Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কচুয়ায় ইউএনওর পান্তা-ইলিশ খেয়ে অসুস্থ ৫১

প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা : নববর্ষ উপলক্ষে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পান্তা-ইলিশ উৎসবের খাবার খেয়ে অর্ধ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অসুস্থ ২৮ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বাসা ও বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা পেট ব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানা জনিত সমস্যায় ভুগছেন।
ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কচুয়ার লেডিস ক্লাবে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাঁদের পরিবারের সদস্য, পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ তিন শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা সদরের একটি রেস্তোরাঁ থেকে ওই অনুষ্ঠানের জন্য খাবার সরবরাহ করা হয়েছিল। খাবারের তালিকায় ছিল পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, ডাল, আলু, চিংড়ি ভর্তা ও বেগুন ভাজা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মাহাবুবুর রশীদ বলেন, অতিথিদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনা তদন্তে পানিসম্পদ কর্মকর্তা দেবেন্দ্রনাথ সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাস্বতী রাণী ও কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাপস দাস।
অনুষ্ঠানের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া এক শিশুর অভিভাবক কামরুল ইসলাম বলেন, সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অতিথিরা এসব খাবার খেয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক মানুষ যোগ নেন। এ সময় প্রচুর গরম ছিল এবং খোলা আকাশের নিচে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খাবার তৈরি করা হয়েছিল বুধবার গভীর রাত থেকে। তাঁর ধারণা, পরিবেশন করা ডাল ও আলু ভর্তা থেকে খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া অসুস্থদের মধ্যে ২৪ জনের নাম পাওয়া গেছে। এঁরা হলেন স্থানীয় কলেজ-শিক্ষক বনি আমিন (৪৪), মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিরিনা খানম (৪৬), প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কমল কৃষ্ণ (৪০), সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম (৪২), ইউএনও কার্যালয়ের এমএলএসএস মহিদুল ইসলাম দিদার (৪৫), প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার মেয়ে সাঈদা (৬), মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৩), বর্ণালী হালদার (১৪), আল আমিন (২১), আল আমিন (৪৫), নূপুর (৪০), মিনা (৩৫), শামীমা (১৫), জোবেদা (৭৫), জেসিকা (১০), ফাহমিদা (৭), মফিজুল ইসলাম (৩৫), তানিম শিকদার (১০), মিম (১৩), মর্জিনা (৩৫), সৈকত (১৩), শাহীনুর (১২), শামিমা (১৫) ও সাঈদা (৬)।
এ স্থানীয় সাংবাদিক নিয়াজ ইকবাল দম্পতি, ইউএনওর স্ত্রী, কচুয়া থানার চারজন পুলিশ সদস্যসহ আরও অন্তত ২৩ জন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাপস দাস ও কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শমসের আলী বলেন, বৃহস্পতিবারের পান্তা ইলিশ অনুষ্ঠানে অংশ কয়েকজন ব্যক্তি ও পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অসুস্থ ব্যক্তিরা পেটে ব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়েছেন। তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ও স্যালাইনসহ ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। গতকাল গভীর রাত থেকে আসা এসব রোগীদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ