বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেটের দুই আন্তঃসীমান্ত নদী সুরমা ও কুশিয়ারা। মুলত দুই নদী কেন্দ্রীক সিলেটের সভ্যতা। কিন্তু সেই নদীর অববাহিকার জনপদগুলো এখন নদ-নদীর বৈরী রূপে বিপর্যস্ত। কোথায়ও বর্ষায় উজানের ঢলে ভয়াবহ ভাঙন। ভাঙনে কুশিয়ারার গর্ভে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিলীন হচ্ছে ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাড়ছে সব হারানো মানুষের সংখ্যা।
নদী বাঁচাতে ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে সার্ভে ও মডেল স্টাডি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জ। ভারতের পাহাড়ি নদী বরাক এই উপজেলার অমলসিদ নামক স্থানে দুই ভাগ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সুরমা ও কুশিয়ার নদী। তিন নদীর মিলনস্থলের একপাশে দীর্ঘদিনে জমে ওঠা চরের কারণে বরাক দিয়ে আসা পানির প্রবাহের গতি পরিবর্তন হচ্ছে। অসম বণ্ঠনে প্রবাহ বেড়ে কুশিয়ারা যেমন সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে, তেমনি সুরমা এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে। সুরমা দেশের দীর্ঘতম নদী। এর দৈর্ঘ্য ৩৯৯ কিলোমিটার। আর কুশিয়ারার দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার। সুরমা ও কুশিয়ারা হবিগঞ্জে গিয়ে কালনি নাম ধারণ করে। এই কালনি পুনরায় ভৈরবের কাছে গিয়ে মেঘনা নাম ধারণ করে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডেও (পাউবো) একটি সূত্রে জানা গেছে, এক সময় বরাক হয়ে আসা পানির ৬০ শতাংশ কুশিয়ারায় এবং বাকি ৪০ শতাংশ সুরমা নদী দিয়ে প্রবাহিত হতো। কিন্তু উৎসস্থল অমলসিদ থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার পর্যন্ত সুরমার যাত্রাপথে স্থানে স্থানে চর জেগে উঠায় এখন ৮০ শতাংশ পানিই যাচ্ছে কুশিয়ারায়। ফলে কুশিয়ারা হয়ে উঠেছে খরস্রোতা। অন্যদিকে ২০ শতাংশ পানি নিয়ে সুরমা ক্রমেই তার যৌবন হারিয়ে এখন অনেকটা মরা নদী। তারপরও বর্ষায় অযাচিত উজানের পানি প্রবাহে ভাঙন লীলা এখন বাস্তবতা।
সিলেটে উপজেলা সাতটি। সদর উপজেলা ছাড়াও সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বিয়ানীবাজার উপজেলার তিন ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার এখন গৃহহীন। উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরিয়া, গজুকাটা, নয়া দুবাগ, মেওয়া গ্রাম, শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা ও দীঘলভাগ, শালেশ্বর এবং কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আকাখাজানা, মোহাম্মদপুর, আংগুরা মোহাম্মদপুর, গোবিন্দ শ্রী, লাউঝারী ও আঙ্গারজুর গ্রামের শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ছাড়াও ফসলি জমি, মসজিদ, স্কুল, ডাকঘর, হাটবাজার ও কবরস্থান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আঙ্গুরা মোহাম্মদ গ্রামের রেজা মিয়া বলেন, চোখের সামনে পানির আগ্রসী থাবায় ভেঙে যাচ্ছে চিরচেনা এলাকা। যেখানে খেলেছি, আডডা দিয়েছি, বাজার করেছি সেই স্থানগুলো এখন হারিয়ে গেছেন নদী গর্ভে। তিনি বলেন, এখন আমাদের গ্রামের মসজিদটি যেকোন সময় নদী গর্ভে হারিয়ে য্ওায়ার অপেক্ষায়। যেন কারো কিছু করার নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।