Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সার্কভুক্ত কোনো দেশের পক্ষ নেওয়ার সুযোগ নেই

সংসদে প্রশ্নোত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, সার্কের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা। সুতরাং সার্কের আওতায় এর সদস্য দেশগুলোর শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচিত ও অনির্বাচিত কোন সরকারের ব্যাপারে কোনরূপ মতামত প্রদান বা কোনো পক্ষ অবলম্বন করার কোনো সুযোগ নেই।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এতথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এসংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, সার্কর্ভুক্ত দেশসমূহে সুশাসন শক্তিশালী করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সার্ক চার্টার অফ ডেমোক্রেসি’র ধারণার আইডিয়া প্রস্তাব করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমার জান্তা সরকারের নির্যাতনে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটিই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী। এসব আশ্রিতদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মাত্র চার মাসের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হয়েছে। চুক্তির শর্তানুযায়ী মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম রয়েছে। একই প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠী তথা রোহিঙ্গাদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান রাজনৈতিক ও অথনৈতিক বৈষম্য এবং মিয়ারমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় রাখাইন কমিউনিটির অত্যাচার নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে শরণার্থী হিসাবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখে। তিনি আরো জানান, এসব রোহিঙ্গাদের উপরে মিয়ারমান জান্তা সরকারের নির্মম নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। এমনকি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা ও তার আশু প্রতিকারের ব্যাপারে বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারের সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রæত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। মন্ত্রী মাহমুদ আলী জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী। তা সত্তে¡ও এ কার্যক্রমকে তরান্বিত করতে মাঠ পর্যায়ে একাধিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ এবং আন্তজার্তিক মহল মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে এবং দ্রæত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সফুরা বেগমের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, বর্তমানে পৃথিবীর ৫৮টি দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৮টি নতুন মিশন চালু করা হয়েছে। আন্তঃরাষ্ট্র সর্ম্পক উন্নয়নে আরো ৭টি নতুন মিশন স্থাপনের বিষয়টি বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ