বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দীর্ঘ পনেরো বছর চাঁদপুরের বৃদ্ধ আবুল খায়ের সাতক্ষীরা থেকে উদ্ধার হয়েছেন। এতে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। ছেলে শাহাজান সরকার বলেন, এ যাবত বহু জায়গায় খুঁজেছি আমার বাবাকে। আমি একজন দিনমজুর। কয়েকদিন পর পর কামলা খেটে যে টাকা পাই, তা দিয়ে সংসার চালাই, আর আমার আব্বাকে খুঁজি। ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট কোথায় যাইনি আমি আমার আব্বাকে খুঁজতে ? আমার মা তার স্বামীকে হারিয়ে শুধু কাঁদতেন। এক পর্যায়ে তিনি শয্যাশায়ী হলে গেলেন। আর উঠলেন না। আব্বার চিন্তায় তিনি দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিলেন। আপনারা যারা আমার আব্বাকে ফিরে পেতে সহায়তা করেছেন, তাদের ঋণ আমি কোন দিন শোধ করতে পারবো না।
চাঁদপুরের আবুল খায়ের সরকারের ছেলে শাজাহান সরকার রবিবার সকালে সাতক্ষীরা ত্রিশমাইলে বাবাকে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন আর এসব কথা বলছিলেন। এখান থেকে দীর্ঘ পনেরো বছর আগের কথা। পড়ন্ত বিকেলে চা পানের কথা বলে হুট করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ৫৫ বছর বয়স্ক আবুল খায়ের সরকার। স্থানীয়ভাবে যাকে সবাই লনু মিয়া বলে চেনেন। ২ ছেলে ও ৫ মেয়ে সন্তানের জনক লনু মিয়া মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন ছিলেন। তবে তার আচরণের মধ্যে পাগলামির তেমন কোন নমুনা ছিলনা। চা পানের কথা বলে সেই যে তিনি বেরিয়ে গেলেন আর বাড়ি ফেরেননি। এরপর তিনি কোথায় ছিলেন তা আর কারো জানা ছিলনা।
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ত্রিশমাইল এলাকার চা বিক্রেতা নূর ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মাস তিনেক আগে স্থানীয় সাইকেল মিস্ত্রি গাউসের দোকানের সামনে বৃদ্ধ লোকটাকে অচেতন অবস্থায় তিনি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে তুলে তিনি তার বাড়ির পাশে মসজিদের নিকট থাকতে দেন। স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি অপিরিচিত এই মানুষটাকে খাইয়েছেন। এমনকি তার চিকিৎসাসেবাও দিয়েছেন। পরে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তার থাকার জন্য একটা জায়গাও করে দেন। তবে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনি চিন্তায় পড়ে যান। বয়স্ক মানুষটা কোন কথা না বলায় তার পরিচয় জানা সম্ভব হচ্ছিলো না। বহুচেষ্টার একপর্যায়ে তিনি কিছুটা সুস্থ হলে তার কাছ থেকে তার পরিচয় জানা সম্ভব হয়। পরে তার ঠিকানা সংগ্রহ করে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সরবরাহ করেন।
লনু মিয়ার ছোট ভাই শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ভাইয়ের খবর জানতে পেরে তাৎক্ষনিকভাবে স্বল্প প্রস্তুতি নিয়েই তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়েন। ভাইকে খুঁজে পাওয়ার আনন্দে রাতে গাড়ির মধ্যে এতটুকু ঘুমাতে পারেননি তারা কেউই।
নাতি ফারুক হোসেন বলেন, নানার চেহারা কেমন, আমার মায়ের কাছ থেকে শুনে মনের মধ্যে একটা ছবি এঁকে রেখেছিলাম। নানির আদর পাইনি। নানাকে পেয়ে তার দীর্ঘদিনের একটি মনোবাসনা পূর্ণ হলো।
ত্রিশমাইলে যে ছোট্র কাঠের ঘরটিতে লনু মিয়া থাকতেন সেই ঘরের মধ্যে বসেই ছেলে-নাতি আর ভাইকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছিলেন বয়োবৃদ্ধ আবুল খায়ের সরদার। কথা বলতে পারছিলেন না। চোখের নোনা জ¦লে শুধুই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিলেন নীরবে। ছেলে শাজাহান সরকার জানান, রাতেই তারা বাবাকে নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।