বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দারোগা মাসুদের (এসআই মাসুদ) মিথ্যা খবরে অগ্নিশর্মা হয়ে কোন কিছু না জিজ্ঞাসা করেই গাড়ি থেকে নেমে ওসি জাকিউর রহমান সবার সামনে আমাকে চড় থাপ্পড় মেরে মাটিতে ফেলে দেন। এরপরই দারোগা (এসআই) মাসুদ ও এনামুলসহ অন্যরা আমার ওপর চড়াও হয়।
ওরা আমার বুকে পা দিয়ে লাথি ও কিল-ঘুষি মারে। লাঠি দিয়েও নির্দয়ভাবে প্রহার করতে থাকে। আমাকে রক্ষা করতে যারা এগিয়ে এসেছে তাদেরকেও একই স্টাইলে মেরেছে পুলিশ।’ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস (৫০)। বুধবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় কাঁদতে কাঁদতে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (২১ জুন) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুসকে ঠুনকো অজুহাতে প্রকাশ্যে অমানুষিক নির্যাতনে জামা-কাপড় ছিঁড়ে যায়। পরে আমাকে জোর করে গাড়িতে তোলা হয়। এরপর গাড়িতে ফেলে আরেক দফা নির্যাতন করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের বুট দিয়ে পিষে নির্যাতন করে। পরে গত মঙ্গলবার (২৬ জুন) হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
পুলিশের নির্যাতনে চিকিৎসাধীন এই ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, স্থানীয় পোড়াবাড়ি এলাকায় কারেন্ট জাল বিক্রির অভিযোগে আবুল কাশেম নামে এক ব্যবসায়ীকে গত বৃহস্পতিবার (২১ জুন) পুলিশ আটক করে। এ সময় স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে আমার ছেলে স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি কামরুজ্জামানসহ কয়েকজন তাকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করে।
এ সময় অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান ও এনামুল হক তাদের কাছে টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে এস.আই মাসুদুর রহমান মোবাইলে ওসি জাকিরকে জানান আমার ছেলের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে।
তার মিথ্যা খবর যাচাই-বাছাই না করেই ওসি আমার ওপর ক্ষোভের ঝাল মেটান। আমাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন সরকার বলেন, একজন জনপ্রতিনিধিকে পুলিশ যেভাবে নির্যাতন করেছে তা অমানবিক। কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু পুলিশ অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ করেছে।’
তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকিউর রহমান জানান, আমি তাকে কোন মারপিট করিনি। তিনি নাটক সাজিয়েছেন। তার ছেলে ডিএসবি’র তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। তারাই পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাও জানেন।’
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের বাম পায়ের গোড়ালির নিচের হাড়ে ফাটল এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এস.এ.নেওয়াজি বলেন, ওই ইউপি চেয়ারম্যান নাটকের আশ্রয় নিয়েছেন। তার ছেলে একাধিক মামলার আসামি। পুলিশ তাকে নির্যাতন করেনি। উল্টো তারাই কনস্টেবলকে কিল-ঘুষি মেরেছেন। পরিস্থিতি ট্যাকেল করতে ওসি গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে সাবেক এমপি মতিন সরকারের জিম্মায় তাকে ছাড়া হয়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।