান সোনার ওজন একেক স্বর্ণের দোকানে একেক রকম হয়। যার কারণে শুল্ক গোয়েন্দাদের জমাকৃত সোনার ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। তবে জমাকৃত ওই সোনার সঠিক পরিমাপ একমাত্র বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন থেকে পাওয়া সম্ভব। এমন এক প্রস্তাব শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে দিলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের এই প্রস্তাব শুল্ক গোয়েন্দা প্রত্যখ্যান করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান।
ভল্টে সোনা জমার নীতিমালা অনুযায়ী, শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছ থেকে সোনা জমা নেওয়ার সময় অবশ্যই পরিমাপ বুঝে নিতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের তালিকাভূক্ত স্বর্ণালকার জমাকৃত সোনা পরিমাপ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব স্বর্ণকার যখন এটি পরিমাণ করেন তখন বলেছিলেন, সেই রিংয়ে ৪০ শতাংশ স্বর্ণ আছে। কিন্ত প্রতিবেদন করার সময় ভুলে ৪০ কে ৮০ (ইরেজিতে শব্দ মনে করে) লেখা হয়। পরে শুল্ক গোয়েন্দা ভল্ট পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুললে তাদের ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, শখ জুয়েলার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান তাদের একমাত্র তালিকাভূক্ত স্বর্ণাকার। শুধু একজনের ওপর নির্ভর কেন? এ প্রশ্নের সঠিক কোন ব্যাখা দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বলেছে, পরিমাপের অধিকতর সুবিধার কথা বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা পরিষদকে জানানো হবে। উল্লেখ্য, অখ্যাত এই স্বর্ণাকারই বাংলাদেশের ব্যাংকের একমাত্র ভরসা।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ভুতুড়ে কান্ড’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এটি সম্পূর্ণ ভুল ও বস্তনিষ্ঠু হয়নি বলে দাবি করতেই সংবাদ সম্মেলন ডাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভল্টে রাখা ওই সোনায় কোনো প্রকার হেরফের হয়নি দাবি করে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রবিউল হাসান, ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্সের মহাব্যবস্থাপক জি এম আবুল কালাম আজাদ, কারেন্সি অফিসার আওলাদ হোসেন চৌধুরী ও ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্টের মহাব্যবস্থাপক সুলতান মাসুদ আহমেদ। এ সংবাদের প্রতিবাদ দেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভল্টে সোনা যেভাবে রাখা হয়েছিল সেভাবেই আছে। কোনো প্রকার হেরফের হয়নি। একটি ক্লাসিক্যাল মিসটেকের (করণীক ভুল) কারণে সোনার মানের পার্থক্য দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর ও শুল্ক গোয়েন্দাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
করণীক ভুলের ব্যাখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, একটি রিং মানের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব স্বর্ণকার যখন এটি পরিমাণ করেন তখন বলেছিলেন, সেই রিংয়ে ৪০ শতাংশ স্বর্ণ আছে। কিন্ত পরে প্রতিবেদন করার সময় ভুলে ৪০ কে ৮০ (ইরেজিতে শব্দ মনে করে) লিখা হয়। পরে শুল্ক গোয়েন্দা ভল্ট পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুললে তাদের ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর যেভাবে ভল্টে সোনা রেখেছিল, তা সেভাবেই রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। আওলাদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রæটি বলতে যা আছে, নথিভুক্ত করার সময় ইংরেজি-বাংলার ভুল। এর বাইরে অন্য ত্রæটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নেই।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক অনুসন্ধানের তথ্যের ভিত্তিতে ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটির জায়গায় এখন আছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। ২২ ক্যারেট সোনা হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ সহিদুল ইসলাম বলেন, এক বছরের বেশি সময় অনুসন্ধান করে তারা ওই অনিয়ম পেয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক যেহেতু একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তারা বিষয়টি অনুসন্ধান করে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলে আশা করছি।
কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলনে আওলাদ হোসেন বলেন, ২২ ক্যারেটের জায়গায় ১৮ ক্যারেট হওয়ার বিষয়টি দুটি ভিন্ন যন্ত্রে পরিমাপের কারণে হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দারা যখন সোনা জমা রাখেন, তখন হয়ত তাদের মেশিনে ২২ ক্যারেট দেখিয়েছিল, কিন্ত আমাদের মেশিনে সেটি ১৮ ক্যারেটই হয়েছিল।
চিঠি দিয়ে বিষয়টি শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম, আণবিক শক্তি কমিশনের মেশিন দিয়ে ওই সোনা মাপা হোক। তখন তারা রাজি না হয়ে বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর এবং এনবিআর যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল, তখন সার্বিক বিষয়টি তাদের কাছে স্পষ্ট করা হয়েছে। সর্বশেষ ১১ জুলাই এনবিআর চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।
নির্বাহী পরিচালক রবিউল হাসান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে ছয় স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরকেও সেখানে প্রবেশ করতে অনুমতি নিতে হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ কোনোভাবে এখানে প্রবেশ করতে পারে না। নথিভ‚ক্ত করার সময় ইংরেজি-বাংলার ত্রæটি ছাড়া কোনো ধরনের ভুল বাংলাদেশ ব্যাংকের নাই।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ৯৬৩ কেজি সোনা জমা আছে। এর মধ্যে নিলামের জন্য ১০ কেজি ৫৭ গ্রাম নেয়া হয়েছে যেটা স্থায়ী সোনা, বাকিগুলো অস্থায়ী। আর সর্বশেষ ২০০৮ সালে নিলামে সোনা বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর আর নিলাম হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।