Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি পুলিশের এএসআই!

বিশেষ সংবাদদাতা, ময়মনসিংহ থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ময়মনসিংহে খুনের মামলায় যাবজ্জীবন দÐপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল পুলিশের চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ভুক্তভোগী বাদী ও স্বাক্ষী পরিবার’সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল বলেন, শাহজালাল খুনের ঘটনার সময় আমার বয়স কম ছিল। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রিট করা হলে মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরো জানান, পুলিশ বাহিনীতে কন্সটেবল পদে যোগদান করে চট্টগ্রাম পুলিশে চাকরি করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি পদোন্নিত পেয়ে রাজশাহী ডিএমপি পুলিশে এএসআই পদে কর্মরত আছেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন। তবে একই মামলায় দÐপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েলের পিতা হেলাল উদ্দিন জানান, আপিল করে আমরা জামিনে আছি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই সাফায়েত হোসেন জানান, পুলিশের খাতায় খুনের মামলায় যাবজ্জীবন দÐপ্রাপ্ত আসামি মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল এবং বাচ্চু মিয়া এখনো ফেরারি আছেন। তিনি জানান, দÐপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ২০১৬ সালে থানায় আসে। বর্তমানে ফেরারি আসামি বাচ্চু সউদি প্রবাসী এবং জুয়েল পুলিশে কর্মরত আছে।
ভুক্তভোগী বাদি পরিবার সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ১৮ মে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ভাটি চরনওপাড়া গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধে খুন হয় কৃষক শাহজালাল। ২০১৩ সালে ১৩ই মার্চ ময়মনসিংহের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত ওই মামলায় অভিযুক্ত ৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদÐ’সহ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদÐ এবং অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ প্রদানের আদেশ দেয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের দ্বায়িত্বরত পেশকার আ:গণি জানান, রায়ের পর পরই ১৬৩ স্মারকে ২০১৬ সালের ১৫ই মার্চ ৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, দÐপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে বর্তমান কারাগারে সাজা ভোগ করছেন ইদ্রিস আলী এবং উচ্চ আদালতে আপিল করে বর্তমানে জামিনে আছেন আসামি আক্রাস হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, এমদাদুল, এরশাদুল, সাইদুল ও হেলাল উদ্দিন। তবে যাবজ্জীবন দÐ নিয়েও এখন পর্যন্ত ফেরারি আছেন মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল এবং বাচ্চু মিয়া। মামলার স্বাক্ষী শাবান আলী ও অন্যদের অভিযোগ, জুয়েল প্রতি বছর ঈদ করতে বাড়ি আসে এবং বাচ্চু কয়েক বছর পর পর বিদেশ থেকে বাড়ি আসে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আহম্মেদ কবীর হোসেন জানান, মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল’সহ পলাতক আসামিদের গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ হাতে পেয়েছি। কিন্তু মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল একজন সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করতে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো নির্দেশনা না পাওয়ায় পরোয়ানা তামিল করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে গৌরীপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাখের হোসেন সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ময়মনসিংহ

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ