Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আপনাদের জিজ্ঞাসার জবাব

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। শেখ মোহাম্মাদ মুহাইমিনুল ইসলাম (মাহির), ভৈষের কোট, দেবীদ্বার, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা : ইসলামী শরিয়তে কল্যাণ ও মঙ্গল নির্ণয় পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাই? বিশ্লেষণ করুন?
জবাব : এ কথা অনস্বীকার্য যে, মহান আল্লাহ তার বান্দার কল্যাণেই শরিয়ত প্রবর্তন করেছেন। এই কল্যাণের কাজই হলো শরিয়তের উদ্দেশ্য সংরক্ষণ করা। ইমাম রাযী বলেন, কল্যাণ-অকল্যাণ বিবেচনায় মানুষের কর্মকা- ছয় ধরনের হয়ে থাকে- ১. যাতে শুধু কল্যাণ রয়েছে। অকল্যাণ বলতে কিছু নেই। এ কাজটি শরিয়তসম্মত হওয়া নিশ্চিত। ২. যাতে কল্যাণ-অকল্যাণ উভয়ই রয়েছে। তবে কল্যাণ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। এটিও শরিয়ত সম্মত হওয়া উচিত। কেননা সামান্য অকল্যাণের জন্য অনেক কল্যাণ অরিত্যাগ করা দূষণীয়। ৩. যাতে কল্যাণ-অকল্যাণ সমান। এটি একটি নিরর্থক কাজ। যা শরিয়ত সম্মত না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। ৪. যাতে কল্যাণ-অকল্যাণ কোনোটিই নেই। এটিও একটি নিরর্থক কাজ। অতএব তাও শরিয়াত সম্মত হতে পারে না। ৫. এককভাবে অকল্যাণ নিহিত। নিশ্চিতভাবে এটি শরিয়ত সম্মত হবে না। ৬. যাতে কল্যাণ-অকল্যাণ উভয়ই রয়েছে তবে অকল্যাণই অগ্রগণ্য। এটিও শরিয়ত সম্মত না হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা অকল্যাণ দূরীভূত করা আবশ্যক। ‘আল-রাযী, ফখরুদ্দীন ইবনে উমর, আল-মাহসুল, বৈরুত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪০৮ হি. খ. ২, পৃ. ৫৮০। ইমাম গাযালী মাকাসিদে শরীয়হ ভিত্তিতে বিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে তিনটি শর্ত প্রদান করেছেনÑ আল-গাযালী, আল-মুস্তাসফা, প্রাগুক্ত, খ. ১, পৃ. ২৯৬।
১ম, কল্যাণ অত্যাবশ্যক হওয়া। ২য়, কল্যাণ সামগ্রিক হওয়া, গৌণ না হওয়া। ৩য়, কল্যাণ অকাট্য হওয়া, ধারণাপ্রসূত না হওয়া। ইমাম শাতেবী মাসালিহে মুরাসালাহর ভিত্তিতে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তিনটি শর্ত প্রদান করেছেনÑ
১. কল্যাণ চিন্তা ও শরিয়ত প্রণেতার উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করা। শরিয়তের কোনো মূলনীতি বা কোনো দলিলের সাথে এটা সাংঘর্ষিক হবে না। ২. সত্তাগতভাবে বিষয়টি জ্ঞান-বিবেকসম্মত হওয়া। কোনো জ্ঞানী ব্যক্তির সামনে যখন সেটা উপস্থাপিত হবে তখন সাধারণ বিবেক-বুদ্ধি যেন তাকে সমর্থন করে। ৩. তা গ্রহণের ক্ষেত্রে শর্ত হলো, এর দ্বারা যেন নিশ্চিত কোনো সংকটের অবসান হয় এবং যদি এটা গ্রহণ করা না হয় তবে মানুষর চরম সংকটের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ‘আশ-শাতেবী, ইমাম ইবরাহীম ইবনে মুসা, আল-ইতিসাম, বৈরুত’ দারুল মা’আরিফা, ১৪০২ হি. খ. ২, পৃ. ১২৯।
পঞ্চমত : মাকাসিদ সংক্রান্ত কায়িদার মূলনীতি ও প্রয়োগ আল-আশবাহ ওয়ান নাযায়ের ও অন্যান্য উসুল ফিকহের গ্রন্থসমূহে মাকাসিদ সংক্রান্ত বিভিন্ন ফিকহী কায়িদা উল্লেখ করা হয়েছে। মাকাসিদের মাধ্যমে সাম্প্রতিক বিষয়ের বিধান নির্ণয়ে আগ্রহী গবেষককে যার প্রতি দৃষ্টি প্রদান করা একান্ত কর্তব্য।
উত্তর দিচ্ছেন : এম, এইচ, খান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আপনাদের জিজ্ঞাসার জবাব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ