Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ‘আন্ডার ভ্যালু’ তত্ত¡

জমির শ্রেণি বদল করে দলিল

| প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে : সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বছরে হাজার হাজার দলিল সম্পাদিত হলেও বাড়ছে না রাজস্ব। ফলে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে এ অফিস। মূলত ভিটি বাড়ি, চালা ও নালা জমিকে ডোবা, বিল, বাগান ও বোরো ক্ষেত দেখানো হয়। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। সরকার রাজস্ব হারালেও সাব রেজিস্ট্রারের কপালে জুটছে বিপুল টাকা। জমির শ্রেণি বদল করে টাকা হাতানোর এই কৌশলকে বলা হয় ‘আন্ডারভ্যালু স্টাইল’। স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা, জেলা রেজিস্ট্রার অফিস এমনকি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রার অফিসেও এই টাকার ভাগ যাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। পিয়ন (ব্যক্তিগত নিয়োগকৃত) আব্দুর রহিমের মাধ্যমে জাল দলিলগুলো খাস কামরায় বসে সম্পাদনের অভিযোগ রয়েছে। শিল্পাঞ্চল সাভারে দলিল বাড়লেও রাজস্ব না বাড়ায় টনক নড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দুর্নীতি দমন কমিশনের। চলছে অনিয়মের কারণ অনুসন্ধান।
গত একবছরে সম্পাদিত সকল দলিল তদন্ত ও যাচাই বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। সাভার পৌর এলাকাসহ ৭টি ইউনিয়ন মিলিয়ে গত বছরে কয়েক হাজার দলিল সম্পাদিত হয়েছে। সাভার পৌরসভার ভেতরে জমির দাম অনুযায়ী প্রতি লাখের জন্য ১১ শতাংশ এবং পৌর এলাকার বাইরে প্রতি লাখের জন্য ১২ শতাংশ (১২ হাজার) টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে হয়। অন্যদিকে, পৌর এলাকার ভেতরকার হাউজিং কোম্পানির জমি দাম অনুয়ায়ী প্রতি লাখের জন্য ১৯ শতাংশ আর বাইরের এলাকার জন্য জন্য ২০ শতাংশ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয়।
জানা গেছে, গত ১৪ মার্চ ৪৯০৪ ও ৪৯০৫ দুটি দলিল রেজিস্ট্রি হয়। পর্চা অনুযায়ি জমির শ্রেণি ছিল চালা অথচ দলিলে বাগান দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। রাজধানীর বাসিন্দা সাব-রেজিষ্ট্রার ডিআর ও আইজিআর অফিসে যাওয়ার কথা বলে প্রায়ই অফিস ফাঁকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বলিয়ারপুর চকে সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সবধরনের কর্মকাÐ নিষিদ্ধ করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ থাকলেও মধুমতি মডেল টাউনের জমি হরদম রেজিস্ট্রি হচ্ছে। সবমিলিয়ে সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম ও লুটপাটই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
গত ৬ জুন সকালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিষ্টিটিউটে দুদকের গণশুনানি ফলোআপ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সাভারে গত একবছরে সম্পাদিত সকল দলিল তদন্ত ও যাচাই বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। অনিয়ম প্রসঙ্গে সাব-রেজিষ্ট্রার সোহরাব হোসেন বলেন, সব অফিসেই কম-বেশি ‘আন্ডারভ্যালু’ দলিল হয়। তিনি এসব করেন না। তিনি বলেন, দুই-একটা না করলে রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দিতে হয় তা কোথায় থেকে দিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ