পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, তিস্তা চুক্তি এখন আর তেমন কোনও ব্যাপার নয়। এবারের নির্বাচনে বিরোধীরা নিশ্চয় বলার চেষ্টা করবে শেখ হাসিনার সরকার তো তিস্তা চুক্তিও করতে পারলেন না, ভারত কিছুই দিলো না ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা কিন্তু পরিষ্কার বলতে চাই, তিস্তা এখন আর তেমন কোনও বড় সমস্যা নয়। গতকাল দিল্লির স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে একটি মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটা কথা খুব বলেন, আমরা হলাম নদীর ভাঁটির দেশ। পানি এখানে ঠিকই আসবে, আসতে বাধ্য। একটা নদীকে কেউ মুছে দিতে পারবে না, আর তাই আজ হোক কাল, পানির ভাগাভাগি নিয়েও চুক্তিও ঠিকই হবে। তিনি বলেন, ‘আসলে দুটো প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সদিচ্ছা আর সঠিক দৃষ্টিভঙ্গী (অ্যাটিচিউড) থাকলে যে কোনও বড় সমস্যাই মিটিয়ে ফেলা যায়। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আমাদের নাগরিকদের মৃত্যু কিংবা ফেন্সিডিল পাচারের রমরমা ব্যবসা নিয়ে একসময় হইচই কম হয়নি। কিন্তু এখন সীমান্তে মৃত্যুও প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে, ভারতের দিকে ফেন্সিডিল বানানোর করাখানাগুলোও বন্ধ হওয়াতে পাচারও থেমে গেছে। তাই আমাদের কোনও সন্দেহ নেই ঠিক সেভাবে তিস্তারও একদিন সুরাহা হবে!
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, আমার স্থির বিশ্বাস বিএনপি যতই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর চেষ্টা করুক, তাদের মতো একটি পাকিস্থানপন্থী ও জামায়াত-সমর্থক দলের ওপর দিল্লি কিছুতেই ভরসা রাখবে না। কেন বিএনপিকে ভারতের ভরসা করার কোনও কারণ নেই, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। এইচ টি ইমাম বলেন, আসলে বিএনপি আজ জামায়াতে ইসলামীর একটা এক্সটেনশনে পরিণত হয়েছে। তাদের নিজেদের শক্তি বলতে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই, জামায়াত আর শিবিরের ভরসাতেই তারা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ও গন্ডগোল বাঁধাতে চাইছে। এমন একটা পাকিস্তানপন্থী শক্তিকে ভারত কেন হঠাৎ করে বিশ্বাস করতে যাবে?
তারেক রহমানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিদেশে ফেরার একজন কনভিক্টেভ ক্রিমিনালকে (দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধী) যে দল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়, তাদের ওপর একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক দেশ কীভাবে ভরসা রাখবে?
এইচ টি ইমাম বলেন, আর ভারতের রাজনীতিবিদ বা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আলোচনা করতে বিএনপির যে তিন নেতা দিল্লিতে এসেছিলেন, তাদের দিকেই তাকান না কেন! আমি কারও নাম করবো না, কিন্তু তাদের একজন তো আমাদের দেশে পাকিস্তান ও চীনের এজেন্ট হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত। এইসব লোকের কথায় বিশ্বাস করে ভারত বিএনপিকে সমর্থন করার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবে কিংবা পাকিস্তানের পাতা ফাঁদে পা দেবে এমনটা মনে করার কোনও কারণ দেখছেন না এইচ টি ইমাম।
অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ওই সভায় প্রধানমন্ত্রীর এই রাজনৈতিক উপদেষ্টা আরও নানা দ্বিপক্ষীয় ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেন। ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবেও স্পষ্ট উত্তর এসেছে তার কাছ থেকে।
হেফাজতের সঙ্গে কি আপসের রাস্তায় হেঁটেছে সরকার?
হেফাজতে ইসলামের নানা চাপের কাছে আওয়ামী লীগ সরকার নতি স্বীকার করেছে এমন অভিযোগের মুখেও পড়তে হয় এইচ টি ইমামকে। জবাবে তিনি অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেননি। বলেন, দেখুন, হেফাজতের সমর্থকের সংখ্যা কত বেশি! দেশজুড়ে লাখ লাখ কওমি মাদ্রাসার ছাত্র এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কাজেই বলপ্রয়োগ করে তাদের সঙ্গে ডিল করা যাবে না, তাতে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। আমরা তাই ‘ফোর্স’ দিয়ে নয়, বরং কৌশলের সঙ্গে (‘ট্যাক্টফুলি’) হেফাজতের সঙ্গে ডিল করছি। আর এখন তার সুফলও মিলতে শুরু করেছে। কওমি মাদ্রাসার বহু ছাত্রও এখন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করতে শুরু করেছে!
‘চীন বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনও ফ্যাক্টরই নয়’
বাংলাদেশে সামরিক বা কূটনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের প্রভাব বাড়ছে কি না, তা নিয়ে দিল্লির যে একটা উদ্বেগ আছে সেটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাতেও সেই উদ্বেগের প্রতিফলন ছিল। যদিও এইচ টি ইমাম তাকে কার্যত নাকচই করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘দেখুন চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা পুরোপুরি বাণিজ্যিক। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যাপারে তাদের কোনও আগ্রহ নেই। তারা শুধু ঢাকায় একটা রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল সরকার দেখতে চায়, যা তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থের অনুকূল হবে। আর তা ছাড়া চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে যে ধরনের গভীর সম্পর্ক আছে, আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক তার কোনও তুলনাতেই আসবে না। বরং পাকিস্তান আমাদের চিরশত্রæ একটা দেশ, পাকিস্তান ভেঙেই আমাদের জন্ম। এটা মাথায় রাখলে বলতে হয় চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কখনও সেই স্তরে পৌঁছাবে না।
তিনি আরও মনে করিয়ে দেন, বাংলাদেশে এখন আর এমন কোনও রাজনৈতিক দলই নেই, যারা ‘চীনের মুখ চেয়ে রাজনীতি করে’! অর্থাৎ তথাকথিত এই ‘চীন ফ্যাক্টর’ নিয়ে ভারতের যে দুশ্চিন্তার কিছু নেই সেটাও স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন তিনি। (সূত্রঃ বাংলা ট্রিবি্যুউন)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।