Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনিয়ম ৪৬.৫ শতাংশ কেন্দ্রেই

ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৮, ১২:০১ এএম

২৬ জুন অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রæপের (ইডবিøউজি) পর্যবেক্ষকরা ৪৬.৫ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে ১৫৯টি নির্বাচনী অনিয়মের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে। ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেয়া, ভোটারকে ভোটকক্ষে প্রবেশের পর আঙুলে কালির ছাপ দিয়ে বলা হয়েছে আপনার ভোট দেয়া হয়ে গেছে, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেয়া, পালিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নৌকার প্রার্থীর যানবাহন সরবরাহ, কেন্দ্রে অননুমোদিত ব্যক্তির উপস্থিতি, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সহিংসতা, ভোটকেন্দ্রের বাইরে সহিংসতা, অবৈধভাবে ব্যালট পেপারে সিল মারা, আইনশৃংখলা বাহিনী বিশেষ প্রার্থীর (নৌকা মার্কা) পক্ষে অবস্থান নেয়ার চিত্র দেখেছে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া জানানোর সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য ততুলে ধরা হয়। ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রæপ (ইডবিøউজি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় এসব অনিয়মের বেশিরভাগই নির্বাচনের দিন দুপুরের পর সংঘটিত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্বাচিত অনিয়মের মধ্যে রয়েছে জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারা, ভোট কেন্দ্রের ৪০০ গজ ব্যাসার্ধের ভিতরে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো এবং ভোট কেন্দ্রের ভিতরে অননুমোদিত ব্যক্তির অবস্থান। এছাড়া ইডাবিøউজি’র পর্যবেক্ষণকৃত ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদানের গড় হার ৬১.৯ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক বিবৃতি পড়ে শোনান ইডবিøউজি’র পরিচালক ড. মোঃ আব্দুল আলীম। উপস্থিত ছিলেন ইডবিøউজির পরিচালক ড. মোঃ আব্দুল আলীম, সদস্য আব্দুল আওয়াল, ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ও হারুনুর রশিদ প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিষয়ে বলা হয়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সর্বমোট ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ইডবিøউজি পুরো ৫৭টি ওয়ার্ডের ম্েয ১২৯টি (৩০ শতাংশ) ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে। ইডবিøউজির এই ব্যাপক ভিত্তিক পর্যবেক্ষণে যেসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয় সেগুলো হলো ভোট কেন্দ্র খোলার সময়কাল পর্যবেক্ষণ, ভোটগ্রহণ কার্যক্রম, ভোটকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা ও গণনা এবং ভোটকেন্দ্রের বাইরে সার্বিক পরিস্থিতি। পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ৯৮ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত ছিল এবং নির্ধারিত সময়েই ভোটগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র উন্মুক্ত করা হয়। ভোটগ্রহণ শুরুর আগে ব্যালট বাক্সগুলো যে খালি ছিল সেটা প্রমাণের জন্য পর্যবেক্ষণকৃত সকল ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ও পর্যবেক্ষকদের সামনে ব্যালট বাক্স খোলা হয়েছিল। ভোটগ্রহণ শুরুর সময় পর্যবেক্ষণকৃত সকল ভোটকেন্দ্রে ভোটাদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ৩৭.২ শতাংশ কেন্দ্রে ১ থেকে ২০ জন ভোটার, ২০.২ শতাংশ কেন্দ্রে ২০ থেকে ৪০ জন ভোটার এবং ৪০.৩ শতাংশ কেন্দ্রে ৪০ জনেরও বেশি ভোটারের লাইন পরিলক্ষিত হয়েছে। ইডবিøউজির পর্যবেক্ষকরা ৯৬.৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট এবং ৮১.৪ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর এজেন্টদের দেখতে পেয়েছেন।
ভাটগ্রহণ শুরু থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত ইডবিøউজির পর্যবেক্ষকরা ৪৫ শতাংশ (৬০টি ভোটকেন্দ্র) ভোটকেন্দ্রে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী অনিয়মের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারা, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের ভেতরে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো এবং ভোটকেন্দ্রের ভিতরে অননুমোদিত ব্যক্তিদের উপস্থিতি। অনিয়মের কারণে পর্যবেক্ষণকৃত ১২টি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়, এর মধ্যে ৯টি কেন্দ্র ভোটগ্রহণ পুনরায় চালু করা হয়। ইডবিøউজি পর্যবেক্ষণ করা ভোটকেন্দ্রে সর্বমোট ১৫৯টি নির্বাচনী অনিয়িমের ঘটনা লিপিবদ্ধ করেন। এগুলোর মধ্যে আছে ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি ৬টি। ভোটারকে ভোটকক্ষে প্রবেশের পর আঙুলে কালির ছাপ দিয়ে বলা হয়েছে আপনার ভোট দেয়া হয়ে গেছে। পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেয়া, পালিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ৬টি, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা হয়েছে ২৮টি, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নৌকার প্রার্থীর যানবাহন সরবরাহ করার ঘটনা ২৪টি, কেন্দ্রে অননুমোদিত ব্যক্তির উপস্থিতি দেখা গেছে ৩০টি, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সহিংসতা ঘটেছে ৮টি, ভোটকেন্দ্রের বাইরে সহিংসতা ৯টি, অবৈধভাবে ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে ২১টি, আইনশৃংখলা বাহিনী বিশেষ প্রার্থীর (নৌকা মার্কা) পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এমন ঘটনা ৫টি, অন্যান্য ১৬টি সর্বমোট মোট ১৫৯টি। ##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইলেকশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ