পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিভিন্ন প্রকল্পে আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে দেওয়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর ঋণ সহায়তা দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। একই সঙ্গে সংস্থাটির সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় এডিবি ঢাকা অফিসের মুখপাত্র গোবিন্দ বার উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশকে ৪৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এরমধ্যে পাঁচ কোটি ডলার ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে। বাকি অর্থ আগামী দুই বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে। এ সব অর্থ মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন, নিরাপদ পানি ও সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হবে।
মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় চার লাখ মানুষ কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছে। আর গত বছর আগস্টে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নতুন দমন-পীড়ন শুরু হলে গত ১০ মাসে এসেছে আরও প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের ৩২টি ক্যাম্পে থাকা এই রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য, আশ্রয়, খাবার পানি, স্বাস্থ্যসেবা, পয়ঃনিষ্কাশন এবং অন্যান্য জরুরি সেবার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে গিয়ে হিমশিম হতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, এডিবি’র অর্থ ছাড়ের গতি বেশ ভালো। আগামী বছরে এ গতি তারা আরও বাড়াবে। সদ্য সমাপ্ত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে তারা ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড় করেছে। চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর আশা করছি সেটা ২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে দেশটি থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ২০ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে এডিবি। ইতোমধ্যে সংস্থাটি ১০ কোটি ডলার ছাড় করেছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেসব প্রকল্পে এই অর্থ তারা দেবে। বাকি ১০ কোটি টাকা ডলার আগামী অর্থ বছরে দেবে। মুহিত বলেন, রীতিবহির্ভূতভাবে এডিবির জন্য এ ধরনের অনুদান দেওয়া কঠিন। তারপরও তারা নিয়মের ব্যতিক্রম করে অনুদান দিয়েছে। এ জন্য আমি এডিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য এডিবির অনুদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা বিষয়ে সারা বিশ্ব আমাদের সঙ্গে রয়েছে। অর্থ সহায়তার পাশাপশি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের উপর চাপ দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর কাছে আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, কারণ এতগুলো রোহিঙ্গার দায়িত্ব আমাদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের প্রতিশ্রুত অনুদানের পুরোটাই দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বাংলাদেশের বিষয়ে খুবই সদয়। তিনি দুইবার বাংলাদেশে এসেছেন। দুইবারই বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের প্রতি তার বিশেষ অনুভ‚তি রয়েছে। এরআগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, এভাবে এডিবি’র অনুদান দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্ত রোহিঙ্গাদের বিষয়টি খুব বেশি মানবিক। তাই তাদের ডোনারদের কনভিন্স করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় নিয়ম ভেঙে বাংলাদেশ সরকারকে ২০ কোটি ডলার অনুদান দিচ্ছে এডিবি।
গত মে মাসে এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার অনুরোধ পাওয়ার পর ২০ কোটি ডলার দেওয়ার এই উদ্যোগ নেয় এডিবি।
তিনি বলেন, ২০ কোটি ডলার সহায়তার প্রথম কিস্তিতে ১০ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। বাকি ১০ কোটি ডলার শিগগিরই ছাড় করা হবে। এসব অর্থ রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, খাবার পানি, স্বাস্থ্য সেবা, পয়ঃনিষ্কাশন এবং অন্যান্য জরুরি সেবায় ব্যবহৃত হবে। এডিবির প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছে। তারা এ সব অর্থের সদ্ব্যবহারে একটি প্রকল্প দাঁড় করাচ্ছে। এ সময় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে এডিবি বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, সহায়তার প্রথম কিস্তির ১০ কোটি ডলার দিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবাসন নির্মাণ করা হবে, যেখানে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পে সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে, যাতে খাদ্য সরবরাহ, মজুত, হাসপাতাল ও স্কুলে যাওয়া-আসা সহজ হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।