পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন পালন করছেন নন এমপিও শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গতকাল বুধবার ১৮ দিন অবস্থান ও তৃতীয় দিনের মত আমরণ অনশন করেন তারা। অনশন কালে এপর্যন্ত অন্তত ৭০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এর মধ্যে ৫২ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতর অসুস্থ ৫ জনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দিওড় নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন, গাইবান্ধার পাটুয়াবাগ উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ, ঝিনাইদহর খরতালিয়ান দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোছাঃ ফাুেতমা খাতুন, বগুড়ার খানপুর খয়ের খালি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রেবেকা পারভিন ও কুড়িগ্রামের বাগুয়ার চড় দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ ছাবেদ আলী ঢামেকে চিকিৎসাধিন অবস্থায় আছেন। নন-এমপিও শিক্ষকদের মধ্য থেকে ২ জন পল্লী চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, গত ২০-২৫ বছর পূর্বে সরকারী বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হয়ে আজ পর্যন্ত শিক্ষকতা করে আসছেন। কিন্তু শিক্ষকরা সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় একটি টাকাও বেতন পান না। সারা দেশের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষকের জীবন চিত্র অত্যন্ত করুন ও অবজ্ঞার। তারা পরিবারের বাবা-মা, স্ত্রী-পুত্র, সন্তান-সন্ততির ভরন-পোষন চিকিৎসা দিতে না পেরে নিজেরাই তাদের বোঝা হয়ে গেছেন। অপর দিকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদাও নাই। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এর বাড়িতে গেলে তারা ভেবে থাকেন টাকা ধার নেওয়ার জন্য এসছেন। লোকলজ্জার কারনে এলাকায় লেবারিও পায়না। তাই অনেক শিক্ষক পেটের তাগিদে রাত্রীবেলা ভ্যান, রিকশা, যানবাহনে লেবারী পর্যন্ত করেন। তবুও অফুরন্ত আশায় আশায় যজ্ঞের মত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা ধরে আছেন।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোকারম হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, আন্দোলনের ১৮ তম দিনে এসে আমাদের অন্তত ৭০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের ৫ জনকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। কোন প্রতিনিধিও পাঠানো হয়নি। ২০০৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৮ বার আন্দোলনে এসেছি। তবু প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন নেই। যে কোনো মূল্যে আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন চাই।
বুধবারের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষিরা-১ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য এ্যাডঃ মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এম.পি, ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুারো সদস্য নুর মোহাম্মদ মুকুল, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবি ব্যারিস্টার জোতির্ময় বডুয়া, শিক্ষক নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রনজিৎ কুমার সাহা, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনসহ টানা ১৮ দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।