Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল পদ্মায় ভাসছে

বিশ^কাপ উম্মাদনা

এম সাঈদ আহমেদ শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৮, ১২:০২ এএম

দেখলে মনে হবে রাশিয়ার কোন এক নদীতেই চলছে বিশ^কাপ ফুটবল। তা উদযাপনে অতিথিদের নজর কাড়তে চলছে সব প্রর্দশনী। মাঝ নদীতে চলমান এক একটি নৌযানের চূড়ায় শ্রমিকদের প্রিয় দলের পতাকা টানিয়ে এক মনোরম পরিবেশের উদ্ভব হয়েছে পদ্মায়। শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুটের একটি নৌযানে একাধিক দলের পতাকাও রয়েছে। শুধু লঞ্চ স্পীডবোটেই নয় ফেরিতেও টানানো হয়েছে প্রিয় দলের পতাকা। তবে প্রিয় দলের খেলা দেখতে পারছেন না অধিকাংশ নৌ শ্রমিক। ঈদের আগে পরে যাত্রী পরিবহন করতে গিয়ে ও নৌযানগুলোতে টিভি না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছেন খেলা দেখা থেকে। তবুও তাদের প্রিয় দলের প্রতি সমর্থনের এ উম্মাদনা উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে পদ্মা নদীজুড়ে।

সরেজমিন একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিশ^কাপ উম্মাদনায় সারা বিশ^ই এখন বুদ হয়ে আছে। সমর্থকদের নানান কর্মকান্ডে চমকিত হচ্ছে মানুষ। কিন্তু খেলা দেখার সুযোগ বেশি একটা না পেয়েও সমর্থকদের উৎসব পালনের এ দৃশ্য আসলেই বুঝিয়ে দিচ্ছে ফুটবল বিশ^কাপ কতটা বাঙ্গালির হৃদস্পন্দন কেড়ে নিয়েছে। এরই উৎকৃষ্ট উদাহরন হতে পারে ব্যস্ততম শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি রুটের নৌযান ও শ্রমিকরা। এ রুটের চলমান ২০ টি ফেরি, ৮৭টি টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পীডবোটের হাজারো কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা ঈদের আগে পরের যাত্রীদের পার করতে ব্যস্ত থাকায় ঘাট পাড়ের টিভির সামনে যেতে তাদের সময় হচ্ছে না। অপরদিকে কিছু ফেরিতে টিভি থাকলেও সেগুলোতে ক্যাবল টিভির সংযোগ না থাকায় খেলা দেখাও দুস্কর।
এছাড়া বাকি ফেরি, লঞ্চসহ অন্য নৌযানগুলোতে টিভি না থাকায় একপ্রকার বিশ^কাপে প্রিয় দলগুলোর খেলা দেখা হয়ে উঠছে না এসকল নৌযান শ্রমিকদের। কিন্তু প্রিয় দলের খেলা দেখা হোক আর নাই হোক তাই বলে কি আর সমর্থনের কমতি আছে। খেলা না দেখতে পাওয়ার কষ্ট থেকে তাইতো প্রিয় দলকে সমর্থন করে উজাড় করে প্রিয় দলের পতাকা টানিয়েছেন নৌযানগুলোর চূড়ায়। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের পতাকার প্রাধান্য পেলেও রয়েছে অন্যান্য দলের পতাকাও। এক একটি নৌযানে একাধিক দলের পতাকাই প্রমান করে কতটা মুখিয়ে তারা খেলা নিয়ে। শুধু নৌযানই নয় পুরো ঘাট এলাকাই সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে। বিশ^কাপ নিয়ে উৎসব যেন পরতে পরতে। যাত্রীদের চাপে খেলা দেখার সুযোগ খুব বেশি না হলেও দলগুলোর প্রতি সমর্থন সকলের ব্যাপক। খেলা দেখার সুযোগ খুব একটা না পেয়েও বিশ^কাপ ফুটবল নিয়ে এ মাতামাতিই প্রমান করে কতটা উৎসব পাগল বাঙ্গালী। লঞ্চ শ্রমিক বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের লঞ্চে কোন টিভি নেই। আর ঘাটে যাত্রীদের অনেক চাপ থাকায় ঠিকমত খেলাও দেখতে পারিনা। কিন্তু প্রিয় দলের সর্মথন করি। তাই যে যার প্রিয় দলের পতাকা টানিয়েছি। আর প্রিয় দল জিতলেই উল্লাস করি সকলে মিলে।
ফেরি স্টাফ নজরুল মিয়া বলেন, ফেরি সার্ভিস চব্বিশ ঘন্টাই নদীতে থাকতে হয়। তাই প্রিয় দল থাকলেও খেলা দেখার সুযোগ পাই না। স্থানীয় রাসেল হোসেন বলেন, বিশ^কাপ ফুটবল নিয়ে আমাদের এ নৌরুট যেন উৎসবের এক সাগরে রুপ নিয়েছে। ঘাট এলাকাসহ প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ, স্পীডবোটে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দলের পতাকা টানিয়ে উল্লাসে প্রতিনিয়তই মাতেন সমর্থকরা। বিআইডবিøউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাট ম্যানেজার আঃ সালাম বলেন, বিশ^কাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর থেকে সারাদেশের ন্যায় আমাদের এই শিমুলীয়া কাঁঠালবাড়ি নৌরুটেও বিশ^কাপ উন্মাদনা শুরু হয়েছে। এই নৌরুটের প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ, স্পীডবোটসহ সকল নৌযানেই বিভিন্ন দলের পতাকা টানানো হয়েছে। পুরো পদ্মা নদী যেন বর্নিল সাজে সেজেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ