স্টাফ রিপোর্টার : এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা ২৬ দিন ধরে আন্দোলন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তবে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দ্রæত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। শিক্ষক নেতারা বলছেন, আমরা এমপিওভুক্তির সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১ দিন আমরণ অনশন ও ১ দিন প্রতিকী অনশনসহ টানা ২৬ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। পরিবার-পরিজন ছেড়ে রোদ-বৃষ্টির মাঝে খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের ফলে এপর্যন্ত ২ শাতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ৫০ জন শিক্ষক বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৩ জন চিকিৎসা নিয়ে আবার অনশনে যোগ দিয়েছেন বলে জানান শিক্ষক নেতারা।
নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ইনকিলাবকে বলেন ‘সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে এ পর্যন্ত কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি। তবে গত ৩ জুলাই শিক্ষামন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহম্মেদ এর সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোকারম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হায়াত প্রধান বাবু, সোহরাব হোসেন, শরিফুজ্জামান আগা খান, দেবপ্রসাদ মন্ডল সাক্ষাত করেন। প্রাথমিক আলোচনার এক পর্যায়ে সচিব আন্দোলন ছেড়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলেন। কিন্তু ইতিপূর্বে আমরা ২৬ বার আলোচনার পর আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন ছেড়ে প্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়েছিলাম কিন্তু এর সুফল পাইনাই। তাই আমরা চাচ্ছি এবার আন্দোলন এর পাশাপাশি টেবিল আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই।’
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহম্মেদ শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব এর সঙ্গে আলোচনা করে ৪ জুলাই এ বিষয়ে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নাই। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।