Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

৩ সিটিতে প্রচারণাযুদ্ধ

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৮, ১:৫৮ এএম | আপডেট : ১২:৪৪ এএম, ১১ জুলাই, ২০১৮

প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা নিজেদের প্রতীক-পোস্টার-লিফলেট নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে ছুটাছুটি শুরু করেছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই বদলে গেছে নির্বাচনী এলাকার ভোটের চিত্র। তিন নগরীর সড়কে, হাটে-বাজারে, দোকানে সব জায়গায় চোখে পড়ছে প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত পোস্টার। চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আলোচনা, নিজ প্রার্থীর পক্ষে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন ভোটাররা। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটের মাঠে নেমে গেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রæতি, দেখাচ্ছেন উন্নয়ন ও ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন প্রচারণার শুরুতেই ১৫ দফা ইশতেহারও ঘোষণা করেছেন। বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল হযরত শাহ মাখদুম (রহ:) এর মাজার জিয়ারত করে নগরীর দরগা এলাকায় প্রচারণায় নামেন। সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ:) এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। বরিশালেও প্রচারণার প্রথম দিনেই শহরের বিভিন্ন দোকানে দোকানে গিয়ে লিফলেট দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। শেখ হাসিনার উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রার্থীই নির্বাচনে বিজয়ী হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন ক্ষমতাসীন দলটির প্রার্থীরা। অন্যদিকে খুলনা ও গাজীপুরের মতো তিন সিটিতেই গ্রেফতার আতঙ্ক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপির প্রার্থীরা।
রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে সরকারি দল আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধভাবেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সরকারের শরিক ১৪ দল ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছে। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। সিলেটে সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং বরিশালে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
অপরদিকে বিএনপি সিলেটে বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বরিশালে সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার ও রাজশাহীতে সাবেক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এর মধ্যে বরিশাল ও রাজশাহীতে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন সিলেটের প্রার্থী আরিফ। সিলেট সিটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি সিলেট মহানগরের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামের মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জোবায়ের।
এর আগে গত ১৫ মে খুলনায় এবং ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন। এই দুই নির্বাচনেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানির অভিযোগ ছিল। ভোটের দিন জাল ভোট দেওয়া, জবরদস্তির ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন ও সরকারি দলের আক্রমণাত্মক ভূমিকার কারণে ভোটের দিন বিএনপি কার্যত মাঠছাড়া ছিল। এ দু’টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি জানিয়ে দেশি-বিদেশে রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই অবস্থায় আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সরকার, নির্বাচন কমিশনবিএনপির জন্যও চ্যালেঞ্জ। যদিও প্রচারণার প্রথম দিনেই সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপির প্রার্থীরা। সিলেটে প্রচারণায় অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চেষ্টা, হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অহেতুক হয়রানি করছে। বাধা তৈরি করা হচ্ছে প্রচারণায়। এমনকি সিলেট বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বাসায় পুলিশ বিভিন্ন অজুহাতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সমন্বয়কারী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, সিলেটে আওয়ামী লীগ প্রার্থী একাধিকবার নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও নির্বাচন কমিশনের কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ নেই। এমনকি সিলেট বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশনে একাধিকবার অভিযোগ করলেও কমিশন দায়সারাভাবে কাজ করছে, যা খুবই নিন্দনীয়। বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চললেও আমাদের নেতাকর্মীদের সিলেট ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বারবার হুমকি দিচ্ছে গোয়েন্দা বাহিনীসহ পুলিশ। পাশাপাশি ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে।।
প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বরিশালে বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি সরকারের প্রতি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে, জনগণ ভোট দেয়ার অধিকার পেলে ধানের শীষই বিজয়ী হবে। আগামী ৩০ জুলাই এই তিন সিটিতে ভোটগ্রহণ করা হবে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের জুনে একই দিনে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনো ভোট হয়। সব কটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা মেয়র নির্বাচিত হন। ####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি করপোরেশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ