Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনের আগুন নিভে গেছে, পুড়েছে ৮ একর বন

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মংলা সংবাদদাতা : মাত্র ১৭ দিনের মাথায় আবার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পের আব্দুল্লাহর ছিলা ও পঁচাকোড়ালিয়া এলাকায় আবারও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।তবে এই আগুন এখন নিভে গেছে বলে বন বিভাগ দাবি করেছে । আগুনে বনের প্রায় ৮ একর বনভূমির ক্ষতি হয়েছে।
জানা গেছে,বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বনকর্মীরা ওই এলাকায় ধোঁয়া দেখতে পায়। আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বনবিভাগ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় এবং স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে তা জানাতে পারেনি বনবিভাগ ।এর আগে গত ২৭ মার্চ নাংলি ক্যাম্প এলাকার বনে আগুন লেগে এক একর বনভূমি পুড়ে যায়।বারবার আগুন লাগার রহস্যজনক। আগুন লাগানো হতে পারে বলেও সন্দেহ ওই স্থানীয় বাসিন্দার।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম বলেন,বনে আগুনের বিষয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে হয়েছে । অপর দুই সদস্য হলেন ঢাংমারি ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এফএসও) আব্দুল মান্নান, চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) গাজি মতিয়ার রহমান। কমিটিকে ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে আগুন লাগার কারণ, আগুনে বনজ সম্পদের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে ও পুড়ে যাওয়া জমির পরিমাণ কতো তা জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।তিনি আরও জানান,আগুন নিয়ন্ত্রণে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, টাইগার টিম এবং স্থানীয়রা কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিসের মোরেলগঞ্জ স্টেশনের লিডার গোলাম মোস্তফা জানান, মোরেলগঞ্জ স্টেশনের একটি ইউনিট এবং বাগেরহাট থেকে আরও একটি ইউনিট আগুন নিভানোর কাজে অংশ নেয়। তবে এই আগুন এখন নিভে গেছে।
সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনা তদন্ত কমিটির প্রধান চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, তদন্তে কাজ শুরু করছি। সুনির্দিষ্ট প্রত্যক্ষদর্শী এখনও খুঁজে পাইনি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি।তিনি আরও বলেন, মধু সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত আগুন থেকে এ ঘটনা ঘটেতে পারে। তবে আমরা সবদিক মাথায় রেখে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে অল্প কিছু সুন্দরী গাছ ছিল। প্রাথমিকভাবে যা দেখা যাচ্ছে, এখানে লতাগুল্ম জাতীয় গাছই বেশি।
মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার স্বপন কুমার ভক্ত জানান, বনের ভেতরে পচা পাতা থেকে তৈরি হওয়া মিথেনের স্তর জমে গেলেও বনজীবীদের ফেলা জ্বলন্ত বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুন লাগার সুযোগ থাকে বলে দাবি করেন ।
উল্লেখ্য,বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ম্যানগ্রোভ এই সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ ও শরণখোল এলাকায় প্রায় প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুমে (বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্ম শুরুতে) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এ সময় তীব্র বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।এর আগে ২০১৪ সালে চাঁদপাই রেঞ্জের গুলিশাখালী ক্যাম্পসংলগ্ন পয়ষট্টি ছিলা এলাকায় বনে আগুন লেগে অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১১ সালে ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় আগুনে পুড়ে যায় দুই একর বনভূমি।সর্বশেষ চলতি বছরের ২৭ মার্চ আগুন লাগে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ