পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকেই সামনে রেখে নির্বাচনের প্রচার চালাচ্ছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি। ২০০৭ সালে একটি সমাবেশে ঘাতকের গুলিতে নিহত হন বেনজির ভুট্টো। নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি ‘শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল, উন্নত, গণতান্ত্রিক পাকিস্তান’-এর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বিলাওয়াল।
আগামী ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। এবার প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বিলাওয়াল। ২৯ বছর বয়সী বিলাওয়াল একই সাথে তার পিতা আসিফ আলী জারদারির সাথে দলের যৌথ নেতৃত্বে রয়েছেন। ম‚লত মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই দলে এই অবস্থান তার। পারিবারিক রাজনীতিতে তৃতীয় প্রজন্মের সদস্য বিলাওয়াল।
তার নানা জুলফিকার আলী ভুট্টো ছিলেন একসময়ের আলোচিত রাজনৈতিক চরিত্র। সত্তরের দশকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জনাব ভুট্টোকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল সামরিক শাসক জিয়াউল হকের সময়ে। পরে জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টোও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। তার হত্যাকান্ডের পথ ধরেই রাজনীতিতে আসা ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির। বেনজির নিহত হওয়ার পর পিপিপি ক্ষমতায় ্এলেও এখন খুবই বাজে সময় পার করছে দলটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সা¤প্রতিক বছরগুলোতে দলটির প্রতি জনসমর্থন ব্যাপক কমেছে। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বিবিসিকে বলেছেন, দলের নেতৃত্ব দিতে তিনি ভীত নন এবং দেশের সবার জন্য মঙ্গলজনক কাজ করতে চান তিনি।
নির্বাচনী জরিপগুলো বলছে, নির্বাচনের ফলাফলে পিপিপি’র অবস্থান হতে পারে তৃতীয়। তার দলের চেয়ে এগিয়ে আছে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই। আর এখনো এগিয়ে আছে নওয়াজ শরীফের দল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুখাররব আকবর বিবিসিকে বলছেন এখনো গ্রামীণ এলাকায় পিপিপির জনসমর্থন আছে। বিশেষ করে সিন্ধু প্রদেশে। যদিও জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে বহু সমর্থক হারিয়েছে দলটি। পাশাপাশি ভাবমর্যাদা সঙ্কট তো আছেই। বিশেষ করে আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে, যদিও তিনি বরাবরই তা অস্বীকার করেছেন।
এ সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট তার দেশত্যাগ ঠেকাতে নির্দেশ দিয়েছে সরকারকে। এ সবের জবাবে বিলাওয়াল বলছেন তার দল দীর্ঘকাল ধরেই অপপ্রচারের শিকার। অনেক বিশ্লেষকের বিশ্বাস, ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হলে পিপিপি সরকার গঠনে কোয়ালিশন সরকারের অংশও হতে পারে।
বিলাওয়াল অবশ্য এসব কথায় গুরুত্ব না দিয়ে বলছেন, ইমরান ও নওয়াজের দলের সাথে তার আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। এখন নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রে রয়েছেন অবশ্য নওয়াজ শরিফ। আদালতে তার সাজার বিষয়টি ঘিরেই বিতর্ক হচ্ছে বেশি। তার সমর্থকদের বিশ্বাস, তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ম‚লে আছে সেনাবাহিনী- যদিও তারা সেটি অস্বীকার করেছে।
যাই হোক বিলাওয়াল কেমন করবেন নির্বাচনে নিজের ও দলের জয় পরাজয়ে সেদিকে অনেকেরই দৃষ্টি আছে। শৈশবের একটা বড় অংশই তিনি দেশের বাইরে কাটিয়েছেন। পড়ালেখা করেছেন অক্সফোর্ডে।
প্রতিপক্ষের সমালোচনার জবাবে তিনি শুধু বলছেন, ‘আমার বয়স কিংবা কথা বলার ধরন নিয়ে আপনারা সবাই সমালোচনা করলেও আপনারা কিন্তু এসব ইস্যুতে আমাকে হারাতে পারবেন না’।